# মেহেরুল ইসলাম মোহন, লালপুর………………………………….
সনাতন পঞ্জিকা অনুযায়ী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ দূর্গোৎসব আগামী ১লা অক্টোবর-২০২২ ষষ্ঠীর দিনে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ২ অক্টোবর সপ্তমী,৩ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, ৪ অক্টোবর নবমী, ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী।
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা বানাতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন লালপুরের প্রতিমা শিল্পীরা। বৃহস্পতিবার(২২শে সেপ্টেম্বর-২০২২)নাটোরের লালপুর উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা শিল্পীদের ব্যাস্ততার চিত্র। প্রতিমা শিল্পীরা অতিযত্নে দূর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, লক্ষ্মী, গণেশ, অসুর ও শিবের মূর্তি তৈরি করছেন। এক সপ্তাহ আগে থেকে মণ্ডপে মূর্তি নির্মাণের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। শিল্পীদের নিপুণ আঁচড়ে প্রতিমাগুলো প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে।
উপজেলার জোতদৈবকী গ্রামের প্রতিমাশিল্পী শ্রী সুকুমার চন্দ্র হালদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,মা দুর্গার আগমনে কাজের চাপ বেড়েছে,অতিদ্রুত ঘনিয়ে আসছে সময়,তাই চাপও বেশী দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা কালের পরে এবার বেশি প্রতিমা তৈরি হওয়ায় প্রতিমা বানাতে সকাল থেকে রাত পার হয়ে যাচ্ছে।অল্প সময়ে বেশী কাজ সামাল দিতে একটু হিমশীম খাচ্ছি বলা চলে।এ বছর দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিমা তৈরি দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিমার আকার ভেদে ২০ হাজার থেকে থেকে ৪০ হাজার টাক পর্যন্ত তৈরির দাম নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিমা নির্মাণকারী সঞ্জিত কুমার হালদার বলেন, একটি বড় মূর্তি তৈরি করতে সময় লাগে সাত থেকে ১০ দিন। অন্যদিকে এক একটি ছোট মূর্তি চার থেকে ছয় দিনে সম্পন্ন করা যায়। বর্তমানে মূর্তি তৈরীর প্রাথমিক কাজ চলছে। রঙের কাজ শেষ করে নির্দিষ্ট সময়ে পূজা মণ্ডপের প্রতিমা বসানো হবে। বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামের প্রতিমা নির্মাতা অসিত বিশ্বাস বলেন, প্রতিমা তৈরিতে এঁটেল ও বেলে মাটি ছাড়াও বাঁশ-খড়, ধানের কুঁড়া, দড়ি, লোহা, পাট, কাঠ, রঙ, বিভিন্ন রঙের সিট ও শাড়ি-কাপড়ের প্রয়োজন হয়।
সারা বছর অপেক্ষার পর এ সময় ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বিভিন্ন ব্যায় বাড়লেও সে হারে প্রতিমা তৈরীর মজুরি বাড়েনি। লালপুর উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বিমলেন্দু বলেন, এবছর লালপুর উপজেলায় সর্বমোট ৪২টি মন্দিরে দূর্গা পূজা উদযাপিত হবে। পূজা পরিচালনা কমিটি ছাড়াও প্রশাসনের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে থেকে নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা(ইউএনও) বলেন,সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। সুষ্ঠুভাবে এ উৎসব উদযাপনের জন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকবে। লালপুর থানার ওসি মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে থেকে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্তক দৃষ্টিসহ নিরাপত্তার কাজে সচেষ্ট থাকবে।#