1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসে হামলা: ৩ পুলিশ বরখাস্ত, আটক ৭ বীরভূমের হিন্দু যুবকের সৎকারের ভার কাঁধে তুলে নিলেন গ্রামের মুসলমান ভাইয়েরা! নানুরে সম্প্রীতির নজির বাংলাদেশিদের ভারতে  অনুপ্রবেশ বাড়ছে,  সীমান্তে  চলছে ধরপাকড়: বিএসএফ ঠাকুরগাঁও পাক হানাদারমুক্ত দিবস আজ ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ী আটক তানোরে মামলাবাজ হিটলুর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর একমাত্র রাস্তা বন্ধের অভিযোগ ঠাকুরগাঁও ডিসি অফিস যেন ‘সরষের ভেতরেই ভূত’ বটিয়াঘাটায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি মূলক সভা আড়ানী পৌরসভার রুস্তমপুর হাট ও বাজার পুনঃ ইজারা প্রদান রূপসায় জমে উঠেছে নৈহাটী বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন

এতিমদের জন্য নিবেদিত প্রাণ রাজশাহীর বাঘার শামসুদ্দিন ও তার পরিবার

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২
  • ২৫৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

লিয়াকত হোসেন …………………………………

মানুষ মানুষের জন্যে। এই ধ্রুব সত্য কথার সাথে কাজের মিল রয়েছে বলে আজও মানুষ একে অপরকে ভালবাসে, শ্রদ্ধা ও সম্মান এবং পাশে দাঁড়ায়। বিশেষ করে এতিম সন্তানরা অত্যন্ত অসহায়। তাদের বাবা ও মা এবং কোন অভিভাবক না থাকায় মারাত্মকভাবে অসহায় হয়ে যায়। এছাড়াও অনেক পরিবারে বাবা ইন্তেকাল করলে অনেক মা অসহায় হয়ে পড়ে নিজ সন্তানকে লেখাপড়া ও ভোরন পোষনের জন্য এতিম খানায় দিয়ে দেয়। আবারও অনেক সন্তান ভবঘুরে হয়ে রাস্তায় নামে। এই ধরনের সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী।

তাঁরা অত্র উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষা সরের হাট গ্রামে ১৯৮৪ সালের ১ জানুয়ারিতে দু’জনে মিলে ১২ শতাংশ জমি ক্রয় করে একটি এতিমখানা তৈরী করেন। এখানে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী তাঁর মোহরানার টাকা দিয়ে দেন। এতিম-অনাথ-ছিন্নমূল শিশু ও বৃদ্ধাদের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেয়া, আর শিক্ষা নিশ্চিত করতে তিনি প্রায় ৪ দশক ধরে ক্লান্তিহীনভাবে সংগ্রাম করে চলেছেন। আর এই ধরনের সেবা করতে যেয়ে নিজের ১৮ বিঘা জমি বিক্রি করে এখন তিনি নিঃস্ব। অবশেষে তাদের শেষ ঠিকানা হয়েছে সেই এতিমখানায়।

বর্তমানে সরের হাট কল্যাণী শিশু সদনে ১৮৫ জন এতিমদের নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিবারসহ সবাই একসাথে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। তবুও তিনি দমে যাননি, বরং এলাকার ৫০ জন বৃদ্ধকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন বৃদ্ধাশ্রম। শত সন্তানের বাবা শামসুদ্দিন জানান, ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরুর ১০ বছর পর ‘সরেরহাট কল্যাণী শিশু সদন’ নামে প্রতিষ্ঠিত এতিমখানার রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যায়। শামসুদ্দিন বলেন, ২০০৭ সালে সাদামনের মানুষ হিসেবে পুরস্কার দেওয়া হয় তাঁকে।

 এরপর থেকে সামান্য কিছু আর্থিক অনুদান আসতে থাকে। কিন্তু তা এখনও পর্যাপ্ত নয়। ২৪টি ঘরে এখন ১৫১ জন শিশু এবং ৪৮ জন বৃদ্ধ গাদাগাদি করে বসবাস করেন। তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ৭টি বাথরুম। তিনবেলা ভালো খাবার জুটানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ সময়ই ডাল-সবজি-ভাত খেতে হয়। মাছ-মাংস জোটে মাঝে মধ্যে। এদিকে স্ত্রী মেহেরুন্নেসা বলেন, ২০১৩ সালে ইউনিলিভারের আয়োজনে জয়িতা বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন তিনি। এ দেশের সাথে থাকতে থাকতে কোথাও যেয়ে থাকতে এখন তাঁর খুব কষ্ট হয়। তাঁদের অবস্থা খারাপ হলেও এই শিশুদের কোথাও যেয়ে ভালো লাগে না।

তিনি বলেন, বেহেস্তে গিয়ে থাকতে বললেও তিনি এই সন্তানদের ছেড়ে যাবে না বলে রসিকতা করেন। তিনি বলেন, শিশুরা বড় হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনো কাজ শিখতে পারছে না। যদি এতিমখানার পাশে একটি কারখানা হতো কিংবা শিশুদের হাতে কলমে কারিগরি কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেত, তবে শিশুরা এখান থেকে বের হয়েই কাজে যোগ দিতে পারত। তাদের বেকার থাকতে হতো না। এই শিশুদের কর্মমূখী করতে কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার অনুরোধ করেন তিনি।

শামসুদ্দিন আরো বলেন, ঢাকার বারিধারার বাসিন্দা ফখরুল কবীর রিপনের সহায়তায় তিনি একটি বৃদ্ধা আশ্রম গড়ে তুলেছেন। রিপন প্রথম অবস্থায় শিশুদের জন্য ৫০ হাজার এবং বৃদ্ধা আশ্রমের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দিতে থাকেন। সেইসাথে বৃদ্ধা আশ্রমে পুরুষদের জন্য তিনটি এবং নারীদের জন্য তিনটি ঘরও করে দেন রিপন। ঐ টাকাতেই চলছে বৃদ্ধা আশ্রম। শামসুদ্দিন জানান, এখন প্রতি মাসে খরচ হয় প্রায় চার লাখ টাকা। এর মধ্যে রিপন দেন এক লাখ টাকা, প্রতিমাসে সরকারিভাবে অনুদান পান দুই লক্ষ টাকা।

এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম প্রতি কোরবানীর ঈদে একটি করে গরু ক্রয় করে দেন। সেইসাথে রোজার ঈদে শাড়ী, লুঙ্গি, লাচ্চা সেমাই ও টিআর ও জিআর এর মধ্যেমে অনেক সহায়তা প্রদানে করেন বলে জানান তিনি।

তার পরেও এই টাকায় দুইটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্ট হয়ে পড়েছে। সর্বদা আর্থিক সংকট লেগেই থাকে। সারা বছরই দোকানে বাকি খেতে হয়। এখণ আবার প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য অধিক হারে বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় শিশু এবং বৃদ্ধদের যতটুকু খাবার, জামা-কাপড় এবং শিক্ষা সামগ্রী দেওয়ার প্রয়োজন তা তিনি দিতে পারছেন না। এরপরও তিনি থেমে থাকার মানুষ নয়। কারণ তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। পরাজয় মানতে শেখেননি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জয়ী হতে চান আগামী দিনের সব সংকটে। এই প্রতিষ্ঠান দুইটি পরিচালনায় সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট