আব্দুল বাতেন: বাংলার প্রাচীন স্থাপত্যের গর্ব সোনা মসজিদ এখন চরম ঝুঁকিতে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন শত শত পণ্যবোঝাই ট্রাক ও লরি যাতায়াত করে। এই ভারী যানবাহনের কম্পনে ঐতিহাসিক সোনা মসজিদের দেয়াল ও গম্বুজে দেখা দিয়েছে ফাটল। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এই অমূল্য ঐতিহ্য যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার প্রাচীন গৌর নগরীতে অবস্থিত এই মসজিদটি ১৫ শতকে ইলিয়াস শাহি আমলে নির্মিত হয়। কালো পাথরে গড়া স্থাপনাটি মোগল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন হিসেবে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু এখন এর গায়ে সময়ের ক্ষয়চিহ্ন ও ফাটলের দাগ স্পষ্ট।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্থলবন্দরের কারণে মসজিদের একেবারে পাশের সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক, ট্রেইলার ও ভারী পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করছে। এসব যানবাহনের কম্পনে মসজিদের নিচের মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে মসজিদের কয়েকটি অংশে পাথর খসে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মসজিদের ক্ষয়রোধে প্রাথমিক কিছু সংস্কারকাজ চলছে। তবে তারা স্বীকার করেছেন, যানবাহনের কম্পন বন্ধ না হলে মসজিদের দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ সম্ভব নয়।
স্থানীয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সোনা মসজিদ শুধু আমাদের এলাকার নয়, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের গর্ব। প্রতিদিন শত শত ট্রাকের ঝাঁকুনিতে যদি এটা ধসে পড়ে, তাহলে সেটা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হবে।”স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, মসজিদের চারপাশে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হোক এবং পর্যটন এলাকাটি সংরক্ষণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।#