মোঃ আলফাত হোসেনঃ সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক দীর্ঘ এক যুগ ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় রয়েছে, যার ফলে চারটি উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। সড়কের বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে পরিবহন নষ্ট হচ্ছে, যা সুন্দরবনে পর্যটক আগমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং রাজস্ব আয় কমাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার অক্টোবর মাস থেকে পাঁচটি প্যাকেজের মাধ্যমে এই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করবে। ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ, সড়ক পথে সুন্দরবন’ স্লোগান থাকা সত্ত্বেও সড়কের বেহাল দশা চলমান। আগের সরকারের সময় একবার এই সড়কটি একনেকে পাস হয়েছিল, তবে এরপর আর কোনো উন্নতি হয়নি। বৃষ্টির কারণে খানাখন্দ এত বড় হয়ে গেছে যে, সড়কটি চলাচলের জন্য একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা শ্যামনগর ও সুন্দরবনের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ঠিক রাখতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, আলিপুর বাজার, আলিপুর শ্মশান, কুলিয়া সহ ১৬টি স্থানে ইটের সোলিং করে চলাচলের ব্যবস্থা করেছে। তবে পাকা রাস্তার ওপর ইটের সোলিং করা হচ্ছে, যা অনেকের কাছে অত্যন্ত লজ্জাজনক মনে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিনের।
সরেজমিন দেখা যায়, ব্যস্ত সড়কে পিচ-খোয়া উঠে ছোট-বড় অনেক গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব স্থানে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে। যাওয়া সম্ভব না বলে বাধ্য হয়ে যাত্রীদের মাঝপথে নামিয়ে দিচ্ছেন ও অনেক যানবাহন । সড়কজুড়ে বড় গর্তে আটকে যাচ্ছে গাড়ি। এ ছাড়া যান চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হওয়ায় অনেক যানবাহন রুট পরিবর্তন করে আশাশুনি উপজেলা দিয়ে যাতায়াত করছে, এতে দুর্ভোগ বেড়েছে ওই পথে চলাচলকারী গাড়ি ও যাত্রীদের। চালকদের অভিযোগ, এই সড়কে চলাচলকারী গাড়ির আয়ু কমছে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হওয়ায় গাড়ির যন্ত্রাংশ প্রতিদিনই নষ্ট হচ্ছে। শুধু ইজিবাইক নয়, বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চালকরা জানান, যাত্রীসংখ্যা কম থাকায় তারা ক্ষতিপূরণের জন্য মালিকের কাছে দায়ভার নিতে পারছেন না। যাতায়াত কম হওয়ায় পরিবহনের আয়ও কমেছে, যা চালক ও পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
সুন্দরবন ইয়ুথ ফ্রেন্ডশিপের পরিচালক মোঃ আলফাত হোসেন বলেন, ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ ‘সড়ক পথে সুন্দরবন’ হলেও চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন জেলার চারটি উপজেলার মানুষ। এর ফলে সরকার পর্যটক থেকে রাজস্ব হারাচ্ছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করে,এই সড়কের সংস্কার কাজ আগামী অক্টোবরে শুরু করবে।
সড়ক জনপদ বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, সাতক্ষীরা-শ্যামনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬২ কিলোমিটার রাস্তা ৫টি প্যাকেজে ৫৬৫ কোটি টাকার টেন্ডার পাস হয়েছে। একটি প্রক্রিয়াধীন সহ চারটি টেন্ডার হয়ে গেছে। বর্ষার পর কাজ শুরু হবে।#