# আবুল কালাম আজাদ…………………………………..
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের বিরোধ প্রকট হয়ে উঠছে। এর এক পক্ষে নেতৃত্বে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। অন্য পক্ষে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মনসুর রহমান।
আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক চিকিৎসক মনসুর রহমান। এর আগের দুই মেয়াদে এই আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন আবদুল ওয়াদুদ দারা। নির্বাচনের পরে ‘মনোনয়ন বঞ্চিত’ আবদুল ওয়াদুদ দারা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এর পর থেকে এই নির্বাচনী এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়।
দলের একটি সূত্র বলছে, প্রায় সাত বছর পর গত বছরের মার্চ মাসে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সেখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই বর্তমান সংসদ সদস্যের অনুসারীরা দায়িত্ব পান। এরপর তিনটি ইউনিয়ন কমিটির নেতৃত্বও সংসদ সদস্যের অনুসারীদের হাতে যাওয়ার পর অন্য ইউনিয়নের কমিটি আর করা হয়নি। এমনকি জেলার সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারার নিজের ইউনিয়ন বানেশ্বরেও কমিটি গঠন করা হয়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রহিম বলেন, অন্য যে কারণই থাক, তাঁদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে কমিটিতে একের পর এক সংসদ সদস্যের অনুসারীরা আসার কারণেই বাকি ইউনিয়নে কমিটি করা বন্ধ রাখা হয়েছে।
অপরদিকে, রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য টাকা তোলা নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি পুঠিয়ায় দলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এসে দুই পক্ষের চারজনকে আটক করেছিল। বিকেলে অবশ্য তাঁদের আবার ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাটটি ইজারা দেয়া হয়েছে। হাটের ইজারাদারের অভিযোগ, সরকারদলীয় কোনো অনুষ্ঠান হলেই ইজারাদারের কাছ থেকে খরচ নেয়া হয়। রাজশাহীতে ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যাওয়ার খরচের বিষয় নিয়ে ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বানেশ্বর বণিক সমিতির কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সংসদ সদস্য মনসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা ও জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ওবায়দুর রহমানের জন্য হাট কমিটির কাছ থেকে আলাদা খরচ দাবি করা হয়।
সভায় সংসদ সদস্য মনসুর রহমানের পক্ষে জেলা যুবলীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক সেলিম শেখ এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুর দারার পক্ষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। তবে হাট কমিটি পৃথক তিন জায়গায় খরচ দিতে আপত্তি করে। শেষ পর্যন্ত তারা কাউকেই খরচ দিতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে স্থানীয় খুঁটিপাড়া গ্রামের আওয়ামী লীগের সমর্থক হাবিবুর রহমান এই খরচ নেওয়ার বিষয় নিয়ে আবুল কালাম আজাদের কথার প্রতিবাদ জানান। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে হাট কমিটির লোকজন তা মীমাংসা করে দেন। তারপরও এ ঘটনার জেরে পরের দিন দুপুরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এদিকে, বিড়ালদহ সৈয়দ করম আলী শাহ উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে মুখে মুখি দুই পক্ষ। এ নিয়ে দারার অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তুলে থানায় জিডিও করেছেন মুনসুর রহমানের অনুসারী প্রধান শিক্ষক কোরবান আলী। এমপির মুনসুরের নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটি করলে ক্ষুদ্ধ হন দারা।
সংসদ সদস্য মনসুর রহমান বলেছিলেন, তাঁর লোকজনকে জনসভায় নেওয়ার জন্য তিনি কাউকে যাতায়াতভাড়া দিতে বলেননি। এ রকম নির্দেশনা চার বছর আগেও কাউকে দেননি। এখনো দেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেছিলেন, তিনি ঘটনাটি ভাসা-ভাসা শুনেছি। তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকায় বর্তমান সংসদ সদস্যসহ সবাই আমার অনুসারী। আলাদা করে তাঁর অনুসারী নেই।#