
বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় জোরপূর্বক দখলে নেওয়া বাড়ি ছেড়ে দিলো দখলদাররা। মামলা দায়েরর পর সেই বাড়িতে উঠেছে প্রকৃত মালিক। সোমবার(২২-১২-২০২৫) পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দখলদাররা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। তার আগে মামলায় অভিযুক্ত নেহেরা ও রেহেনা নামে দুই নারিকে আটক করে পুলিশ। মামলাটি দায়ের করেছেন মহদীপুর (মন্ডলপাড়া) গ্রামের মৃত শামসুল হকের স্ত্রী শাহাজাদী বেগম ।
মামলা সুত্রে জানা যায়, উপজেলার মহদীপুর মৌজায় শাহাজাদী বেগম এর স্বামীর পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত সম্পত্তি আছে। যার এসএস খতিয়ান ও দাগ নং মোতাবেক জমির পরিমান ৪৬ শতক। স্বাধীনতার পূর্ব হতে পরিবার পরিজন নিয়ে ৪ রুম বিশিষ্ট পাকা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। চাকুরি ও চিকিৎসার সুবাদে বসত বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে বিবাদীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ও উদ্দেশ্যে সাধনে বেআইনীভাবে তাদের হাতে থাকা লোহার রড, বাঁশের লাঠি ইত্যাদি নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর (১৬/১২/২০২৫ ) বিকেল অনুমান ৩টায় বাড়ির তালা ভেঙে দখলে নেয়। মামলায় অভিযুক্ত ১নং বিবাদীর মিনা বেগম (৪২) (পিতা-মৃত জহির)এর হুকুমে অন্যান্য বিবাদিরা বসত বাড়ীর তালা ভেঙো বসত বাড়ীতে অনাধিকার প্রবেশ করে এবং প্রতিটা রুমের তালা ভেঙে ঘরের মধ্যে থাকা বিভিন্ন জিসিনপত্র ভাংচুর করে ক্ষতি সাধন করে এবং বসত ঘরে থাকা ১ ২ লাখ ৩০ হাজার-টাকা, মূল্যর আড়াই ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণের গহনা, নগদ ১৬ হাজার টাকা, ২১ হাজার টাকা মুল্যর ১৫ মন ধান, ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা চাউল, (মূল্য ৩,০০০/-টাকা), ৬০ হাজার টাকা মূল্যর ১টি সোফার সেট , ৬ হাজার টাকা মূল্যের ১২টি চেয়ার, ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ১টি পানির মটর, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের নানা আসবাবপত্র সহ সর্ব মোট ৪ লাখ ৬৫হাজার টাকার মালামাল অসৎ উদ্দেশ্যে চুরি করে নেয়।

এঘটনায়, মিনা বেগম(৪২), মেমজান বেওয়া (৪৫) স্বামী-মৃত ইমান আলী, নেহেরা বেগম (৩৬) পিতা-মোঃ বাহর উদ্দিন, রেহেনা বেগম (৩৬) স্বামী-মোঃ সফি, শারভানু বেওয়া (৫০) স্বামী-মৃত আব্দুল কুদ্দুস, মোঃ সফি (৪৫) পিতা-মোঃ ইদ্রিস আলী, সর্ব সাং-হরিরামপুর, মোঃ আলম (৫০) পিতা- সাত্তার, ৮। মোঃ পলাশ (২০) পিতা-মোঃ আলম, উভয় সাং-মহদীপুর, সর্ব থানা-বাঘা, জেলা-রাজশাহী, শাপলা খাতুন (২৮) স্বামী-মোঃ ইমরান আলী, চুমকি খাতুন (২৫) পিতা-মোঃ কাম মোঃ ইমরান আলী (৪২) পিতা-মোঃ আঃ রাজ্জাক আলী সরকার, সর্ব সাং-কাজলা মতিহার, থানা-মতিহার, জেলা-রাজশাহীগণ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ০৭/০৮ জনের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় মামলা দায়ের করেন।
শাহাজাদী বেগম জানান, আমার ছেলে মেয়েরা চাকুরী করার সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় থাকে। সেই কারণে আমি একা সেই বাড়ীতে বসবাস করে আসছি। আমি অসুস্থ হওয়ায় বাড়ী তালা বন্ধ রেখে গত ১২ ডিসেম্বর শহরে মেয়ের কাছে গিয়ে চিকিৎসাধীন থাকি। বিবাদিরা সেই সুযোগে বসত বাড়ি তালা ভেঙে বাড়িটি দখলে নেয়। শাহাজাদী বেগম জানান,প্রতিবেশী লোকজন আমাকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে আমি সহ আমার মেয়ে মোছাঃ জেরিন (৩৮) কে সঙ্গে নিয়ে ইং-১৬/১২/২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ৬টায় আমার বসত বাড়ীতে গিয়ে ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে বিবাদীরা সহ অজ্ঞাত বিবাদীরা আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করলে বিবাদীরা প্রকাশ্য খুন জখম সহ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। জীবন বাঁচাতে আমি ও আমার মেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। ঘটনার সাক্ষী মোছাঃ হাসিনা বেগম (৪৫) স্বামী মোঃ সজিবার, মোসাঃ রাহেলা বেগম (৪৬)মোঃ লালটু, মোছাঃ বিথি বেগম (৩২) স্বামী-মোঃ সাদিকুল ইসলাম, সর্ব সাং-মহদীপুর (মন্ডলপাড়া) গণ সহ আরো অনেক লোকজন জানে ও শুনে। পরে আইনের আশ্রয় নিয়ে থানায় এজাহার দায়ের করি।
তারা জানান, স্বাধীনতার পূর্ব হতে শামসুল হক ও তার পরিবার পরিজন নিয়ে ৪ রুম বিশিষ্ট পাকা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। মামলার তদন্তকারি অফিসার উপ পরিদর্শক(এসআই) নুর মোহাম্মদ জানান, মামলায় অভিযুক্ত দুই নারিকে আটক করা হয়েছে। পরে প্রকৃত মালিকরা তাদের বাড়িতে উঠেছেন।#