নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ………………………………………………….
রাজশাহী মহানগরীতে প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিক আনিসুজ্জামানের উপর হামলা চালিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। এঘটনায় সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করার হুমকি দেয় রাজপাড়া থানা পুলিশ। ১৮ নভেম্বর শুক্রবার দুপুরে নগরীর হোটেল এক্সে এ ঘটনা ঘটে।
এর প্রতিবাদে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ এএসএম সিদ্দিকুর রহমানকে প্রত্যাহারের দাবিতে থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন সাংবাদিকরা। পরে রাজশাহী পুলিশ কমিশনারের আশ্বাসে ওসিকে প্রত্যাহারে ৪৮ ঘণ্টার অল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা।
রাতেই লাঞ্চিতের শিকার সাংবাদিক আনিসুজ্জামান রাজপাড়া থানায় দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন এবং রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অমিত ঘোষ ও পারভেজ নামের দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা যায়, এক্স নামের ওই আবাসিক হোটেলে সকালে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন দৈনিক ইত্তেফাকের রাজশাহীর স্টাফ রিপোর্টার মো. আনিসুজ্জামান। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ রিপনসহ কয়েকজন সাংবাদিক। তারা প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সাংবাদিক আনিসুজ্জামানকে পুলিশের উপস্থিতিতে উদ্ধার করে হোটেল থেকে বের হয়ে আসে। তখন হোটেলের কর্মীরা আবারও পুলিশের সামনেই সাংবাদিক আনিসুজ্জামানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পুলিশ তখন নির্বিকার ছিল। এ সময় ওই এলাকার এক সন্ত্রাসীকে হোটেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রকাশ্যেই হত্যার হুমকি দিতে দেখা যায়। পুলিশের সামনেই ফোন করে অন্য সন্ত্রাসীদের অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে ডাকতেও দেখা যায় ওই সন্ত্রাসীকে।
এ সময় সাংবাদিকরা হোটেলের এক্সের সামনে অবস্থান নিয়ে অভিযুক্তদের আটকের দাবি জানালে পুলিশ দু’জনকে থানায় নেয়। কিন্তু থানায় নেয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নিতে গড়িমশি করা এবং উল্টো হোটেল এক্সের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান। পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তৌহিদুল আরিফের সামনেই ওসি সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে ঔর্দ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। গ্রেফতার করার হুমকিও দেন। এর প্রতিবাদে সাংবাদিকরা থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তারা ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আন্দোলন চলাকালে নগর গোয়েন্দা শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল সেখানে যান। এসময় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও ওসিকে প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন। পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওসিকে প্রত্যাহারসহ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন সাংবাদিকরা।
রাজশাহী নগর গোয়েন্দা শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল জানান, হোটেলটি চালু হওয়ার শুরু থেকেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এক রকম দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তাদের কাছেও বেশকিছু তথ্য আছে। তারা দ্রুতই ব্যবস্থা নিবেন। আর সাংবাদিকের প্রতি হামলা অনাকাক্ষিত। রাজশাহী পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।#