মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি: দেশে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে রাজশাহীর তানোরে আমনের পাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। ঘরে তোলার সময় ধানগাছ নুয়ে পড়ায় কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে অনেক আমণ খেতের পাকা ও আধা পাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খেত থেকে পানি সরে না গেলে যেসব ধান কেটে রাখা আছে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও শীতকালীন আগাম শাক-সবজির খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ঝড়ো-বৃষ্টির পর অনেক এলাকায় আমণখেতে পচন ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টি-ঝড়ো হাওয়ায় কি পরিমাণ আমণখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই তথ্য কৃষি বিভাগ দিতে পারেনি। মাঠ পর্যায়ে কৃষকেরা কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা পাচ্ছে না।ফলে অনুমান নির্ভর কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষকেরা আরো বেশী ক্ষতির মুখে পড়ছে। আবার কৃষি কর্মকর্তা অফিস সময় মানছেন না,স্টেশনে থাকা বাধ্যতামুলক হলেও। তিনি নীতিমালা লঙ্ঘন করে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে রাজশাহী শহর থেকে যাতায়াত করেন। নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তাকে বদলি করা হলেও তিনি বার বার বদলি ঠেকিয়ে দিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ৫ বিঘা জমির পাকা ধান কেটে রেখেছিলাম শুকানোর জন্য। দুই দিন ঝড় হাওয়া ও বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা পাওয়া ভাগ্যর বিষয়।
অন্যদিকে কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, “গত বছর ধানের ভালো দাম পাননি। এ নিয়ে হতাশায় ছিলেন। আগামী সপ্তাহ থেকে তার ১০ বিঘা জমির ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে বেশিরভাগ ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।”
কৃষক আয়ুব আলী ও আব্দুল আলী বলেন, “বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে ইতিমধ্যে চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। এক একর জমিতে আগে প্রায় ৫০ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে ৩০ মণ আসতে পারে। এছাড়াও শিব নদীর পাড় ও নিচু এলাকায় আমণখেতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বাঁধাইড় ইউপির শিবরামপুর গ্ৰামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন আমাদের এলাকার ধান গাছ ঝড়ের কারণে মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। এতে করে ধান ফলনে কম হবে। এমনি তে এবার জমি চাষ করতে খরচ বেশি হয়েছে। তবে দাম ভালো পেলে কিছুটা পুষিয়ে উঠা যাবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৬৩৫ হেক্টর। এর মধ্য হাইব্রিড ২৮ হেক্টর, উফশী জাত ২২ হাজার ১১৭ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের চাষ হয়েছে ৫৫০ হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ২৯৮ মেট্রিক টন। উপজেলার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত স্বশিক্ষিত কৃষি বিজ্ঞানী নুর মোহাম্মাদ জানান, রোপা-আমণ রোপণের শুরুর দিকে কৃষকদের প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে। বৃষ্টির পানি সময় মত পায়নি। সার নিয়ে ছিল অসহীয় সিন্ডিকেট। আর শেষ মুহুর্তে বৃষ্টি-ঝড়ো হাওয়ায় নুয়ে পড়া আমণের উৎপাদন কিছু হ্রাস পাবে। উ
পজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি কল গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।#