যশোরের অভয়নগরে ৫ বিঘা জমির পান বরজ পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। পান বরজ পুড়িয়া দেয়ার অভিযোগের তীর জয়েন্ট ট্রেডিংয়ের দিকে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিভাগ্দী গ্রামে। ৯ ই মার্চ শনিবার আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এ প্রতিবেদককে জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,রাস্তা থেকে একটু ভিতরে পানের বরজে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় এবং মুহুর্তের মধ্যে প্রায় ৫ বিঘা জমির পান বরজের পান, লতা, চালার ছাউনি সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জানা যায়, বিভাগ্দী গ্রামের মৃত ইয়াসিন মৃধার ছেলে নজরুল ইসলাম ও মৃত ফজলুল হক মৃধার ছেলে খোকন নামের চাচা – ভাতিজা ৯ বছর মেয়াদে মৃত কালু শেখের ছেলে আবুল হোসেন ১ বিঘা, মৃত কওসার শেখের ছেলে ইমামুল শেখ ১২ কাঠা , সিরাজ দেওয়ানের ছেলে সরোয়ার দেওয়ান ১.৫ বিঘা এবং মৃত পরিমল বর্মনের ছেলে প্রদীপ বর্মন সহ ৪ জন প্রায় ৫ বিঘা জমি পান বরজ করতে লীজ নেয়। আবুল শেখের ২০ লাখ,ইমামুলের ১০ লাখ,সিরাজের ৩০ লাখ এবং প্রদীপের ১৫ লাখসহ প্রায় পৌনে ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষীরা জানান।
তারা আরো বলেন, আমরা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে পরিবার পরিজনদের আহারের জন্য লীজ নিয়ে পানের বরজ করেছিলাম।আজ আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম।তারা বার মুর্ছা যাচ্ছিল। লীজের মেয়াদ মাত্র ২/৩ বছর হয়েছে বলে জানা যায়।এর মধ্যে খোকন মৃধা তার জমির অংশ নওয়াপাড়া জয়েন্ট ট্রেডিং এর কাছে দালাল হাপিজ ও আরিফের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়।খোকন লীজ গ্রহিতাদের জমি বিক্রির বিষয়ে কিছুই জানায়নি এবং তাদের ক্ষতিপূরণ দিবে কিনা তাও বলেনি।তবে জমির ক্রেতা জয়েন্ট ট্রেডিং এর দালাল হাফিজ ও আরিফ লীজ গ্রহীতাদের জমি ছেড়ে দিতে বলে এবং না ছাড়লে জমিতে ভেকু বা স্কেভেটর ঢুকিয়ে বরজ ভেঙ্গে মাটি বা বালু তুলবে বলে হুমকি দেয়।
এমতবস্থায় জয়েন্ট ট্রেডিং এর কর্মকর্তাদের ইশারায় বিক্রেতা খোকন ও দালাল আরিফ ও হাফিজ এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে লীজ গ্রহিতাগণ ও স্থানীয় জনগণ এমন মন্তব্য করেন। ওই জমির পাশেই জয়েন্ট ট্রেডিং এর ভেকু দিয়ে ক্রয়কৃত অন্য জমিতে বালু তোলার কাজ চলমান রয়েছে।
এবিষয়ে বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তৈয়েবুর রহমান বলেন, অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে পান বরজে আগুন লাগানো হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপুরন দাবি করি। তিনি আরো বলেন, ওই জমি জয়েন্ট ট্রেডিং ক্রয় করেছে।জমি যৌথ মালিকানায় ও লীজ দেয়া থাকায় জমি বিক্রেতা জমির দখল বুঝে দিতে না পারায় যোগসাজশে জয়েন্ট ট্রেডিং এর ইঙ্গিতে দালালদের মাধ্যমে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে মনে হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ বুঝে না দেওয়া পর্যন্ত এখানে সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে স্থানীয় জনগণ হুঁশিয়ারি করেন। অভয়নগর থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন আমি প্রতিনিধি পাঠিয়েছি।অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।#