মো নুরুজ্জামান নুর, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি: পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহাসিক বার আউলিয়া মাজারে একদিনের বার্ষিক উরস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হওয়া এই আয়োজন শেষ হয় পরদিন সকালে।
উরস উপলক্ষে মাজার প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় ভক্তদের ঢল নামে। জেলা ও আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ভক্তরা চাল, মুরগি, ছাগল, কবুতর ও নগদ মানতের সামগ্রী নিয়ে মাজারে উপস্থিত হন। উরস উপলক্ষে মাজার চত্বরে একটি মেলাও বসে। স্থানীয় প্রবীণদের মতে, কয়েক শত বছর আগে বার জন ওলি ও সুফি সাধক ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করতে করতে মির্জাপুর এলাকায় এসে থিতু হন। তাদের মৃত্যুর পর এখানেই তাদের সমাধি গড়ে ওঠে, যা পরবর্তীতে ‘বার আউলিয়া মাজার’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
এই বার জন আউলিয়ার নাম হলেন: হেমায়েত আলী শাহ্ (রহ.), নিয়ামত উল্লাহ শাহ্ (রহ.), কেরামত শাহ্ (রহ.), আজহার আলী শাহ্ (রহ.), হাকিম আলী শাহ্ (রহ.), মনসুর আলী শাহ্ (রহ.), মমিনুল শাহ্ (রহ.), শেখ গরীবুল্লাহ্ (রহ.), আমজাদ আলী মোল্লা (রহ.), ফরিজ উদ্দীন আখতার (রহ.), শাহ্ মোক্তার আলী (রহ.) ও শাহ্ অলিউল্লাহ্ (রহ.)।
মেলা প্রাঙ্গনে এসে দেখা যায় হিন্দু-মুসলিম সকল ধর্মের মানুষ একই ভাবে একই নিয়মে সিজদাহ্ করছে,কেউ বা মাথায় হাত ঠেকিয়ে উলু উলু ধ্বনি দিচ্ছে।এই বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে তর্ক বিতর্ক। ভক্তদের অনেকের মাঝে ও রয়েছে মত দ্বি-মত। ভক্তদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাঁদের মানতের ফলেই তারা নানা বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের কবিতা রানী জানান, ছয় বছরের অসুস্থ সন্তানের সুস্থতার জন্য মানত করেছিলাম এখন সন্তান সুস্থ হওয়ার পর মানতের ছাগল নিয়ে এসেছেন। বোদা উপজেলার মনিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জানান, সন্তান লাভের মানত পূর্ণ করতে এসেছেন।
আটোয়ারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, মাজার চত্বরে পর্যাপ্ত পুলিশ টহল ও নজরদারি রয়েছে, যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে, কেউ বিশৃঙ্খলা করলে বা মাদকসহ ধরা পড়লে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#