# মোঃ আব্দুল বাতেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদের ফিরোজপুর গ্রাম। শান্ত পরিবেশ, চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা গ্রামটির মাঝেই দাঁড়িয়ে আছে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন—সুফি সাধক শাহ নিয়ামতউল্লাহ (র.)-এর সমাধি। শত শত বছর ধরে এই সমাধি শুধু ইতিহাসের সাক্ষী নয়, ভক্তদের আধ্যাত্মিক আবেগ ও শ্রদ্ধার কেন্দ্রবিন্দু।
শাহ নিয়ামতউল্লাহ (র:)-এর প্রকৃত নাম ছিল সৈয়দ জামালুদ্দীন মুহম্মদ। ষোড়শ শতকের শেষ ভাগে জন্ম নেওয়া এ আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব পারস্য থেকে ভারতে আসেন। পরে বাংলার মাটিতেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভাই শাহ সুজা তাঁর আগমনের সংবাদ পেয়ে তাঁকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন এবং তাঁর কাছেই বায়াত গ্রহণ করেন।
স্থানীয় ইতিহাসবিদরা জানান, শাহ নিয়ামতউল্লাহ (র:) বিলাসবহুল জীবন ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ ও মানবিক আদর্শ প্রচারে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর সেই ত্যাগী জীবনদর্শন আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। ফিরোজপুরে অবস্থিত তাঁর সমাধিস্থল মুঘল যুগের প্রাথমিক স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত এ স্থানে প্রতিদিনই আসেন অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থী। কেউ নীরবে ফাতেহা পাঠ করেন, কেউবা শুধু দাঁড়িয়ে থেকে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি খোঁজেন।
স্থানীয় এক ভক্ত আব্দুল মান্নান বলেন, “আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি, শাহ নিয়ামতউল্লাহ (র.:) ছিলেন দয়ালু ও সমাজসেবক। তাঁর মাজারে এলে মনটা হালকা লাগে, এক ধরনের শান্তি খুঁজে পাই।” সোনামসজিদের আশপাশের ইতিহাসের সঙ্গে এ সমাধি যেন একাকার হয়ে গেছে। প্রত্নপ্রেমী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে এসে খুঁজে পান বাংলার সুফি সাধনার সেই গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য।#