লিয়াকত হোসেন : রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়নে জামিরা কলেজে পাচ শিক্ষক ও ২ ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগে অর্থ বাণিজ্যেসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে দুর্নীতির বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। এ নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায় , পুঠিয়া দুর্গাপুরের সাবেক এমপি মুনসুর ও সাবেক এমপি দারা ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক চেয়ারম্যান বদি কলেজের সভাপতি থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষ ইয়াসিন ও শিক্ষক প্রতিনিধি জনাবের প্রত্যক্ষ সহায়তায় হাবিব হোসেনকে ক্রিয়া , মাহমুদাকে ভুগোল, বদিকে ইসলামে ইতিহাস,সাহাদতকে কমার্স, ফারহানাকে পদার্থ বিজ্ঞান শিক্ষক-শিক্ষিকা পদে এবং আজমল, মানিক রতনকে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগের জন্য প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিগত দিনে নিয়োগ চূড়ান্ত করেছেন। এ বিষয় টি এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে চায়ের দোকানের আড্ডায়। এই সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগের নামে অধ্যক্ষ সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা নিয়োগ বাণিজ্য ও কলেজ ফান্ডে ডোনেশনের নামে হাবিবের কাছে ৩ লক্ষ, মাহমুদার কাছে ৪ লক্ষ বদির কাছে ৩ লক্ষ, সাহাদতের কাছে ২ লক্ষ, ফারহানার কাছে ৭ লক্ষ টাকা নিয়েছেন একাধিক এলাকাবাসী নিশ্চিত করেছেন।
অপর দিকে কর্মচারীদের মধ্যে আজমল ৮ লক্ষ মানিক ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেছেন একাধিক ব্যাক্তি এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ সকল বিষয়ে কলেজের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে সঠিক তদন্তের দাবি করছেন জামিরা এলাকার বাসিন্দাসহ সচেতন মহলের নাগরিকগণ। বাংলা ট্রাকের স্বত্বাধিকারী আমিনুল হাজী কলেজের শুরু থেকে অনুদান হিসেবে প্রতিমাসে ৭ হাজার পাঁচশত টাকা দিয়ে আসছেন। এ টাকা কি খাতে খরচ হয়েছে তদন্ত দাবি করেছেন এলাকাবাসী। কলেজের শিক্ষা সফরের ২০১৪ সালে ও ২০২২ সালে গাড়ি ভাড়া বাবদ এক লক্ষ দশ হাজার টাকা করে খরচ দেখানো হয়েছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেন এ বিষয় টি শিক্ষক প্রতিনিধি জনাব ভাই ভালো বলতে পারবেন যেহেতু আমারাও গেছি সে সময় কক্সবাজারে সেখানে সাতদিন থাকতে হয়েছে খরচ তো একটু বেশি হবেই। কলেজের উন্নয়ন কাজে ব্যায়ের জন্য কলেজের নামে থাকা জমি ও আম গাছ ইজারার বিষয়ে বলেন, মৌখিকভাবে টেন্ডার দেয়া হয় দু- পাঁচ হাজার করে টেন্ডার এ টাকা উঠে। এ যাবত ইজারা বাবদ ৩৫ হাজার টাকা উঠেছে। গাড়ি ভাড়া বিষয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি জনাব আলি কলেজে উপস্থিত না থাকায় তার মুঠো ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন।
তিনি হুমকি দিয়ে আরও বলেন, আপনি কি আমাদের কলেজের কেউ আমার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন আমি কলেজে আছি কিনা আবার হাজিরা খাতা দেখতে চাচ্ছেন আমি বাড়ির কাজে হাত দিয়েছি ব্যাস্ত আছি। উপদেষ্টা ইউনুস ও আমার কিছু করার ক্ষমতা নাই আপনি নিউজ করে কি করবেন দাম্ভিকতার সহিত বলেন।
নতুন ভবন নির্মাণে ২৫ পার্সেন্ট উৎকোচ নেওয়ার কথা বলতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আপনার মতো দু-চারটা সাংবাদিক আমার পকেটে থাকে ৫০০ টাকা দিলে। এরপর কলেজে আসলে ঠ্যাং ভেঙ্গে রেখে দেবো বলে ফোন কেটে দেন। অর্থ লেনদেনের বিষয়টি শিক্ষক শিক্ষিকা ও ল্যাব এসিস্ট্যান্টদের কাছে যানতে চাইলে তারা অপরগতা প্রকাশ করে কলেজ অধ্যক্ষের সাথে কথা বলার জন্য বলেন।
অর্থ লেনদেনের বিষয়ে অধ্যক্ষ ইয়াসিন আলি বলেন, আমি কলেজ ফান্ডে ডোনেশনের জন্য পূর্বে নিয়োগের সময় হাবিবের কাছে ৩ লক্ষ, মাহমুদার কাছে ৪ লক্ষ বদির কাছে ৩ লক্ষ, সাহাদতের কাছে ২ লক্ষ টাকা নিয়েছি তবে আপনি টাকার কাছে যেতেই পারেননি টাকাতো দুই এমপি চেয়ারম্যান বদি ও মাসুদ নিয়েছে আপনি ওদের কাছে যান আমি যে টাকা নিয়েছি সব টাকার জমি কিনেছি।
আপনি যাদের কথা বলেছেন টাকা নিয়েছি ডাকেন কেউ স্বীকার করবে না। আমাকে নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে আমি নিয়োগ দিয়েছি। যা অর্থ লেনদেন কলেজের বাইরে থেকে হয়ে এসেছে। আমি যেটা নিয়েছি সেটার হিসাব দিতে পারবো। আমি অনেক দৌড়াদৌড়ি করে কলেজ ভবনের কাজটা অনুমোদন করতে সক্ষম হয়েছি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বদি বলেন, আমি কলেজের সভাপতি ছিলাম তবে অর্থ লেনদেনের সাথে আমি জড়িত না এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না সব কলেজ কর্তৃপক্ষ জানে। নিয়োগ কলেজ কর্তৃপক্ষই দিয়েছেন বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে বর্তমান কলেজের সভাপতি পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, কলেজের অনিয়ম গুলো যদিও আমার আসার পূর্বে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে তদন্ত প্রমাণ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#