
মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে দুই বছরের শিশু সাজিদকে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় জানিয়েছেন এলাকাবাসী। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় কোয়েলহাট মধ্যপাড়া এলাকায় তার বাবার বাড়ির পাশের মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নেককিড়ি কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ভোর থেকেই গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। মসজিদের মাইক থেকে বারবার ভেসে আসে হৃদয়বিদারক ঘোষণা কোয়েলহাট পূর্বপাড়ার রাকিব উদ্দীনের দুই বছরের শিশু সাজিদ আর নেই। এই ঘোষণার পর থেকেই থমকে যায় গ্রামের স্বাভাবিক জীবন। কেউ মাঠে কাজ করতে যাননি, অনেক দোকানও খোলেনি। পুরুষ, নারী, বৃদ্ধ, যুবক এমনকি স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ছুটে যান সাজিদের বাড়ির দিকে শেষবারের মতো নিষ্পাপ সেই মুখটি একনজর দেখার আশায়। সকালেই জানাজার মাঠে মানুষের ঢল নামে। গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে আশপাশের এলাকার লোকজন সকলের চোখেই ছিল অশ্রু। সাদা কাপড়ে মোড়ানো ছোট্ট দেহটি যখন মাঠে আনা হলো, তখন চারপাশে কান্নার রোল পড়ে যায়। শোকস্তব্ধ মা ছুটে যেতে চাইলে স্বজনরা তাকে ধরে রাখেন; কিন্তু কারোরই পক্ষে থামানো সম্ভব হয়নি সেই বুকফাটা কান্না। জানাজার ইমামতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। জানাজা শেষে হাজারো মানুষ হাত তুলে দোয়া করেন সাজিদের মাগফিরাতের জন্য এবং শোকাহত পরিবারকে ধৈর্য ধারণের তৌফিক কামনা করেন।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য মানুষ জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে ছোট্ট কফিনটি যখন কবরের দিকে নেওয়া হয়, তখন পুরো পরিবেশ নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে শুধু শোনা যাচ্ছিল স্বজনদের কান্নার শব্দ। গ্রামবাসীর অনেকেই বলছিলেন, এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য তারা কখনো দেখেননি। গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া এলাকায় গভীর নলকূপের জন্য খোঁড়া গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয় সাজিদ। দীর্ঘ ৩২ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্রায় ৪০ ফুট মাটি খুঁড়ে তাকে উদ্ধার করেন। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক সাজিদকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশু সাজিদের মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।#