# বিশেষ প্রতিনিধি…………………………………………………………………….
সপ্তাহের ব্যবধানে রাজশাহীর বাঘায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে । সরবরাহের তুলনায় পণ্য বিক্রি কম হওয়ায় লাভের অংকে অস্বস্তি বিক্রেতাদের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দামে কম হলেও যে সব ক্রেতারা বাজারে আসছেন তারা পণ্য কিনছেন কম। এতে সব পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। লাভটাও তাদের তেমন ভালো হচ্ছেনা। বিশ টাকায় ১ হালি লেবু কিনলে ক্রেতাদের ১ ফ্রি দিয়েছেন বিক্রেতা। রোববার(১৭ -০৩-২০২৪) উপজেলার বাঘা হাটে সবজির বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এমন কথা জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়,প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা দরে। লালশাঁক-পুঁইশাঁক বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৫ টাকা। বেগুন, লালশাঁক-পুঁইশাঁক সহ অন্যান্য সবজির দামও কমেছে। পদ্মার চরের চাষি আরিফুল ইসলাম শেখ জানান, এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। প্রথমের দিকে ভাল দাম পেলেও বর্তমানে ধস নেমেছে বেগুনের দামে। দাম কম হলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছেনা। তিনি জানান, রোববার খেত থেকে ২০০ টাকা হিসেবে ২০ মণ বেগুন বিক্রি করেছি। সে হিসেবে প্রতি কেজি বেগুনের দাম পড়ে ৫টাকা। দামে কম হলেও চাহিদা না থাকার কারণে পাইকাররা বেশি করে নিতে চাচ্ছেননা। মাস খানেক আগেও এই বেগুন প্রতিকেজি ৬০ টাকা হিসেবে বিক্রি করেছেন বলে জানান।
পাইকার ব্যবসায়ী আলান উদ্দিন জানান, শ্রমিক, ৫দিন আগে মাঠ থেকে ৭০ মণ বেগুন কেনেন প্রতি কেজি ৫টাকা দর হিসেবে। সেই বেগুন ঢাকায় বিক্রি করে গাড়ি ভাড়া ও খাজনাসহ বিভিন্ন খাতে খরচের হিসেব করে দুই হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তার। পাইকারি কম দামে কেনা বেগুনগুলো বাঘা পৌর বাজারে ১০ টাকা,১৫টাকা আর ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।
ওই বাজারের সবজি ব্যবসায়ী শাহাজান আলী বলেন, আকার ভেদে চরকি জাতের যে বেগুন ১০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করছি, সেগুলো পুরাতন গাছের বেগুন। নতুন গাছের বেগুন বিক্রি করছেন ১৫ টাকা আর আম বেগুন বিক্রি করছেন ৩০ টাকা হিসেবে। সপ্তাহখানেক আগে এসব বেগুন কেজিতে১৫-২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। গত বৃহসপতিবার সাপ্তাহিক হাটে লালশাঁক-পুঁইশাঁক বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে৩০ টাকা কেজি দরে। রোববার হাটে সেই শাঁক ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছিলেন আরেক সবজি ব্যবসায়ী এমরান আলী। তিনি জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কমেছে ।
রোববার (১৭-০৩-২০২৪) হাটে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হয়েছে ৪০/৪৫ টাকা, বৃহসপতিবার হাটে সেই করলা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা। এইদিন হাটে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা মটরশুটি রোববার হাটে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা। রমজানের পরে ১২০ টাকা কেজির ঢেঁড়স রোববার বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, ৮০ টাকার শসা ৪০ টাকা, ১২০ টাকার পটল ৬০ টাকা, ৭০ টাকার খিরা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা,৪০/৫০ টাকা কেজির মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয়েছে২০-২৫ টাকা,৩০ টাকার শীম বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা কেজি দরে। অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হয়েছে-ডাটা.লেবু, গাজর, কাঁচাকলা। এগুলো বিক্রি হয়েছে- ২০-২৫ ও ৩০ টাকা কেজি দরে। লেবু বিক্রেতা শামসুল ইসলাম জানান,বিক্রি কম হচ্ছে,তাই ক্রেতা টানতে ১ হালি লেবুর সাথে ১টা ফ্রি দিচ্ছেন। তাতেও ভালো সাড়া পাননি শামসুল। সবজি ব্যবসায়ী জাহের মোল্লা বলেন, আগের তুলনায় কম দামে ডাটা বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দর কেজি প্রতি ২০ টাকায় নেমে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি, ৯০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি,১১০ টাকার রসুন বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা কেজি। তবে ৩০ টাকার টমেটো কেজিতে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।
মহসিন আলী নামে একজন ক্রেতা জানান, প্রতিদিন কাজ করলে খরচ পান৩০০-৪০০ টাকা। কাজ না পেলে আয় হয়না। ৪সদস্যর সংসারে চাল.ডাল,তৈলসহ প্রায়োজনীয় পণ্য কিনতে হয় তার আয়ের টাকায়। তবে আগের তুলনায় সবজির কম দামে স্বস্তি পাচ্ছেন। বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, পদ্মার চরে সহ উপজেলায় ১৯৯ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশি চাষ হওয়ায় দাম কিছুটা কমে গেছে। এরপরও এ দামে বেগুন বিক্রি করলেও চাষিদের লোকসান হবে না। উপজেলা নির্বাহি অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, রমজানের পর বাজার তদারকি করা হচ্ছে। সবজির দাম যেভাবে বেড়েছিল,সেভাবেই কমেছে। #