মোঃ আব্দুল বাতেনঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর শিবগঞ্জ,কানসাট বাজারে হাত বাড়ালেই মোবাইল। তবে সেগুলো বৈধ নয়। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছিনতাই হওয়া বা চুরি হওয়া ফোন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে প্রতিনিয়ত। আর শিবগঞ্জ কানসাট হয়ে এই মোবাইল চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রকাশ্য বাজারে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে অবাধে চলছে এ বাণিজ্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই দেশের ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট। বছরে কোটি টাকার বাণিজ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বছরে সীমান্ত দিয়ে কয়েক কোটি টাকার ভারতীয় মোবাইল বাংলাদেশে ঢোকে। এগুলোর দাম বাজার মূল্যের অর্ধেক বা তারও কমে বিক্রি হয়। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতারা জানেন এগুলো চোরাই ফোন, কিন্তু সস্তার লোভে কিনে নিচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহানন্দা ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কঠোর অবস্থানের কারণে গত তিন বছরে সীমান্ত এলাকা থেকে ৩,৩২৪টি ভারতীয় চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। বিজিবির দাবি, নিয়মিত টহল ও অভিযানের কারণেই এ সংখ্যা বাড়তি। তবে এখনও সীমান্তের ভাঙা অংশ ও পাহারাদারদের ফাঁকি দিয়ে মোবাইল পাচার অব্যাহত রয়েছে। প্রধান রুট সীমান্তের ওপারে প্রধান রুট কালিয়াচক, সুজাপুর জালালপুর, হুদমা, মহাদিপুর সীমান্তের এপারে সোনামসজিদ, খাসেরহাট ও কালিগঞ্জ ঠুঠাপাড়া চাকপাড়া — এসব জায়গা চোরাচালানকারীদের প্রধান রুট হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয় রাখাল, ভ্যানচালক কিংবা পেশাদার চোরাকারবারিদের মাধ্যমে ফোনের চালান ঢুকছে। শুধু লোকাল দোকান বা বাজার নয়, ফেসবুক গ্রুপ, পেজ আর অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতেও এসব ফোন বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। অনেক সময় ফোনের আইএমইআই (IMEI) পরিবর্তন করে “নতুনের মতো” বানানো হয়। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়ানো সহজ হয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা এক তরুণ বলেন, “কাগজপত্র চাইলে বলে, কাগজ নাই, দাম কমে দিয়ে নাও। কেউ কেউ একসঙ্গে কয়েকটা কিনে আবার অন্য জায়গায় বিক্রি করে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু অভিযান নয়, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, সোশ্যাল মিডিয়ায় মনিটরিং এবং বাজারে আইএমইআই যাচাই বাধ্যতামূলক করলেই এ প্রবণতা কমানো সম্ভব।#