মোঃ ফিরোজ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ নওগাঁ জেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বলিহার ইউনিয়নে প্রাচীন বলিহার রাজবাড়ি অবস্থিত। সম্রাট আওরঙ্গজেব কর্তৃক জায়গির লাভ করে বলিহার জমিদার এই রাজবাড়ি তৈরী করেন। যা বর্তমানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে সুপরিচিত।
দোতালা জমিদার বাড়ির সামনে আছে বিশালাকারের তোরণ এবং ভেতরে আছে নাটমন্দির, রাজ রাজেশ্বরী মন্দির, জোড়া শিব মন্দির ও ২টি শিবলিঙ্গ। মন্দিরের দেয়ালে থাকা মূল্যবান রিলিফের কারুকার্য মন্দিরের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করেছে। ১৮২৩ সালে বলিহারের জমিদার রাজেন্দ্র লোকান্তরিত হবার পূর্বে বলিহার রাজবাড়ির দূর্গা মন্দিরে রাজ রাজেশ্বরী দেবীর অপরূপা পিতলের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এছাড়াও প্রাচীনকালে মন্দির ভবনে অবস্থিত প্রতিটি কক্ষকে এক একটি মন্দির বলে ধারণা করা হয়। বিভিন্ন সময়ে কয়েকজন জমিদার রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার বলিহারের জমিদারিত্বের দায়িত্বে ছিলেন। সর্বশেষ দেশ বিভাগের সময় বলিহারের জমিদার রাজা বিমেলেন্দু রায় ভারতে চলে গেলে রাজ পরিবারের অন্যান্য কর্মচারীরা বলিহার রাজবাড়ী দেখাশোনার দায়িত্ব নেন। একসময় বলিহার জমিদারীর অধীনে ৩৩০টি দীঘি/পুকুর থাকলেও বর্তমানে এর মাত্র কয়েকটি অবশিষ্ট রয়েছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজবাড়ীর বিভিন্ন নিদর্শন, আসবাপত্র সহ অনেক মূল্যবান সামগ্রী দুর্বৃত্তরা লুট করে নিয়ে যায়। কিছুদিন আগেও বলিহার রাজবাড়ির একটি ভবন স্থানীয় স্কুলের শ্রেণীকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে এটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। তবে রাজবাড়ীর ভিতরের দেবালয়ে নিয়মিত পূজা অর্চনা করা হয়ে থাকে।#