এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
শাহীন আইন শিক্ষার্থী হিসেবে আইনের বিভিন্ন গ্রুপ গুলোতে বেশ পরিচিত। সেই পরিচয়ের ধারাবাহিকতায় শাহীন বিভিন্ন গ্রপে আইনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাঝে মধ্যে লেখালেখি ও তথ্য উপাত্ত পরিবেশন করে থাকে। শাহীন বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট পরীক্ষায় বসবে।শাহীনের বিভিন্ন জেলা বারে বন্ধু স্বজনেরা আইন ব্যবসা ও কোচিং এর সাথে জড়িত। সেই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুর জেলা বারে শাহীনের বন্ধু অ্যাডভোকেট মোঃ মহিউদ্দিন (মহিন) প্র্যাকটিস করেন ও মহিন ল একাডেমিতে আইনের শিক্ষার্থীদের কে কোচিং সেবা প্রদান করে থাকেন।
তারিখ ৪ঠা জানুয়ারী ২০২৫ ইং। মহিন ল একাডেমির জনৈক শিক্ষার্থী রুম্মান শাহীনের মেসেঞ্জারে সৌজন্যমুলক সালাম জানিয়ে মেসেজ করেন। কিন্তু শাহীন সেই মেসেজ দেখতে পান ১৩ ই জানুয়ারী ২০২৫ ইং। ১৭ই জানুয়ারী ২০২৫ইং রাতে মেসেজে প্রেরিত সালামের উত্তর প্রদান করা কালে জনৈক আইন শিক্ষার্থী রুম্মান অনুমতি নিয়ে মেসেঞ্জারে কল করে অ্যাডভোকেট মোঃ মহিউদ্দিন (মহিন) সম্পর্কে তথ্য জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেন।
রুম্মানঃ মহিন স্যার কেমন আছেন, স্যারের কোন খোঁজ খবর পাওয়া যাচ্ছে না। স্যার কি অসুস্থ? আপনি কি কোন খবর জানেন? আপনি স্যারের একজন ভালো বন্ধু! উত্তরে ধীরে ধীরে সকল প্রশ্নের জবাব দিয়ে শাহীন জনৈক আইন শিক্ষার্থী রুম্মান’কে সন্তোষ্ট করেন। মাঝে মধ্যেই মেসেঞ্জারে কথা হয় আইন বিষয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসায় ও প্রাসঙ্গিক আলাপচারিতায়।
এভাবে কেটে যায় কয়েক মাস, বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট পরীক্ষা এসে উপস্থিত হয়। অনেকের সাথে শাহীন রজব আলী, উৎপল মন্ডলসহ জনৈক আইন শিক্ষার্থীও পরীক্ষায় বসেন। দুর্ভাগ্যক্রমে শাহীন, রজব আলী, উৎপল মন্ডলরা পাশ করলেও রুম্মানসহ হাজারও শিক্ষার্থী ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার হয়ে অকৃতকার্য হন।
আইন কানুন পড়ালেখার ধারাবাহিকতার মাঝে বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট লিখিত পরীক্ষার তারিখ চলে আসে। বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষা ২৮শে জুন ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষার দিন শাহীনের মুঠো ফোনে রুম্মানের গর্ভধারিণী মাতা কল করে শাহীনের মায়ের সাথে সুদীর্ঘ সময় কথা বলেন।
শাহীন বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট পরীক্ষা ও আইটিপি পরীক্ষা শেষ করে ঢাকা থেকে বাড়ীতে ফিরে আসলে তার মা তাকে অনেক কথা খুলে বলেন। আইন শিক্ষার্থী রুম্মানের সাথে এক পর্যায়ে বন্ধুত্বের সম্পর্ক সৃষ্টি হতে থাকে শাহীনের। শাহীন একজন নিম্ন মধ্যেবিত্ত ঘরের ছেলে বাবা নেই,মা ও ভাই-বোন আছে। নিজেকে উপার্জন করে সংসার চালাতে হয়। শাহীন খুবই মিতব্যয়ী ও আত্মকেন্দ্রীক একজন সাধারন মানুষ। প্রতিবাদ তার রক্তে মিশে থাকা একটি অনন্য বদ গুন।অভিমান করা তার চিরাচরিত স্বভাব!
