1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
শ্যামনগরে  কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির আলোচনা সভা  রাজশাহীতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভা  বাগমারায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২ ফার্মেসিতে জরিমানা রাজশাহীর তানোরে হাটের জায়গা জবরদখল রাজশাহীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রাসিকের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা অব্যহত দুর্গাপুরে সাঁড়াশি অভিযানে ছাএলীগ নেতা সহ গ্রেফতার ১০জন খুলনায় সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে নবনিযুক্ত উপপরিচালক এর সৌজন্য সাক্ষাৎ ৩ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ উপলক্ষে বটিয়াঘাটা বিএনপির প্রস্তুতি সভা  পোরশায় বুদ্ধিজীবি দিবস ও মহান বিজয় দিবস /২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে প্রস্ততি মূলক সভা রূপসায় ঝুলন্ত শিশুর লাশ উদ্ধার, হত্যা না আত্মহত্যা!

ব্যক্তি সুদের কবলে রাজশাহীতে শতাধিক পরিবার

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৭৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

জিয়াউল কবির…………………………….

রাজশাহীতে সুদ কারবারিদের ভয়ংকর থাবায় নি:স্ব হওয়ার পথে শতাধিক পরিবার। সুদ কারবারিদের বেপরোয়া ও বেআইনি কর্মকাণ্ড, অব্যাহত হুমকি ও নানা ষড়যন্ত্রে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। কিছুতেই সুদ কারবারি সিণ্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসন। যতই দিন যাচ্ছে সুদ কারবারিরা হিংস্র ও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। পুলিশ বলছে, সুদ কারবারি সিণ্ডিকেটের সদস্যরা মাদক কারবারির সাথেও সম্পৃক্ত। এছাড়া নারী সুদ কারবারিদের কেউ কেউ পতিতাবৃত্তির সাথেও জড়িত রয়েছেন।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, নগরীর কাটাখালী থানার থান্দারপাড়া এলাকার মৃত সমশের আলীর দুই ছেলে ও ছয় মেয়ে মিলে গড়ে তুলেছেন সুদ কারবারি সিণ্ডিকেট। এছাড়া স্থানীয় আরো কয়েকজনসহ সব মিলিয়ে অন্তত ১৫ জন এই সিণ্ডিকেটের সদস্য। সুদ কারবারিরা হলেন- দুলাল হোসেন (৫৫), নাজমা বেগম (৪৩), ছামেনা বেগম (৩৬), মোসা: নীলা বেগম, মোসা: মনু বেগম (৪৬), শীলা বেগম (৪৫) প্রমুখ।

তারা এলাকার নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারগুলোকে টার্গেট করেন। প্রতি লাখে ৩০ পার্সেণ্ট হারে সুদে তারা ঋণ দিয়ে থাকেন। সুদে যাদেরকে ঋণ দেওয়া হয় তাদের কাছ থেকে ফাঁকা চেক ও স্ট্যাপে স্বাক্ষর করে নেন সুদ কারবারিরা। আসল ও সুদ মিলিয়ে পুরো টাকা পরিশোধ করার পরেও অনেককে আরো সুদ গুণতে হয়। অর্থাৎ কেউ ৩০ পার্সেণ্ট হারে সুদে এক লাখ টাকা ঋণ নিলে তাকে আসল ও সুদ মিলিয়ে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু কোনো কারণে এক বা দুই মাস কিস্তি দিতে না পারলে চক্র বৃদ্ধি হারে আরো অনেক টাকা সুদ গুণতে হয় ভুক্তভোগীদের।

ভুক্তভোগীদের একজন হলেন মোসা: ফেন্সি বেগম। তিনি বলেন, আমি কেক ফ্যাক্টরীতে শ্রমিকের কাজ করি। নীলা, শীলা ও লাকি এই তিনজনের কাছ থেকে মোট ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিই। সুদ ও আসল মিলিয়ে এক বছরের মধ্যে পরিশোধের শর্তে এই টাকা নেওয়া হয়। তবে আমার কাছ থেকে ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্প স্বাক্ষর করিয়ে নেন তারা।

