# বিশেষ প্রতিনিধি…………………………………………
রাজশাহীর বাঘায় আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে ৩দিন ব্যাপি কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (২০-৫-২০২৩) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি এ মেলার উদ্বোধন করেন।
বক্তব্যকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিতে শ্রম দিয়ে আয় করুন। প্রতিটি পরিবারের বেকার যুবক ছাত্ররা যদি এক পা এগিয়ে যায়, আমি দুই পা এগিয়ে যাব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কমিটি গঠনের সময় অনেকেই পদ পেতে কুচিন্তা নিয়ে পরিকল্পনা করেন। কিন্তু এসব কুচিন্তা বাদ দিয়ে যদি তিন মাস কৃষিতে পরিশ্রম করা যায়, তাহলে অধিক আয় করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। জমি ফেলে না রেখে প্রধানমন্ত্রী নিজেও শাক-সবজি,ফল মূলের চাষাবাদ করছেন। পৃথিবীতে কৃষিতে স্বয়ং সম্পুর্ন দেশের তালিকায় আছে বাংলাদেশ ।
তিনি আরো বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রচেষ্টায় বিদেশি ফল, ড্রাগন,স্টবেরী,চিয়া সিড,সবজি জাতীয় ক্যাপসিকামসহ আঙুর চাষ হচ্ছে বাঘা উপজেলায়। পলি নেট হাউসে সারা বছর সবজি ফলমূল চাষ হচ্ছে। বাঘার আম কয়েক বছর ধরে বিদেশে রপ্তানি করে উপজেলার আম চাষীরা আয় করছেন। জাপানের সাথে কৃষি প্রযুক্তি বিনিময়ের কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সঠিক পদ্ধতির মাধ্যমে চাষাবাদ করে সম্মভাবনাময় বাংলাদেশকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করে দ্বিগুনের অধিক আয়ের পর্যয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আলট্রা হাইড্রেন সিটিতে রূপান্তর করে বাঘা উপজেলাকে মডেল উপজেলা হিসেবে রূপান্তর করা হবে বলেও ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী।
পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে বলেন, জনস্বার্থে,কৃষির স্বার্থে কেউ অবৈধ পুকুর খননের আশপাশে যাবেন না। সভায় বক্তব্য দেওয়ার আগে মেলায় প্রদর্শিত ১০০ জাতের আমের স্টোল পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী।
এসব জাতের মধ্যে ছিল-লক্ষণভোগ, ফজলি, খিরসাপাত, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আড়াজাম, আ¤্রপালি, মল্লিকা, আর্শ্বিনা, কুয়াপাহাড়ি, চোষা, তোতাপরী, অনামিকা, ফনিয়া, বারি আম-৪, ব্যানানা ম্যাংগো, বোম্বাাই, খাজা গুটি, চিনিঘোরা, চুঙ্গা ভোগ, মহন ভোগ, হাড়ি ভাংগা, বিবি, চাপড়া, ডুকসা, হাতিম, কৃষাণ ভোগ, কাদুমা, গোপাল ভোগ, বেলি, দুধস্বর, দুধ কোমর, আপেল গুটি , মিয়াজাকি (সূর্যডিম), চেংসাই, ডকমাই, ভাদরী, নাকাবাসী, সুমাসি, জগৎ মহনী, দিংলি, হাতিঝোপা, কদাল কাটি, সিন্দুটোকা, বামি আম-১১, আনারসী, জাওনী, পাগাড়ে, স্বপন্ন বিভর, ঝিনুক আস্বিনা, বড় গুটি, চরুষা, ঠুটি, দুধভরা, বৈশাখী, ভুরই, গৌড়মতি, কাটিমন, কালুয়া গুটি, আনার কলি, বৌভলানো, ইঁদুর চাটা, বাবুই ঝুকি, বড় গুটি, বিশ্বনাথ, সুরমা ফজলি, বাঘা শাহী, বঙ্গবাসী, আষাঢ়ী, নাক ফজলী, ছাতু ভিজালী, গোল্লা, বাতাসী, ধমিয়া, সেঁদুরী, মহন ঠাকুর, গুটি আম (এক কেজি), মেথা, মিছরী ছানা, সালাম ভোগ ,খালসী, হাইব্রীড লকনাম মধু খলসি, পেপে গুটি, পেসি গুটি, কাকড়ি, সুগন্ধি গুটি, নাজির ভোগ, দুধ সাগর, বালিশ গুচি, জাইন্ট খিরসাপাত, মধু চুষকা, আব্দুল্লাহ ফজলি, কালি ভোগ, মধুমতি, জামাই ভোগসহ একশ জাতের আম।
কৃষি বিভাগ জানায়, নার্সারি,বীজ ভান্ডার,মৌচাষ, কীটনাশক, বীজ এর স্টলসহ ২৪টি স্টল মেলায় অংশ গ্রহন করে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত ৩দিন ব্যাপি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
জলাবদ্ধতা ও পুকুর খনন বন্ধসহ রপ্তানিযোগ্য আম পেয়ারা,বরই,পেপে ও শাক-সবজির প্যাকেজিং হাউসের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সফল কৃষক শফিকুল ইসলাম ছানা, আমিনুল ইসলাম, এনামুল হক ।
স্বাগত বক্তব্যকালে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় এখন উচ্চমূল্যের নানা ফসল চাষ শুরু হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে কৃষি অফিসের সহায়তায় ক্যাপসিকাম, ষ্ট্রবেরি, ড্রাগন, চিয়াবীজ, কিনোয়া বীজ, পেরিলা বীজসহ আংগুর চাষ করে নিজেদের ভাগ্যে পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন কৃষকরা। পরে ৩০ জন সফল কৃষককের হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা আ’লীগের সহ সভাপতি আমজাদ হোসেন নবাব, সাংগঠনিক সম্পাদক আলফুর রহমান, আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তর আলী, রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু,বীর মুক্তি যোদ্ধা নৌ কমান্ডো আজিজুল আলম, ওসি খাইরুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান, আ’লীগ দলীয় নের্তৃবৃন্দ ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা।
মেলায় ঘুরতে আসা এএসসি পরীক্ষার্থী শান্ত মিঞা, নতুন প্রযুক্তিতে ফসল ফলানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। বিশেষ করে আমের ১০০ জাতের নামও জানতে পারলাম। মর্জিনা বেগম নামের একজন বলেন, কৃষি প্রযুক্তি মেলার প্রদর্শনীতে ১০০ জাতের আম দেখলাম। অনেক ভালো লাগলো। #