নাজিম হাসানঃ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহীর ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জানা গেছে, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা, কিন্তু সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়, ২৬০ টাকার বালতি কেনা হয়েছে ১ হাজার ৮৯০ টাকায়, ৬৫ টাকার বাঁশির জন্য দেওয়া হয়েছে ৪১৫ টাকা, আর ৯৮ টাকার ঝাড়ু কেনা হয়েছে ১ হাজার ৪৪০ টাকায়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কেনাকাটায় এমন ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগে ১৮ জনকে আসামি করে আজ বুধবার (১৫ অক্টোবর) মামলা করেছে দুদক।এর মধ্যে পশ্চিম রেলের সাবেক দুই মহাব্যবস্থাপকও (জিএম) রয়েছেন। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো: রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় রাজশাহীতে মামলা দায়ের করেন। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে কেনাকাটায় মোট দুই কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ১৯৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিরা হলেন,অবসরে যাওয়া সাবেক মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম ও মজিবুর রহমান; সাবেক সিওসি খায়রুল আলম ও বেলাল হোসেন সরকার; সাবেক এসিওএস জাহিদ কাওছার; তৎকালীন ডেপুটি সিসিএম ফুয়াদ হোসেন আনন্দ; তৎকালীন ডিএফএ শ্যামলী রাণী রায়; তৎকালীন উচ্চমান সহকারী আলামিন তালুকদার; সাবেক ডিএফএ (অর্থ) আলমগীর হোসেন; তৎকালীন সিওপিএস এএমএম শাহনেওয়াজ; তৎকালীন এফএ অ্যান্ড সিএও শরিফুল ইসলাম; তৎকালীন ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুন; সাবেক এফএ অ্যান্ড সিএও মসিহ উল হাসান; সাবেক এসিসিএম শেখ আব্দুল জব্বার; সাবেক অতিরিক্ত এফএ অ্যান্ড সিএও গোলাম রব্বানী; তৎকালীন অতিরিক্ত এফএ অ্যান্ড সিও গোলাম রহমান; সাবেক এফএ অ্যান্ড সিও সরোজ কান্তি দেব এবং সাবেক সিসিএম মিহির কান্তি গুহ।
দুদক জানিয়েছে, এই কর্মকর্তারা বিভিন্ন পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বাজারদরের চেয়ে ১৫ থেকে ৩৩ গুণ বেশি দাম পরিশোধ করেছেন। তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে দুদক জানায়, ২৯.১২.২০২৪ খ্রি.মূলে রেলপথ মত্রণালয়ে একটি অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল এর কন্ট্রোলার অব স্টোরস (সিওএস) এর দপ্তর হতে ২০১৮-২০১৯ সালে রেলওয়ের আধুনিকায়নের নামে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তালা, বালতি, বাঁশি ও ঝান্ডা ক্রয়ে অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়-এর নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটির দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়,তালা ক্রয়ে ইউনিট প্রতি ঠিকাদারকে পরিশোধ করা হয় ৫,৫৯০/- টাকা, কিন্তু বিভাগীয় তদন্তকালে প্রাপ্ত বাস্তবিক মূল্য পাওয়া যায় ১৭৩/-(ভ্যাট, আইটি ও মুনাফাসহ) টাকা।#