ফেন্সি বলেন, এক বছরে আমি চার লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। এখন আরো তিন লাখ টাকা দাবি করছেন সুদ কারবারিরা। অবশিষ্ট টাকা না দেওয়ায় সুদ কারবারিরা আমাদের সংসারের যাবতীয় জিনিসপত্র অর্থাৎ লেপ, তোষক, বালিশ, কাঁথা, হাঁড়ি-পাতিলসহ সব জিনিস জোর করে নিয়ে চলে গেছে। এ অবস্থায় তারা অনেকটায় নি:স্ব হওয়ার উপক্রম বলে জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, সুদ কারবারি লাকির কাছ থেকে তিনি বেশ কিছু টাকা সুদে ঋণ নিয়েছিলেন। সুদ ও আসল মিলিয়ে বেশির ভাগ টাকাই পরিশোধ করেন তিনি। তবে তার কাছ থেকে আরো ৪০ হাজার টাকা পেতেন লাকি। এই টাকার মধ্যে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা কম দিতে চেয়েছিলেন তিনি। এই কথা বলাতে সুদ কারবারি লাকি কৌশলে ভুক্তভোগীর ঘরে ঢুকে তীরের সাথে রশি পেঁচিয়ে আত্নহত্যা করার হুমকি দেন। শেষ পর্যন্ত এক প্রতিবেশির কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ধার হিসেবে এনে ওই সুদ কারবারিকে তা পরিশোধ করে মুক্ত হন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী চাঁদনী বেগম জানান, সুদ কারবারি ছামেনার কাছ থেকে ১৫ হাজার, মনুর কাছে পাঁচ হাজার ও নীলার কাছ থেকে ৩০ হাজার সহ মোট ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। সুদ ও আসল মিলিয়ে মোট এক লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এরপরেও আরো এক লাখ ১০ হাজার টাকা দাবি করেন সুদ কারবারিরা। অতিরিক্ত টাকা দিতে না চাইলে তারা ভুক্তভোগীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন। শুধু তাই নয়, তার প্রতিবন্ধী অসুস্থ মাকে চৌকির বিছানা থেকে টেনে হিচড়ে নিচে নামিয়ে দেন। তার মা প্রতিবন্ধী হওয়ার পাশাপাশি স্ট্রোক করে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অথচ টাকার জন্য তার অসুস্থ্য মাকে পর্যন্ত ছাড় দেননি সুদ কারবারিরা।

আরেক ভুক্তভোগী মোসা: তাসলিম ফারিয়া বৃষ্টি জানান, তার স্বামীর অটো গ্যারেজের ব্যবসা রয়েছে। তারা সুদ কারবারি শীলার কাছ থেকে তিন লাখ ও ছামিনার কাছ থেকে দুই লাখসহ মোট পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। পরে জমি ও গহনা বিক্রি করে সুদ ও আসল মিলিয়ে সব টাকা পরিশোধ করার পরেও আরো টাকা দাবি করেন সুদ কারবারিরা। এছাড়া আরেক ভুক্তভোগীর কোলের শিশুকে নিয়ে চলে যায় সুদ কারবারিরা। পরে অনেক দেন-দরবার করে টাকা দিয়ে কোলের শিশুকে ফেরত পান ভুক্তভোগী মা।

সুদ কারবারিরা যে কত বড় ভয়ংকর, বেপরোয়া ও বেহায়াপনা কাজ করতে পারেন সে সম্পর্কে পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তারা জানান, নারী সুদ কারবারিরা নিজে নিজেই বিবস্ত্র হয়ে ভুক্তভোগীদের জিম্মি ও ফাঁসানোর চেষ্টা করেন- এমন বহু ঘটনা রয়েছে। এছাড়া পুলিশকে ফাঁসানোর জন্য পুলিশের সামনেই নিজের গায়ে থাকা ব্লাউজ টেনে ছিঁড়ে ফেলেন এক নারী সুদ কারবারি।

ভুক্তভোগী তাসলিম ফারিয়া বৃষ্টি জানান, বেশ কিছু আগের ঘটনা। আমিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা আত্নীয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম। আর শুধুমাত্র আমার শ্বশুর বাড়িতে একাই ছিলেন। এমন সময় এক নারী সুদ কারবারি টাকা নেওয়ার জন্য আমাদের বাড়ি আসেন। কিন্তু আমাদের না পেয়ে রাগে আমার শশুরকে জোর করে টেনে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা লাগানোর চেষ্টা করেন এবং বলেন যে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এই ঘটনার মাধ্যমে আমার শ্বশুরকে ফাঁসিয়ে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালান ওই সুদ কারবারি।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে সুদ কারবারিদের অত্যাচার ও দৌরাত্বে অতিষ্ঠ হলেও প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে এই প্রথম থানার বর্তমান ওসি ভুক্তভোগীদের পক্ষে এসে দাঁড়িয়েছেন। ওসি সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেবেন এমন আশ্বাস দেওয়ায় এই জুলুম থেকে কিছুটা হলেও ভুক্তভোগীদের রেহাই মিলবে বলে আশা করছি।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মোবাইলে অভিযুক্তদের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে কাটাখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, ওই এলাকার একই পরিবারের দুই ভাই ও ছয় বোন এবং পরিবারটির আরো একাধিক সদস্য ও স্থানীয় মিলে অন্তত ১৫ জন এই সুদ কারবারির সাথে জড়িত হয়ে সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ আছে।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট