1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:

লোকসানের মুখে রাজশাহীর ১৫ হাজার আলু মজুদকারী

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৮৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

আবুল কালাম আজাদ…………………………………….

রাজশাহীতে আলু নিয়ে লোকসানের মুখে পড়েছেন প্রায় ১৫ হাজার আলু চাষী ও ব্যবসায়ী (মজুদকারী)। মৌসুমের শুরুতে যে দামে আলু কিনে হিমাগারজাত করা হয়েছে এখন সেই দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে আলু। ফলে কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা হারে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যাদের মধ্যে অধিকাংশই সরাসরি আলু চাষে সম্পৃক্ত। প্রতিবছর জমি বন্ধক নিয়ে এসব ব্যবসায়ী আলু চাষ করেন। এরপর বছর শেষে কিছুটা বেশি দাম পাওয়ার আশায় বিক্রি করেন। তবে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে নগরীতে খুচরা সেই আলু কেজিতে ৫-৮ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। যার পুরোটায় চলে যাচ্ছে মধ্যসত্বভোগীদের। ফলে পাইকারী বাজারে আলুর দামে স্বস্তি থাকলেও তাঁর সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ ক্রেতারা।

 

জানা গেছে, এবছর হিমাগারে মজুদকৃত আলু বিক্রি শুরু হয়েছে গত প্রায় দুই মাস ধরে। তবে খরচের তুলনায় হিমাহারে মজুদকৃত আলু এখনো বেশি দামে বিক্রি করতে পারছেন না ব্যবসায়ী ও চাষীরা। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন তাঁরা। কিন্তু হিমাগারের ১৯-২০ টাকা ৫০ পয়সার আলু রাজশাহী শহরে বিক্রি ২৪-২৮ টাকা দামে। তবে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজারের পাইকারী দোকানগুলোতে বিক্রি চ্ছে ২১-২২ টাকা দরে। সেখানেও কেজিতে দুই টাকা হারে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহীর ৩৩টি হিমাগারে এখনো প্রায় ষাট ভাগ আলু সংরক্ষিত আছে। পরিমাণ হিসেবে ধরতে গেলে রাজশাহীর এই স্টোরগুওলাতে প্রায় সাড়ে চার লাখ বস্তা আলু সংরক্ষিত আছে (প্রতি বস্তায় ৬০ কেজি হারে)। সেই হিসেবে প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুদ রয়েছে এখনো। আগামী মাসের শেষের দিক থেকেই আবারও জমিতে আলু চাষ শুরু হবে। এর পর ডিমম্বরয মাসের মাঝামাঝি নতুন আলু বাজারে আসতে শুরু করবে। এর মধ্যেই হিমাগারে মজুদ করা আলু গুলো বিক্রি করতে হবে ব্যবসায়ী ও চাষীদের। তবে নতুন আলু বাজারে আসতে আসতে মজুদকৃত বিপুল পরিমাণ আলু বিক্রি করে খুব একটা লাভবান হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন না হিমাগার মালিক, ও কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। উল্টো ক্ষতিরমুখে পড়বেন আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

 

রাজশাহীর তানোরের বিলে আলু চাষ করেন নগরীর চাষি আরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, চলতি বছর আলু চাষ করতে গিয়ে চাষিদের প্রায় দ্বিগুন অর্থ ব্যয় হয়েছে। কারণ গত বছর আলু বীজ থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বেশি ছিলো। পাশাপাশি বেড়েছে জমি বর্গার টাকার পরিমাণ। ফলে প্রতিকেজিতে অন্তত ২০ টাকা ৫০ পয়সা হারে খরচ হয়েছে আলু হিমাগারে মজুদ করতে। আবার যাঁরা মৌসুমি আলু ব্যবসায়ী তাঁদের কেজিতে আরও এক থেকে দুই টাকা বেশি খরচ হয়েছে। কিন্তু রাজশাহীর স্টোরগুলোতে এখন প্রতিকেজি লাল আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৮ টাকা থেকে ২০টাকা ৫০ পয়সা দরে। ফলে কেজিতে অন্তত ২-৩ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। রাজশাহী অধিপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপসহকারী মতে, রাজশাহীতে আলুচাষ শুরু হয় সাধারণত নভেম্বর থেকে। চলে মার্চ মাস পর্যন্ত। সেই হিসেবে গত বছর রাজশাহী।

 

তানোরের দিলদার হোসেন বলেন, ