1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:

বাবুলের জানাজায়, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাসহ শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ, হত্যায় মদদদাতারাও ছাড় পাবেন না-এমপি শাহরিয়ার আলম

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪
  • ৪৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের রাজনীতির অন্যতম সবার প্রিয় মানুষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাজার নামাজ শেষে বাঘা পৌর সভার গাওপাড়া নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(২৭-০৬-২০২৪) বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায়, বাবুলের রাজনৈতিক অনুসারী, সহযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

এসময় তার মরদেহে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানায়। পরে তাকে চিরশয্যায় সমাহিত করা হয়। জানাযায় ইমামতি করেন সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল গফুর মিঞা। গত বুধবার (২৬জুন) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাবুল ইসলাম । তার বয়স হয়েছিলো ৫০ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র, সহ অসংখ্য রাজনৈতিক অনুসারী, শুভাকাঙ্খী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছে।

জানাজায় বক্তব্যকালে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাবুলের অপরাধ ছিল, কেন তিনি শাহরিয়ার আলমের সাখে রাজনীতি করেন। বাবুল হত্যার বিষয়ে গোপনে যারা মদদ দিয়েছেন তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে বিচার করা হবে। এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, এমপি আসাদুজ্জান আসাদ ও উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাভলুর নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা কেন জানাজায় আসেনি। তাদের সৎ সাহস নেই। প্রয়োজনে তাদের নামে মামলা করে আইনের কাঠ গড়ায় দাঁড় করানো হবে।

খুনি আক্কাছকে ২ বছর আগে বহিস্কারের ৭ দিনের মাথায়, খুনি আক্কাছ ও খুনি মেরাজকে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের গাড়ীতে ঘুরতে দেখেছি। তাদের পেছনে কারা শক্তি সঞ্চয় করে, তা খুঁজে বের করতে হবে। এর আগে অনেক সহ্য করা হয়েছে এখন আর নয়। দল ব্যবস্থা নেবে, প্রশাসন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবে।

তিনি বলেন,আমাদের কৃতকর্মে কারো ক্ষতি না হয় সে দায়িত্বও থাকবে। তবে ,প্রকাশ্যে কিংবা পশ্চাতে কোন মদদদাতা থাকলে তারা এখান থেকে চলে যান। নিজ দায়িত্ব থেকে দায়িত্ব করবেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) অনিল কুমার সরকারকে চলে যেতে বলেন দলের এক নেতা।

এ বিষয়ে অনিল কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে মরহুম বাবুলকে শেষ শ্রদ্ধা ও পরিবারকে সমবেদনা জানাতে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে কিছু বুঝে উঠার আগেই পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ আমাকে জানাজার মাঠ থেকে চলে যেতে বলে। কাউকে কিছু না জানিয়ে সেখান থেকে চলে এসেছি।

এ বিষয়ে জানাযায় উপস্থিত রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, চারদিন থেকে বাবুল হাসাপাতালে চিৎিসাধীন ছিলেন। তিনি সংগঠনের মূল দায়িত্বে থাকার পরও হাসপাতালে দেখতে যাননি। এ ক্ষোভ থেকে কিছু নেতাকর্মীরা তাকে জানাজার মাঠ থেকে চলে যেতে বলেন। তাৎক্ষনিক তিনি সেখান থেকে চলে যান।

জানাজায় বক্তব্য দেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দূর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা, মরহুমের সহোদর বড় ভাই আনজারুল ইসলাম,বড় ছেলে আশিক জাভেদ।

উপস্থিত ছিলেন,রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. চিন্ময় কুমার, মরহুমের ছোট ছেলে অসীন জাভেদ অর্থ সহ অসংখ্য রাজনৈতিক অনুসারী, শুভাকাঙ্খী ও গুণগ্রাহীরা।

জানা যায়, আশরাফুল ইসলাম বাবুল ছাত্রজীবন থেকে আ’লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০২২ সালের ২১ মার্চ ও ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বাঘা উপজেলা শাখার অনুষ্ঠিত সম্মেলনে, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর আগে দীর্ঘ ১২ বছর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়েছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষকতা করতেন। সামাজিক কর্মকান্ডে তার পদারচনা ছিল উন্নয়নমূখী।

বাবুল ইসলাম বর্তমান এমপির অনুসারি ছিলেন। বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জানান, ২০১১ সালে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আশরাফুল ইসলাম বাবুল। কান্নায় ভেঙে পড়ে বড় ছেলে দাবি করেন,পৌর মেয়র আক্কাছ,ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজ তার বাবাকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। বাড়িতে মা সালেহা বেগমের সাথে বাবুলের শেষ কথা হয় ২২ জুন সকালে মানববন্ধনে আসার আগে। স্ত্রী বেবি বেগমের সাথে হাসপাতালেই বাবুলের শেষ কথা হয়।

জানা যায়, গত শনিবার(২২ জুন’২৪) একই দিনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে সংঘর্ষে জড়ান আ’লীগের দু’পক্ষ। তারা দেশীয় অস্ত্রসহ চাপাতি ও পাইপ, ইটপাটকেল নিয়ে বাঘা উপজেলা চত্বর এলাকায় সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। আহত হন অন্তত অর্ধশতাধিক। তাদের মধ্যে ধারালো অস্ত্রেও আঘাতে আহত বাবুলের অবস্থা ছিল আশংকাজনক। মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বাঘা উপজেলা আওয়ামীলীগ বাঘা পৌর মেয়র আক্কাস আলীর সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজন প্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে আশরাফুল ইসলাম বাবুলসহ উপজেলা ভোটে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান,পৌর আ’লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস সরকার,সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন, উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহিদ সাদিক কবীর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমানসহ তাদের সমর্থকরা। অপর দিকে উপজেলা সচেতন নাগরিকদের ব্যানারে বাঘা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কতিপয় ব্যক্তি দলিল লেখক সমিতির নামে ক্রেতার কাছে জোর পূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয় ।

এতে অংশ নেন- বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলী, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল (জাসদ ইনু)’র কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান শফি,দলিল লেখক জহুরুল ইসলামসহ তাদের সমর্থকরা।

পুলিশ জানায়,সংঘর্ষের দিন আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে কুপিয়ে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আইনে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিন শনিবার(২২ জুন) ভোর পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন রোববার দ্রুত বিচার আইনে মামলা রেকর্ড করে ওইদিন বিকেল ৫টায় আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার(২৬-০৬-২০২৪) রাতে মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী- উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল (জাসদ ইনু)’র কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান শফি ও রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা ৭জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) আসামীদের রিমান্ড মঞ্জুর করে রাজশাহীর একটি আদালত। এরা হলেন-বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম,খায়েরহাট গ্রামের বিশিষ্ট ঠিকাদার শাজামাল সরকার লিটন,কলিগ্রামের মারুফ হাসান, মিলিকবাঘা গ্রামের তরঙ্গ হোসেন, নাছির উদ্দিন,বানিয়াপাড়া গ্রামের মতিউর রহমান, চকছাতারি গ্রামের গোলাম মোস্তফা। তারা পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সমর্থক বলে জানা গেছে। ওসি জানান,মারামারির ঘটনায় যে মামলাটি হয়েছিল, সেই মামলাটিই এখন হত্যা মামলায় রূপ নেবে বলেও জানান। #

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট