শাহরিন সুলতানা সুমা: গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল—যেখানে চিকিৎসা পাওয়ার আশায় প্রতিদিন ভিড় করেন শত শত মানুষ। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। অনিয়ম, ঘুষ, হয়রানি আর সিন্ডিকেটের দখলে জর্জরিত এই হাসপাতাল আজ সাধারণ মানুষের ভরসা হারাচ্ছে। নতুন ভবন নির্মাণের পরও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নেই, যা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ফলে গাইবান্ধা জেলার অসংখ্য মানুষ সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
হাসপাতালের খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের, অথচ কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে না। চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে ওষুধ সরবরাহ সবখানেই চলছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের দাপট। এর সাথে যুক্ত কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি ও তথাকথিত সাংবাদিকরাও নিজেদের লাভের আশায় নীরব সমর্থক। এখন সময় এসেছে পরিবর্তনের। প্রশাসন, সুশীল সমাজ, এবং প্রকৃত সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান— দয়া করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালকে দুর্নীতি, অনিয়ম ও মাদকের ছায়া থেকে মুক্ত করুন। সঠিক চিকিৎসা, স্বচ্ছতা, ও মানবিক আচরণ নিশ্চিত করুন। মানুষ যেন সরকারি সেবাকে ভরসা করতে পারে এটাই হোক আমাদের একান্ত লক্ষ্য।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ইমার্জেন্সি সেবায় বকশিশের অভিযোগ, রোগীদের ভোগান্তি চরমে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ইমার্জেন্সি বিভাগে বকশিশ না দিলে সেবা পাওয়া কঠিন, এমন অভিযোগ উঠেছে রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে। স্থানীয়দের দাবি, কিছু কর্মচারী বকশিশের বিনিময়ে দ্রুত সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। ফলে জরুরি সেবার উপর নির্ভরশীল রোগীরা পড়ছেন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে।
রোগী ও স্বজনরা জানান, ইমার্জেন্সিতে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে কিংবা প্রয়োজনীয় ওষুধ পেতে নাকি “অভিহিত বকশিশ” দিতে হয়। কেউ কেউ আবার অভিযোগ করেন, বকশিশ না দিলে বিলম্ব হয় চিকিৎসায়, যা অনেক সময় রোগীর অবস্থাকে জটিল করে তোলে। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা জানান, সরকারি হাসপাতালের জরুরি সেবায় বকশিশ সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য নয়। দ্রুত তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। হাসপাতাল সূত্র থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।#