# আবুল কালাম আজাদ……………………….
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে যাওয়া এবং আসা ছয়টি ট্রেন বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এই জেলার সাধারণ মানুষ।
করোনাকালীন সময়ে এই ছয়টি ট্রেন বন্ধ করেন রেল কর্তৃপক্ষ।করোনার প্রকপ কেটে গেলও রেল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অজুহাতে চালু করেননি তিন জোড়া ৬ টি ট্রেন।
বন্ধ ট্রেন গুলি হচ্ছে স্যাটল-২, স্যাটল-৪, ঈশ্বরদী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর – রাজশাহী-ঈশ্বরদিগামী লোকালসহ আপ ও ডাউনে ৬ টি ট্রেন বন্ধ রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত শুধু বনলতা ট্রেন চলাচল করছে। এ ট্রেনে চাহিদার তুলনায় কম টিকিট বরাদ্দ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে জেলাবাসীর। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটা যাচ্ছে না। যারা অনলাইনে খুব সিদ্ধহস্ত, তারাই ট্রেনের টিকিট কাটতে পারছেন। আর দীর্ঘ লাইন হওয়ায় টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনাও তেমন থাকে না।
করোনাকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন থেকে মোট ছয়টি ট্রেন বন্ধ হলেও মাত্র দুইটি ট্রেন চালু হয়েছে। বন্ধ থাকা ট্রেনগুলো ফের চালু হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে বলে মনে করেন জেলার সচেতন নাগরিকরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত বনলতা ট্রেন চলাচল করে নিয়মিত। ট্রেনটিতে এ জেলার জন্য মোট ১৯৬টি টিকিট বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার যাত্রীরা স্টেশন থেকে ৯৮টি আর অনলাইন থেকে বাকি ৯৮টি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার পথে শুধু বনলতা ট্রেন চলায় টিকিটের সংকট হয়েছে। করোনাকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে মোট ছয়টি ট্রেন বন্ধ করা হয়। ইতিমধ্যে ঢাকা মেইল চালু হলেও স্যাটল-২, স্যাটল-৪, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর লোকাল মোট চারটি ট্রেন বন্ধ রয়েছে। এ ট্রেনগুলো চালুর দাবি জেলাবাসীর।
বন্ধ ট্রেনগুলো চালু করার জন্য একাধিক কর্মসূচিও পালন করেছে জেলার সর্বস্তরের জনগণ। জেলার সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, জেলার রেলব্যবস্হা জোরদার করার লক্ষ্যে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে। জেলায় আধুনিক রেল স্টেশন, বাইপাস লাইন নির্মাণ করেছে। অথচ করোনার সময়ে বন্ধ করা ট্রেনগুলো আর চালু করা হয়নি। আশপাশের সব জেলার মানুষ চার-পাঁচটি আন্তঃনগরসহ বিভিন্ন ট্রেনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিরাপদে যাতায়াত করতে পারছেন। কিন্তু ট্রেনগুলো বন্ধ থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের যাত্রীরা রেলসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ট্রেনগুলো চালু হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন মাস্টার শহিদুল আলম বলেন, বন্ধ হওয়া ট্রেনগুলো চালুর বিষয়ে আপডাউনসহ মোট চার জোড়া ট্রেন বন্ধ আছে। এ ট্রেনগুলো কবে নাগাদ চালু হবে আমাদেরকে কিছুই জানায়নি। এ ট্রেনগুলো চালু হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাবাসীর জন্য অনেক উপকার হবে। উপচে পড়া যাত্রী থাকলেও বনলতায় অনলাইনসহ মোট আসন ১৯৬টি। আমরা আশানুরূপ টিকিট না দিতে পারায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
স্হানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, রেলের লোকবল সংকট থাকায় বন্ধ হওয়া ট্রেনগুলো চালু হচ্ছে না। নিয়মমাফিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করে জনবল নিয়োগ দিয়ে বন্ধ হওয়া ট্রেনগুলো চালু করতে হবে।
পশ্চিমের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, জনবল (চালক) সংকট ,ট্রেনের কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে এই রুটের বন্ধ ট্রেন গুলি চালু করা যাচ্ছে না। পশ্চিমাঞ্চলে ব্রড গেজের নতুন ১৪ টি ইঞ্জিন আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগের ইঞ্জিনগুলো বিরামহীন চলার কারণে গতি কম এবং দুর্বল হয়ে যাওয়ায় পথিমধ্যে ইঞ্জিন বন্ধ বা বিকল হয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ এ সব ইঞ্জিনগুলি দিয়ে মালবাহে ট্রেন চালানো হচ্ছে। এছাড়া বড় বড় স্টেশনে সান্টিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এই ইঞ্জিনগুলি। এগুলো যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো অনুপযোগী।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন রূটে আন্তঃনগর ট্রেন বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র কোচের সংকট ও ইঞ্জিন সংকটের কারণেই বন্ধ ট্রেন গুলি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছেন নতুন ইঞ্জিন ও কোচ আমদানি করে বন্ধ ট্রেন গুলি চালু করার।#