মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি : বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজশাহীর তানোরে প্রচন্ড রোদ ও খরতাপের মধ্যেই জমিতে রোপন করা বোরো ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। গত কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড রোদ ও খরতাপের কারণে এবছর একটু আগেই ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছেন কৃষকরা।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, প্রচন্ড রোদে এবছর একটু আগেই ধান পেকে গেছে। রোদ ও খরতাপ উপেক্ষা করেই ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা। কাল বৈশাখীর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা চিন্তা করে পাকা ধান জমিতে রাখতে চাননা কৃষকরা।
সরেজমিনে তানোর উপজেলার শিবরামপুর, সাইধারা, জুকারপাড়া, মাড়িয়া, জুমারপাড়া, চোর খোর, হাসনাপাড়া মুন্ডুমালা সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আগাম রোপন করা এই সব এলাকার জমির ৯০ ভাগ ধানই পেকে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে ওই সব এলাকার জমির ধান কাটা ও মাড়াই করা শুরু করেছেন কৃষকরা।
উপজেলার কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবছর ১২ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এরমধ্যে ১২ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষা করা হয়েছে। এসব জমিতে প্রতি বিঘায় কেজির ওজনে ২১ মণ ধানের উৎপাদন ধরা হয়। সেই হিসেব মতে উৎপাদন ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন ধান। অন্যবারের চেয়ে এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হচ্ছে। তবে এবার শ্রমিকের তেমন সংকট নেই। আরও ১৫ দিন এরকম আবহাওয়া অনুকলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
শিবরামপুর গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, পুরো উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে বোরো ধানে পাক ধরেছে। আবার কেউ কেউ ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছে। এবারে বোরো ধানের ফলন ভাল হচ্ছে। আগামী দুই সপ্তাহ মেঘ-বৃষ্টি না হলেই আমরা বেশি খুশি। তাহলে আমরা জমির ধান কেটে ভাল ভাবে ঘরে তুলতে পারব। কৃষক মিঠু বলেন, আমাদের প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। এরমধ্যে চার বিঘা জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। এরমধ্যে ২ বিঘা জমির ধান মাড়াই করে ৪২ মণ পাওয়া গেছে। উৎপাদন খরচের চাইতে সামান্য কিছু লাভ হয়েছে। এঅবস্থায় আর মাত্র দুই সপ্তাহ আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার আশা করেন তিনি।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, উপজেলার সব জায়গায় পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে, এবারে ধান কাটা শ্রমিকের সংকট নেই। বৈরি আবহাওয়া থাকলেও কৃষক-শ্রমিকের কাছে প্রভাব নেই। এজন্য এবছরও ফলন বেশি হওয়ার আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, কৃষকরা যাতে ভালোভাবে তাদের ধান ঘরে তুলতে পারে, সেজন্য আমাদের অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। আর এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।#