1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
সিংড়ায় পুলিশের ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত নওগাঁর আত্রাইয়ের পুষ্টিগুন মাছের শুকটি রপ্তানি হচ্ছে দেশ-বিদেশে নাচোল বরেন্দ্র অঞ্চলে  দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ ও রস   বাড়তি দামের কারণে ব্যয় বাড়ছে নিত্যপণ্যর ডুমুরিয়ায় হুফ্ফজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত তানোরে আলুর বীজ নিয়ে মহা সিন্ডিকেট দিশেহারা চাষীরা! খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়  বাগমারার হাটগাঙ্গোপাড়া মডেল প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি গঠন বাংলাদেশ জার্নালিস্ট প্রটেক্ট কমিটির সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য অ্যাডভোকেসি কর্মশালা  সিংড়ায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত

সারের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে-হতাশায় রাজশাহী অঞ্চলের কৃষক

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২
  • ১৭৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

আবুল কালাম আজাদ…………………………

ইউরিয়া সারের দাম বাড়ানোয় সারাদেশের কৃষকদের মত রাজশাহীর বরেন্দ্রাঞ্চলসহ রাজশাহীর অঞ্চলের কৃষকরাও বিপাকে ও হতাশায় ভুগছেন। এতে কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তারা।

 

কৃষকরা বলছেন, এবার বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি একেবারে কম হওয়ায় সেচের ব্যয় বেড়েছে।এরপর রয়েছে-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট। এ অবস্থায় সারের দাম বাড়ানোয় তারা চোখে শর্ষে ফুল দেখছেন। সবকিছু মিলে কৃষি খাতে উৎপাদনের খরচ বাড়বে এবং কৃষি আবাদ কমে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এরফলে আগামী মৌসুমে চালসহ কৃষিপণ্য এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, দাম কিছুটা বৃদ্ধির ফলে কৃষকদের মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া ব্যবহারের প্রবণতা কমবে। অপরদিকে দাম ভালো পেলে কৃষকরা তেমন একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সোমবার থেকে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এরফলে কৃষককে প্রতি কেজি সার ১৬ টাকার পরিবর্তে কিনতে হবে ২২ টাকায়। শতকরা হিসাবে এই বৃদ্ধি প্রায় ৩৮ শতাংশ। আর একজন ডিলার পর্যায়ের দাম ১৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। দাম বাড়ানোর কারণ হিসাবে সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।

 

এদিকে কৃষকরা বলছেন, চলতি আমন মৌসুমে উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা-তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বেশি সমস্যায় আছেন বর্গাচাষিরা। তারা বলছেন, সারের দাম বৃদ্ধি এবং অনাবৃষ্টিসহ শ্রমিক ব্যয় ও আনুষঙ্গিক যে ব্যয় হবে, তাতে চলতি মৌসুমে আমন চাষে নির্ঘাৎ লোকসান হবে। এর সঙ্গে তাদের নিজেদের শ্রমের মূল্য যুক্ত করলে লোকসানের পাল্লা আরও ভারি হবে। যে সব জেলায় বেশি ধান উৎপাদন হয়, তার মধ্যে দিনাজপুর অন্যতম। কিন্তু সারের দাম বাড়ানোয় দুশ্চিন্তার কথা বলছেন জেলার কৃষকরা। তাদের মতে, এক একর জমিতে এবার আমন আবাদ করতে খরচ বাড়বে ৫শ’ টাকা এবং বোরো আরও বেশি।

 

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর মহল্লার ধানচাষি আসাদুজাম্মান মিঠু জানান, তিনি এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। চারা রোপণ করতেই ১৪ হাজার টাকা খরচ । এর মধ্যে অনাবৃষ্টির কারণে তাকে সেচ বাবদ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিএমডিএ) দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। শ্রমিক বাবদ গুনতে হয়েছে ৫ হাজার, সার বাবদ ব্যয় ২ হাজার, ধানের চারা এবং হালচাষে খরচ আরও ৪ হাজার টাকা। তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান মাড়াই পর্যন্ত খরচ হয় ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। আড়াই বিঘা জমিতে আমার খরচ হবে অন্তত ৪২ থেকে ৪৩ হাজার টাকা। কিন্তু এই জমিতে সর্বোচ্চ ৫০ মন ধান হবে। আবার ধান মাড়াইয়ে ৫ মণে ১ মণ করে পারিশ্রমিক দিতে হয়। ফলে ঘরে ধান উঠবে ৪০ মণ। প্রতি মণের দাম সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা থাকলে আয় হবে ৪০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান হবে। এরপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা তো রয়েছেই। এখন যদি আবার সারের দামে বাড়তি পয়সা গুনতে হয় তাহলে তো কী করব বুঝতে পারছি না।

