# মো: ইব্রাহিম খন্দকার, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি………………………………
গাজীপুরের কালীগঞ্জে কৌশলে সৎ ছোট বোনের সম্পত্তি লিখে নিয়ে পাগল সাজিয়ে লোহার শিকলে হাত পা বেধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা নির্যাতিতাকে শিকল দিয়ে হাত পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাধা অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে নির্যাতনকারী ভাই ও ভাবি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে ৫জনকে আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়হড়া (বড়িদাপাড়া) গ্রামের মৃত রমিজউদ্দিনের কন্যা কাউছার বেগম (৬৩) এর বিয়ে হয় জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের কাউলিতা গ্রামের সাদেক শিকদারের সাথে। পৈত্রিক সূত্রে কাউছার বেগম ৩ বিঘা সম্পত্তির মালিকানা লাভ করে। স্বামীর সংসারে অভাব অনটনের সুযোগে সৎ বড় ভাই আশরাফুল ভুইয়া তাকে ফুসলিয়া নিজ বাড়ীতে এনে স্বামী সন্তানদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এক পর্যায়ে তার স্বামী তাকে তালাক দিতে বাধ্য হয়। তালাকের পর কাউছার বেগমের সমস্ত সম্পত্তি আশরাফুল ও তার স্ত্রী নাজমুন নাহার স্বপ্না বেগম কৌশলে তাদের পুত্র নাইমের নামে রেজিষ্ট্রি করে নেয়। সম্পত্তি লিখে নিয়ে তাকে বাড়ী থেকে বের করে দিতে শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
নির্যাতনের ঘটনা আড়াল করতে বোনকে পাগল আখ্যা দিয়ে খাবার বন্ধ করে লোহার শিকলে হাত পা বেধে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। গত শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে আশরাফুল ভুইয়া ও তার স্ত্রী নাজমুন নাহার @ স্বপ্না বেগম শিকল দিয়ে কাউছার বেগমকে গাছের সাথে বেধে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আলমগীর হোসেন ও কাউছার বেগমের কন্যা শারমীনকে খবর দেয়। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত পা শিকলে ও মুখ কাপড়ে বাধা অবস্থায় তাকে উদ্বার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
এ বিষয়ে কাউছার বেগমের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেককে জানান, আমার বড় ভাই ও ভাবি অভাব অনটনের সুযোগ নিয়ে আমাকে স্বামীর বাড়ী থেকে নিয়ে আসে। পরে আমার স্বামী সন্তানদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তারা আমার সাথে দেখা করতে আসলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ ও মারধর করতো। এতে রাগ করে আমার স্বামী আমাকে তালাক দেয়। পরে ভাই, ভাবি, ভাইঝি ও ভাতিজা নাইম চক্রান্ত করে আমার সমস্ত সম্পত্তি লিখে নিয়ে আমার ভরণপোষণ বন্ধ করে দেয়। আমি বাড়ী থেকে যেতে না চাওয়ায় তারা আমাকে পাগল সাজিয়ে শিকলে বেধে ঘরে বন্ধি রেখে মারধর করতো। আমি আমার সম্পত্তি ফেরত ও ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে কাউছার বেগমের মেয়ে শারমিন বেগম বাদী হয়ে আশরাফুল ভুইয়া (৭৫), তার স্ত্রী নাজমুন নাহার @ স্বপ্না বেগম (৬৫), তাদের পুত্র নাসিম (২৫), কন্যা তাহমিনা আক্তার (৩৫) ও স্বপ্নার মামাতো ভাই অরুন খান (৭০) এর নাম উল্লেখ করে রবিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অভিযোগ পেয়েছি, আসামী গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।#