নাজিম হাসান………………………………….
রাজশাহীতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হয়েছে। মহা নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর শুভ আগমন উপলক্ষে ১২ই রবিউল আওয়াল দিনটি উপলক্ষে রোববার (৯ অক্টোবর) সকালে ইসলামী ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) শীর্ষক আলোচনা সভা জশনে জলুস ধর্মীয় র্যালী বের করা হয়।
র্যালীটি শিরইল কলোনী ৪নং গলির শেষ মাথায় বায়তুল মামুর জামে মসজিদ প্রঙ্গন থেকে বের হয়ে দরগাপাড়া হযরত শাহ মখদুম (রাঃ) এর মাজারে চাদরপুসি,পুস্পস্তবক অর্পন ও মাজার জিয়ারত করে সমগ্র মুসলিম উম্মার এবং দেশ ও জাতির জন্য শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। পরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও কর্মের উপর আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি বলেন, সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা:) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দেড় হাজার বছর আগে, এই দিনে আরবের মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সর্বশেষ নবী ও রাসুল। তাঁর পর আর কোনো নবী-রাসুল আসবেন না। তাই আল্লাহ্ তায়ালা তাঁকে পৃথিবীর সব মানুষের নবী ও রাসুল বানিয়ে পাঠিয়েছেন। এ লক্ষে নবুয়তের মহান দায়িত্ব দেওয়ার আগেই তিনি তাঁকে নিখাদ সোনার মানুষে পরিণত করেন। পুরো বিশ্বের ত্রাণকর্তা হিসেবে একজন মানুষের মধ্যে যত গুণের সমাহার দরকার, তার সব কটিই তাঁকে দান করেন। তিনি মানবিক গুণাবলি ও উন্নত জীবনবোধে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষে পরিণত হন।
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)-এর মহান জীবনাদর্শ অনুসরণের আহবান জানিয়ে বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, পৃথিবী এক অস্থির সময় পার করছে। মুসলমানরা মহানবী (সা.)-এর আদর্শ ভুলে, নিজেদের সোনালি অতীত ভুলে বিভেদ, হানাহানি, হিংসা ও অসহিষ্ণুতা চর্চায় ব্যস্ত। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হলে তাঁর মহান জীবনাদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। তাঁর আনীত বার্তা নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করে এবং মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্বশান্তির জন্য কাজ করাই হোক পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর অঙ্গীকার।
বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীকে ভালোবাসা, সৌহার্দ্য, স¤প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব, ধৈর্য, ন্যায়বিচার ও শান্তির বার্তা দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি মক্কার কষ্টের পর্ব শেষে মদিনায় এমন আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে কোনো ধরনের জুলুম ও বর্ণবৈষম্য ছিল না। তিনি মানুষের সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেন। ইসলামের মহান আদর্শ প্রচারের যে দায়িত্ব মহান আল্লাহ তাঁকে দিয়েছেন, তা পালন করেই তিনি পৃথিবী ত্যাগ করেন।
আলোচনা সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মুহাম্মদ জালাল আহমদ এঁর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী রাজশাহীর উপ-পরিচালক মালিক সাঈদ হায়দার, মদিনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মোকাদ্দাসুল ইসলাম। এছাড়াও প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামিয়া দারুল উসয়াহ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি ওমর ফারুক।
উল্লেখ্য, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে আরবের মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ৬৩ বছর বয়সে আরবের মদিনায় ওফাত গ্রহণ করেন।#