
বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় স্ত্রীকে ডিজেল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ ৩জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (০২-১১-২০২৫) রাতে নিহত অনন্যা ওরফে মুন্নি (২৫)’র সহোদর ভাই মোঃ মিঠু বাদি হয়ে নিহত গৃহবধুর স্বামী সবুজ আলী ওরফে সুরুজ (৩৫)সহ তার পিতা সহিদুল মাঝি, মাতা হাজেরা বেগমকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেছেন। আসামীরা সকলেই বাঘা পৌরসভার চক নারায়নপুর মিস্ত্রী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয় ।
ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রোববার বাদ আসর বাঘা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। নিহত মুন্নির বাবার বাড়ি বাঘা পৌরসভার মিলিক বাঘা গ্রামে। তার বাবা-মা কাজের সুবাদে ঢাকার কোনাবাড়ী এলাকায় থাকেন।
জানা যায়, ১০ বছর আগে সুরুজ উদ্দিন ও মুন্নির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। এ দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। সুরুজ মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকে সে বিভিন্ন সময় নেশার টাকা ও যৌতুকের দাবিতে মুন্নিকে নির্যাতন করতেন। গত শুক্রবার সকালে মুন্নি তাঁর মাকে ফোন করে নির্যাতনের বিষয়টি জানান। তাঁকে নিয়ে যেতে বলে। শনিবার সকালে শ্বশুর সহিদুল মাঝি ফোন করে জানান মুন্নি নিজের শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। খবর শুনে মুন্নির বাবা-মা ঢাকা থেকে রাজশাহী মেডিকেলে ছুটে আসেন। সন্ধ্যায় মুন্নি মারা যায়। মুন্নির মা মনোয়ারা বেগমের অভিযোগ, সুরুজ মাদকাসক্ত। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত। সুরুজ তাঁর মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা করে পালিয়েছে। এখন তাঁর পরিবারের লোকজন আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে। সুরুজের মা হাজেরা বেগমের দাবি, ভোরে চিৎকার শুনে দরজা খুলে বের হন। দেখেন মুন্নি কলপাড়ে পড়ে আছে। সুরুজ তার শরীরে পানি ঢালছিল। এ সময় সুরুজ জানায়, রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। অভিমান করে মুন্নি নিজের শরীরে ডিজেলে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। প্রতিবেশী
আজিজুল হক ও সান্টু জানান, বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে তারা ওই বাড়িতে যান। বাড়ির গেট বন্ধ ছিল। ধাক্কা দিলে বাড়ির লোকজন দরজা খুলে দিলে দেখেন আগুনে ঝলসানো মুন্নি পড়ে আছে। দ্রুত তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেলে স্থানান্তর করেন। মুন্নির বড় ভাই মিঠু জানান, সুরুজই তাঁর বোনকে হত্যা করেছে। ঘটনার পর ভয়ে পালিয়েছে। তিনি বাঘা থানায় জিডি করেছেন। পরে হত্যা মামলা করবেন।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফম আছাদুজ্জামান জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারি ওশিশু নির্যাতন আইনে মামলা রজু করা হযেছে। আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।#