রনি কাউসার: শিবগঞ্জের শাহাবাজপুর ইউনিয়নের আজমতপুর মৌজার উপরচকপাড়া মাঠে প্রায় ৭০০ বিঘা জমির আমন ধান মাজরা ও তোসর পোকার আক্রমণে সয়লাব হয়েছে। তবে কৃষি অফিস বলছে মাজরা পোকা ও তোসর পোকার আক্রমণে ধানের তেমন কোন ক্ষতি হবে না। আমরা সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছি।
সরজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির ধান বিভিন্ন পোকার আক্রমণে নষ্ট হতে চলেছে। ধানের গোড়া কেটে দেয়ায় গাছ মরে গেছে। অনেক ধানের শীষ শুকিয়ে গেছে। ধানের গাছ বৃদ্ধি না পেয়ে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে।
কৃষক মিঠুন আলি জানান আমার ৩ বিঘা জমিতে ধান আছে। ধানের চারা রোপনের কিছুদিন পরেই বিভিন্ন পোকার আক্রমণে ধানের শীষ শুকিয়ে গেছে। পাতা মুড়িয়ে যাচ্ছে। ধান গাছের কান্ড অর্থাৎ গোড়া কেটে নষ্ট করে দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এ মাঠে এ মৌসুমে প্রায় ৭শ’ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। জমিতে চাষ করা হয়েছে, স্বর্ণা স্বর্ণা-৫ একান্ন-৫১ হাইব্রিড, চিল্কি সহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান। কৃষক কালু ও মাসুদ বলেন, আমাদের দুই বিঘা করে আমন ধান চাষ করেছি। বর্তমানে ধান ক্ষেতে ধানের শীষ গোড়া ও পাতা গুলো বিভিন্ন ধরনের পোকায় খেয়ে ফেলেছে।
এ মাঠে ধানের চাষ করেছেন কৃষক আব্দুল কাদের মাস্টার,সফিকুল ইসলাম মনিরুল ইসলাম,আবদুল মোত্তালেব মিলন সহ ২৫-৩০জন কৃষক অত্যন্ত হতাশ হয়ে বলেন পোকার উপদ্রব থেকে ধান রক্ষা করতে না পারলে মাঝ মাঠে মারা যাবো। ধান রক্ষার জন্য আমরা ইউনিয়ন কৃষি অফিসারের সাথে কথা বলেছি। তিনি শুধু কীটনাশকের দোকান থেকে দোকানদারের সাথে আলোচনা করে কীটনাশষক কিনে জমিতে দিতে বলেন। কয়েকবার কীটনাশক প্রয়োগ করেছি , কোন লাভ হয়নি।
এ ব্যাপারে শাহাবাজপুর ইউনিয়নের দায়িত্ব থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সবুর আলির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন নিউজ করার দরকার নেই। আমি মাঠে গিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কি ব্যবস্থা করবেন, কিভাবে মরা ধান গাছ জিন্দা করবেন, কি কেরামতিতে তিনি ধানের জমি থেকে পোকা তাড়াবেন তা তিনি কিছুই বলেননি। কৃষকদের অভিযোগ এ কর্মকর্তা তার উপর ন্যাস্ত দায়িত্বের এতটুকু পালন করেননি, এর বিচার চাই আমরা। এ কর্মকর্তা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বলে কৃষকদের অভিযোগ।
বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া বলেন, মাজরা ও তোসল পোকা নিয়ে কৃষকদের ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই। আমি প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠে উপসহকারী কৃষি অফিসার দিয়ে সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যবেক্ষণে রাখছি। কৃষকদের সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ, মাঠ পর্যাযে মিটিং এর মাধ্যমে তোসর সহ বিভিন্ন জাতে পোকার দমনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছি, সুফলও আসছে।
তিনি আরো জানান আমি নিজে সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখেছি কোন পোকার আক্রমণে কোন কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে তা পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি আরো বলেন যদি কোন উপসহকারী কৃষি অফিসার দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে তবে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।#