জনৈক আইন শিক্ষার্থী রুম্মান অনেক গুলো ছবি পাঠিয়েছেন শাহীনকে কবিতা লেখার উপজীব্য হিসেবে। এছাড়াও আমন্ত্রণের একটি শর্ট ভিভিও পাঠিয়ে শাহীনকে আমন্ত্রণ করেন। যথারীতি সৌজন্যতা পরিমন্ডলে ভাবমূর্তি ইতিবাচক রেখে কথা বার্তা চলতে থাকে। আইন শিক্ষার্থী রুম্মানের পুর্বপুরুষেরা ছিলেন জমিদার। সেই প্রেক্ষিতে জমিজমা সংক্রান্ত সমস্যাদি বিষয় সম্পর্কেও শাহীনকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু শাহীন মন থেকে বরাবরই নির্লোভী ও নির্মোহ একজন মানুষ।
স্বভাবজাত কারনে লিখতে ভালোবাসেন শাহীন। পনেরই জুলাই ২০২৫ কথা বলতে গিয়ে রুম্মানের প্রতি ইয়ার্কির ছলে শাহীন বলেন, আপনার সাথে আর হয়তো কথা বলা হবেনা? আপনারা ধনী মানুষ আর আমরা গরীব! তাই অসমতায় বন্ধুত্ব হলেও তা টিকতে পারেনা। রুম্মানের প্রেরিত ভিডিওর উপর আবেগ তাড়িত হয়ে আবহ সৃষ্টি করে একটি কবিতা লিখে পোস্ট করলেন শাহীন। ইয়ার্কির ছলে বলা কথা গুলো ও আবেগ তাড়িত কবিতা লিখে পোস্ট করাই কাল হলে শাহীনের জীবনে!
যদিও সংশ্লিষ্ট শর্ট ভিডিও বিষয়ে শাহীন ও রুম্মান ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ এ বিষয়ে জানতেন না বা জানার কথা নয়! তবুও শাহীনকে থ্রেট করা হয়, উত্তেজিত ভাষায় হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়, মামলা মোকদ্দমার ভয়-ভীতিও প্রদর্শন করা হয়। শাহীন ক্ষমা চেয়েও পরিত্রাণ পায়না! বারংবার অসহায়ত্ব ও সরল বিশ্বাসের ফোড়ন কেটেও রুম্মানের বড় আপাকে শান্ত করতে পারেনা। যে বড় আপা কয়েক দিন আগেও শাহীনের ব্যবহার ও আলাপচারিতায় মুগ্ধ ছিলেন অথচ সময়ের ব্যবধানে তিনি অবিশ্বাসের তীর মেরে শাহীনকে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত করতেও দ্বিধা করেননি।
শাহীন রুম্মানদের ব্যবহারে কোন রুপ কষ্ট পায়নি।সে তাদের জন্য দোওয়া করে মঙ্গল কামনায় রোজ পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ পড়ে ও তাহাজ্জুদ আদায় করে। হঠাৎই শাহীনের মা বলছেন শাহীনকে, বাবা তোমার ঐ বান্ধবীর মা খুবই ভালো মানুষ, হৃদয়বতী মানুষ, তুমি তিনির সাথে মাঝেমধ্যে কথা বার্তা বলবে। শাহীন ভাবে কিভাবে জনৈক আইন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোন মুখে কথা বলবে? (১৬ই জুলাই ২০২৫ঈশায়ী)#
লেখক পরিচিতি:এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ কবি-কলামিস্ট, সাংবাদিক-গীতিকার, পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী, চলনবিল, পাবনা।