# বিশেষ প্রতিবেদক…………………………………………………….
চলতি শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম গুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। এ অবস্থায় অনেক পরিবার রান্না গোসলসহ অন্যান্য প্রয়োজনে প্রয়োজন মতো পানি পাচ্ছেন না। সামর্থ্যবানরা দোকান থেকে পানি কিনে চাহিদা মেটালেও বিপাকে পড়ছে সাধারণ মানুষ। হাজারও পরিবার পানি সংকটে, পানির জন্য ছুটতে হচ্ছে পাশের বাড়িতে। চৈত্র-বৈশাখ মাসে অস্বাভাবিক ভাবে নিচে নেমে গেছে পানির স্তর। এসব এলাকায় হস্তচালিত নলকূপে ৬০ থেকে ৮০ ফুট পর্যন্ত বরিং করা হলেও প্রতি বছর এ সময়টাতে তীব্র তাপদাহে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত পানি সংকটের প্রকট আকার ধারণ করে।
অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে নদ-নদী, পুকুর-ঘাট, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে গেছে। চৈত্র-বৈশাখের কাঠফাটা রোদে মাঠ, ঘাট, খাল, বিল ও প্রান্তর ফেটে চৌচির। বৃষ্টির অভাবে ফসলি ক্ষেতও ক্ষতির সম্মুখীন। পুকুর ও জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। এতে খরতাপে হাঁপিয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রাণিকুল।
শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, পানির তীব্র সংকট। অনেকের বাড়িতে নলকূপ আছে কিন্তু পানি উঠছে না, ফলে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার বাড়ির মটর দিয়েও পানি উঠছে না। পানির জন্য মানুষ প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেক পরিবার প্রতিবেশীর বাড়িতে থাকা জলমটর দিয়ে পানি সংগ্রহ করছে কিন্তু সেখানেও লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। অনেকে আবার এলাকায় থাকা মসজিদের জলমটর থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। এ দিকে শুধু বাড়িতেই নয়, মাঠেও পানির অভাবে ফসল নষ্ট হচ্ছে। যেমন: ভুট্টা, তিল, আখ, ধান, মুগ কালাই সহ বিভিন্ন ফসল পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে।
এলাকার কৃষকরা জানান, মাঠে যে সকল বরিং করে শ্যালোমেশিন দিয়ে পানি উত্তোলন করে ফসলের সেচ দিতো সে সব বরিং এ আর পানি উঠছে না। ফলে বিকল্প পদ্ধতিতে মাঠে জলমটার বসানো হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ ছাড়া জলমটার চলে না তাই সব জায়গাতে বসানো সম্ভব হচ্ছে না।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, আমাদের নিম্ন আয়ের মানুষদের জলমটার কেনার মতো সামর্থ্য নেই। তাই নলকূপই ভরসা। কিন্তু পানি না থাকায় খুবই বিপাকে পড়েছি। আল্লাহর রহমত বৃষ্টি ও বর্ষা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মেহেদী হাসান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলায় সরকারি ভাবে বরাদ্দ কৃত নলকূপের সংখ্যা ৪ হাজার ২৩৩ টি। তার মধ্যে ৭৯৭ টি নলকূপ থেকে পানি উঠছে না একেবারে অচল গেছে। সচল রয়েছে ৩ হাজার ৪শ’ ৩৬ টি। এ ছাড়া মালিকানাধীন নলকূপ রয়েছে প্রায় ২০ হাজার। তবে এ আবহাওয়া চলতে থাকলে পানির স্তর আরও নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।