জি,এম,আমিনুর রহমান সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে সাতক্ষীরায় শুরু হয়েছে থেমে থেমে বৃষ্টি। এই অবস্থায় উপকূলের বাসিন্দাদের মধ্যে বেড়িবাঁধের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরার শ্যামনগর এলাকার অন্তত নয়টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। সামান্য জলোচ্ছ্বাস হলেই এসব পয়েন্ট ভেঙে জনপদ প্লাবিত হতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা ওয়েজ কুরুনী জানান, প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেড়িবাঁধ নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা বাড়ে। বিগত বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আম্পান, ইয়াস ও রেমালের পর কিছু সংস্কার কাজ হলেও, অনেক এলাকায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি বলেন, “একবার বাঁধ ভাঙলে আমাদের জন্য কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।”
রমজাননগরের বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের কথায়, “গোলাখালির মানুষ খুবই অসহায় হয়ে পড়ে। দ্বীপ হওয়ায় সেখানে সাইক্লোন সেল্টার নেই।” পশ্চিম দুর্গাবাটির মলিনা রানি জানান, খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে তাদের বসবাস। “আইলার পর থেকে প্রতিবছরই আমাদের বাড়ি নদীর মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে,” তিনি বলেন। গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম সতর্ক করেছেন, “পানির চাপ বাড়লে বেড়িবাঁধ টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, জেলার ৬৮৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত।
সাতক্ষীরায় ৮৮৭টি সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে, যেখানে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষ নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, তবে বাস্তবতা হল, উপকূলবাসীদের মনোযোগ এখন বেড়িবাঁধের নিরাপত্তার দিকে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ের প্রকোপ বাড়লে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। মানুষজনের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।#