# মোঃ ফিরোজ আহমেদ, আত্রাই থেকে…………………
নওগাঁর আত্রাই-পোরাখালি রাস্তার খনজোর গ্রামের মাঝে দীর্ঘ ৫/৬ বছরের জমে থাকা রাস্তায় জলাবদ্ধতার নিরসন হয়েছে। পাকাকরণের পর থেকে এ রাস্তা দিয়ে আশে-পাশের ১৫/১৬ টি গ্রামের মানুষ উপজেলায় আসা-যাওয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা নলডাঙ্গার খাজুরা বাজার হয়ে নাটোর জেলা শহরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াত করে থাকেন।
জানা যায়, বর্তমান সরকার বছর ছয়েক আগে আত্রাই থেকে এর শেষ সীমানা নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণ করেন। সে সময় খনজোর গ্রামের মাঝে রাস্তা সংলগ্ন বাড়ীর পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করা হয়। ড্রেনের পানি ওই গ্রামে বসবাসরত মানুষের যাইগা দিয়ে নামানোর ব্যবস্থা করলে সেসময় কেউ আপত্তি তোলেন নি। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে তাদের মনোমালিন্য সৃষ্টি হলে পানি নিস্কাশনের দুই মাথা বন্ধ করে দেন। এতে বাড়ী ও রাস্তার মাটি পরে পুরো ড্রেন বন্ধ হয়ে যায়। আর বন্ধ ড্রেনের মাটি পরিস্কার না করায় পানি আবদ্ধ হয়ে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের খনজোর গ্রামে রাস্তা সংলগ্ন বসবাসরত বাড়ীর মালিকগন নিজ নিজ সীমানায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ড্রেনের মাটি পরিস্কার করছেন। বাড়ীতে যাতা-য়াতের সিঁড়ি ভেঙ্গে ড্রেনের মাটি উঠিয়ে ফেলায় সহজেই সেখানকার পানি নিস্কাশন হয়ে যাচ্ছে। একারনে রাস্তায় আর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে না।
ভুক্তভোগী আয়জ উদ্দিন জানান, আমাদের দীর্ঘ দিন অল্প বৃষ্টিতে বাড়ী থেকে বাহিরে যাওয়া আসা করতে পানি ভেঙ্গে দুর্বোগ পোহাতে হয়েছে। এসিল্যান্ড স্যার আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন। রাস্তার পানি নদী পর্যন্ত ড্রেন বৃদ্ধি করে সেখানে নামানোর অনুরোধ করেন।
গ্রাম প্রধান নুরুল ইসলাম ভান্ডারি জানান, রাস্তার জলাবদ্ধতা নিরসন কল্পে গ্রামবাসী গ্রামে ও থানায় বসে তাদের দীর্ঘ দিন ধরে চলাচলের কষ্ট নিবারন করতে পারেননি। প্রশাসন ও চেয়ারম্যান সমাধান করে দিয়েছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। সেইসাথে নদী পর্যন্ত ড্রেন বৃদ্ধি করে ড্রেনের পানি মানুষের যাইগা দিয়ে না নামিয়ে নদীতে নামানোর দাবি জানান তিনি।
ওয়ার্ড সদস্য মুকুল হোসেন জানান, এ এলাকার মানুষ আত্রাই এবং পার্শ্ববর্তী নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা বাজার হয়ে নাটোর জেলা সদরে অত্যন্ত কষ্টে চলাচল করতেন। মানুষের দীর্ঘ দিনের কষ্টের সমাধান হওয়ায় এসিল্যান্ড স্যার ও চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানাই। সেইসাথে ড্রেনের পানি নদীতে নামানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের অনুরোধ জানান।
পাঁচুপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খবিরুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত সমাধান করা হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম বলেন, পত্রিকার মাধ্যমে জানার পর পাঁচুপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মুখে শুনে কয়েক জনের নামে নোটিশ করতে বলি। দিন ধার্য করে চেয়ারম্যান ১২ জনের নামে নোটিশ দিলে চেয়ারম্যানসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। পরিদর্শনকালে পত্রিকা ও এলাকাবাসীর অভিযোগের সত্যতা পাই। এসময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ওই গ্রামের আবুল হোসেনকে ২ হাজার, আয়জ উদ্দিনকে ৫ হাজার ও আক্কাছ উদ্দিনকে ২ হাজার টাকা অর্থদন্ড করি।
সেইসাথে পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে রাস্তা থেকে ড্রেনের মুখ বন্ধ করে বাড়ীতে যাওয়া আসার সিঁড়ি ভেঙ্গে বন্ধ ড্রেন পরিস্কার করার নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশনা মেনে বাড়ী মালিকগন নিজ নিজ অংশে ড্রেনের মাটি উঠিয়ে বাড়ীতে আশা যাওয়ার সিঁড়ি ভেঙ্গে জলাবদ্ধতা নিস্কাশনে এগিয়ে আসেন।#