
বিশেষ প্রতিনিধি:বেশি মুনাফার আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে আখ ও খেজুরের গুড়ে চিনি, হাইড্রোজ, সোডা, রং, ফিটকিরি ব্যবহার করে বাজারজাত করে আসছেন বলে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। গাইছি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন,‘খাঁটি গুড় তৈরি করে বিক্রির সময় তারা ন্যায্য দাম পান না। তাই গুড়ের উজ্জলতার জন্য চিনি, হাইড্রোজ, সোডা, রং, ফিটকিরি ব্যবহার করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব গুড় খেলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কিডনি অকেজো হওয়ায় ক্যান্সারের মতো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দাবি এসব কারখানায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সুত্র জানায়, বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বাঘা উপজেলার আড়ানি শাহাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল গুড় তৈরির কারখানার মালিককে জরিমানা করা হয়েছে। খেজুরের রস ব্যবহার না করে চিনি, রং, চুন এবং হাইড্রোজ মিশিয়ে গুড় তৈরি করছিল তারা। গোপন সংবাদ সুত্রে র্যাব ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, উপজেলার আড়ানি শাহাপুর এলাকায় ৫টি কারখানায় অভিযান চালানো হয়। ওইসব কারাখানায় খেজুরের রস ব্যবহার না করে চিনি, রঙ, চুন ও হাইড্রোজ মিশিয়ে গুড় তৈরি করতে দেখা যায়। সেখানে গুড়ের চেয়ে চিনির পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে, রসের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ কারণে কারখানার প্রত্যেক মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সচেতনতা বাড়ানো এবং ভেজাল নির্মূলে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযানের খবর পেয়ে আসাদুল নামের এক কারখানার মালিক পালিয়ে যান। পরে তার স্ত্রী লাকি খাতুন গুড় তৈরির পদ্ধতির কথা জানান। লাকি খাতুন বলেন, তারা গুড় বানাতে খেজুরের রস নয়, ‘চিনি গুড়’ ব্যবহার করেন। পরে এসব গুড় নাটোরের গোপালপুর ও লালপুরসহ বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করা হয়।
র্যাব-৫ রাজশাহীর উপ-অধিনায়ক মেজর মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল গুড় তৈরির তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল। ক্ষতিকর কেমিকেল মিশিয়ে এগুলোকে খেজুর ও আখের গুড় হিসেবে বাজারজাত করে মানুষকে ক্ষতির মুখে ফেলা হচ্ছিল। ভেজাল প্রতিরোধে র্যাব সক্রিয় ছিল এবং ভবিষ্যতেও অভিযান চলবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আশাদুজ্জামান বলেন, খেজুর গুড়ে চিনি, হাইড্রোজ, সোডা, রং, ফিটকিরির মতো ভেজাল মিশ্রণের কারণে কিডনি নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া খাদ্যনালিতে ক্যান্সার, লিভারে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।#