 

রাজশাহীর পবা উপজেলার ভালাম এলাকার চাষি আব্দুল করিম জানান, তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে ধানচাষ করেছেন। গত ১৫ দিন আগে তিনি জমিতে ধানের চারা রোপণ করেছেন। এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে চারা রোপণের সময়েই তাকে সেচ বাবদ বাড়তি ছয় হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। এছাড়া অকস্মিভাবে ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির কারণে তিনি বেকায়দায় পড়েছেন। তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে ধানচাষে রোপণ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত তিনবার ইউরিয়া ও পটাশ এবং তিনবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। বিঘাপ্রতি শুধু ইউরিয়ার জন্য প্রয়োজন ৪ হাজার টাকা। ইউরিয়ার দাম বৃদ্ধিতে বিঘাপ্রতি আরও অন্তত এক হাজার টাকা বেশি লাগবে। এটি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

 

জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বর্গাচাষি আব্দুল হাকিম জানান, তিনি চলতি মৌসুমে আট বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন চাষ করেছেন। অনাবৃষ্টির কারণে তাকে সেচ বাবদ প্রথমেই ১৫ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সারের মূল্য বৃদ্ধি। মৌসুমের শুরুতেই ইউরিয়ার দাম বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। জেলার বাগমারা গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর সার, বিদ্যুৎ, ডিজেলসহ কৃষি সরঞ্জামের দাম বাড়ে। আর চাষাবাদে নিজের পারিশ্রমিক হিসাব করলে লোকসান হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি হলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকে না। সরকারি যেসব বরাদ্দ আসে, সেগুলো প্রকৃত কৃষকের কাছে পৌঁছায় না। এমন পরিস্থিতি সারের দাম বৃদ্ধি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

 

জেলার তানোরের কৃষক জমিরউদ্দিন বলেন, আমরা বর্তমানে ২০ থেকে ২৫ টাকা করে ইউরিয়া সার কিনে থাকি। সরকার ৬ টাকা করে বৃদ্ধি করেছে, এখন সেই সার কিনতে হবে ৩০ টাকার বেশিতে। প্রতি একর জমিতে ৫০ কেজি করে দুইবারে ১শ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয়। সেই হিসাবে প্রতি একর জমিতে ইউরিয়া সার কিনতে ৬শ’ টাকা করে বেশি খরচ হবে। পিরোজপুরের কাউখালীর কৃষক সাহাব উদ্দিন বলেন, ৭ একর জমিতে আমি ধান চাষ করে থাকি প্রতিবছর। সব খরচ মিলিয়ে ১ একর জমিতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়, আর ধান উৎপাদন হয় গড়ে ৩০ মণ। এই ধান বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকাও পাওয়া যায় না। এর মধ্যে সারের দাম বাড়লে আমাদের লাভ কি থাকবে বুঝতেছি না।

 

জেলার মোহনপুরের কৃষক রুস্তম আলী বলেন, মূলত ধান চাষে ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হয়। বর্ষার মৌসুমে বেশি ব্যবহার হয়। ১ একর জমিতে প্রায় ১শ’ কেজি ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়। তবে এই সারের দাম বৃদ্ধির খবর শুনেছি, এতে অনেক খরচ বাড়বে। ধান চাষ করা আমাদের জন্য কষ্ট হয়ে দাঁড়াবে।

 

সারের দাম যদি না কমানো হয় অথবা পূর্র অবস্থায় না রাখা যায় তাহলে একদিকে কৃষকেরা বিপাকে পড়বে এবং ধানের উৎপাদন অনেকাংশে কমে যাবে।এতে করে দেশ চরম আথির্ক সংকটের মুখে পড়বে।এ সংকট মোকাবেলার জন্য সরকারকে এখসই যুগপোযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে করে কৃষক তার আবাদ বিনা বাধায় পুরোপুরিভাবে চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।জাতীয় স্বারথের কথা বিবেচনা করে সরকার একটি মহৎ উদ্যোগ নিবে এ আশা এ অঞ্চেলের মানুষের।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট