# খান আরিফুজ্জামান(নয়ন),ডুমুরিয়া(খুলনা) : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ উদয়ন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে ( ১৪ নভেম্বর ২৪ ইং) বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বিদ্যালয়ের মাঠ চত্বরে বিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী করণিক অখিল কুমার মন্ডলের অবসর জনিত বিদায়ী সংবর্ধনা ও প্রয়াত প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি গোলদারের স্মরণে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়া খাতুন পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত ও রুহি রায় এর গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান কার্যক্রম শুরু হয়। বিদায়ী সংবর্ধনা ও প্রয়াত শিক্ষকের স্মরণসভা অনুষ্ঠানটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্মৃতি রানী মন্ডল’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুোৎসাহী সদস্য ও শোভনা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গাজী মফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও ভূমিদাতা সুশীল কুমার মন্ডল,পঙ্কজ কুমার রায়,প্রশান্ত কুমার মন্ডল, ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য নিখিল চন্দ্র মন্ডল।
অন্যান্যের মধ্যে আরোও উপস্থিত ছিলেন,ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সদস্য আশরাফ আলী গাজী,আশিস কুমার মন্ডল,অজিত কুমার মন্ডল,কনিকা মন্ডল,হিমাদ্রী রায়,সাবেক সদস্য স্বপ্না মন্ডল,বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিনয় চন্দ্র অধিকারী, সুশান্ত কুমার মন্ডল,মোঃ আব্দুল জলিল প্রমুখ। উদয়ন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের করণিক অখিল কুমার মন্ডল দীর্ঘ বছর যুক্ত ছিলেন বিদ্যালয়ের সঙ্গে। প্রীতি আর ভালোবাসায় সবার সঙ্গে গড়ে ওঠে তার নিবিড় এক সম্পর্ক। আর তাইতো বিদায়ের দিনে হাজির হন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা পেশার মানুষ। গুণী এই মানুষটির বিদায়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঞ্চ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা স্মারক। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন সহকর্মীসহ ও শিক্ষার্থীরা। চোখে জল নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে অবসরে যান তিনি।শিক্ষার্থীরা বিদায়ী তাদের প্রিয় অখিল কুমার মন্ডলের উদ্দেশ্য আবেগঘন বক্তব্য, মানপত্র প্রদান,কবিতা ও ক্রেস্ট প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে রুবাইয়া খাতুন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, অখিল কুমার স্যার অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। ওনার কাছ থেকেই জীবনের ব্রতগুলো শেখা। সব সময় সন্তানের মতো স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছেন আমাদের। সুস্মিতা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, অখিল কুমার স্যারকে আর স্কুলে পাব না ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। সব কিছু খুব মিস করব। এমন মানুষ আমাদের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।বিদায়ী মানুষটির কর্মজীবন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কাঁদেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন তিনি কখনও আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেননি। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ হাহাকার করবে ওনাকে ছাড়া। অখিল কুমার তার বিদায়ী ভাষণে বলেন, আমি দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ছিলাম। এ সময় শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছি, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে। ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সবাই আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, তাতে আমি গর্বিত ও আনন্দিত। এই ভালোবাসাকে পুঁজি করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারব। আমি চাই আমার শিক্ষার্থীরা যেনো ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করতে পারে। সমাজের জন্য, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে। এ ব্যাপারে তারা যেন সর্বদা সজাগ থাকে। এতেই আমি শান্তি পাব।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী শিক্ষক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। পরিশেষে প্রয়াত প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি গোলদার এর প্রতি স্মৃতিচারণ শ্রদ্ধা নিবেদন ও অখিল কুমার মন্ডলের বিদায়ী অনুষ্ঠানে তাদের উভয়ের জন্য আর্শীরবাদ চেয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্তি হয়।#