# জিয়া রাজ………………………………………………
কিশোর গ্যাং নিয়ে সার দেশের ন্যায় রাজশাহীতেও স্বস্তিতে নেই প্রশাসন,অভিভাবক কিংবা ভুক্তভোগীরা। একের পর এক মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং গ্রুপ। অপেক্ষাকৃত তরুণ বয়সের ছেলেরাই কিশোর অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। বাবা মায়ের অসচেতনতা, স্কুল কলেজের দূর্বলতা,নৈতিক শিক্ষার অভাব, নিজেদের নায়ক হিসাবে প্রমান দেয়া, রাতারাতি ক্ষমতা বনে যাওয়ার ইচ্ছা এবং সমাজের প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া পেয়ে কিশোর বয়সী ছেলেরা পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন গ্রুপ তৈরী করছে।
প্রতিটি গ্রুপে ১৫-২৫ জন করে সদস্য থাকে। সকলে মিলে চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি, মাদক সেবন, মাদক বিক্রি, ইভটিজিং, রাস্তা ঘাটে নারিদের উত্তোক্ত করা সহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত এই সকল কিশোর গ্যাং গ্রুপ। প্রথমে তারা ছোট খাটো অপরাধ গুলো করে বলে মানুষের চোখে খুব একটা পড়ে না। চুল বড় করে রাখা, জোরে মোটরসাইকেল চালানো, ভিন্ন পোশাক আশাক পরা, ইভটিজিং করা এই সমস্ত অপরাধ করে বলে মানুষ সেটাকে গুরুত্ব দেয় না। সামাজিক ভাবে সেটাকে মেনে নেয়। আইন শৃংখলা বাহিনীও খুব একটা গুরুত্ব সহকারে বিষয়গুলো আমলে নেয় না। রাজশাহীতে ডি হট বয়েজ, সিএনবি বয়েজ, হিটার বয়েজ, রাজশাহী ডেঞ্জার বয়েজ, খুলিপরা গ্যাং, বিটক্যাল গ্রুপ, বুলেট গ্যাং, গুড়িপাড়া কিংস সহ বিভিন্ন নামে এই গ্রুপ গুলো বেশি সক্রিয়।
ইতোমধ্যে রাজশাহীর নিউ মার্কেট সহ কয়েকটি জায়গায় কিশোর গ্যাং দ্বারা খুন হওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে। বেশির ভাগ কিশোর গ্যাং এর পেছনে এলাকার বড় ভাই কিংবা রাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকায় এরা অপরাধ করতে ভয় পায়না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ক্যাডার বাহিনী হিসেবে কাজ করে এই কিশোর গ্যাং সদস্যরা।
রাজশাহীর মেহেরচন্ডী, ছোটবনগ্রাম, চন্ডিপুর,হেতেমখা, সাহজিপাড়া, টিকপাড়া,নিউ মার্কেট, কলোনী, সপুরা, সিএন্ডবি এলাকায় দৌরাত্ম্য চলে কিশোর গ্যাংদের। এই এলাকায় নারী পুরুষ সকলেই সার্বক্ষণিক আতংকে বসবাস করেন। এসমস্ত গ্রুপের কেউ কেউ আবার চাদাবাজি, বিভিন্ন ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার মত ঘটনাও ঘটিয়েছে। কিশোর গ্যাং সদস্যরা মোটরসাইকেল চুরি, ছিনতায় করেও থাকেন।
টিকাপাড়া কবরস্থানে রাত হলেই বসে কিশোরদের মাদক সেবনের আড্ডা। সারা দিন এলাকায় ত্রাস চালিয়ে রাতের বেলায় কবরস্থানে বসে মাদক সেবন। কিশোর গ্যাং এর কোন কোন গ্রুপ রা মোটরসাইকেল স্টার্ন করে, সংঘবদ্ধ ভাবে রাস্তায় চলাচল করে, রাস্তায় বিভিন্ন সময় নারীদের ইভটিজিং করে, ওড়না, ব্যাগ ধরে টান দেয়, ছিনতাই করে। শহরের বিভিন্ন নির্মানাধীন ভবন বা পরিত্যাক্ত ভবনে থাকে এদের অফিস বা চেম্বার। কারো কারো চেম্বারে থাকে একাধিক টর্চার সেল।
রাজশাহীর সাইবার অপরাধ দমন বিভাগের ইনচার্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার উৎপল কুমার চৌধুরী জানান, কিশোর গ্যাং দমনে প্রশাসন খুবই ততপর হচ্ছে। রাজশাহীতে কিশোর গ্যাং দমনে প্রতিটি এলাকায় অভিযান চালানো হবে। তিনি জানান এই কিশোর গ্যাং যদি আমরা দমন করতে না পারি তবে এরাই একদিন বড় বড় অপরাধের সাথে জড়িয়ে যাবে।
রাজশাহী র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার জানান রাজশাহী জেলা ব্যাপী কিশোর গ্যাং তালিকা চলছে। ইতোমধ্যে আমরা ৫ শতাধিক কিশোর গ্যাং সদস্যের তালিকা তৈরী করেছি। তালিকার কাজ শেষ হতে একটু সময় লাগছে, তালিকার কাজ শেষ হলেই আমরা সাঁড়াশী অভিযানে নামবো। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, বাগমারা,চারঘাট ও বাঘাতে বেড়েছে কিশোর গ্যাং এর সংখ্যা।সেখানেও চলবে অভিযান।#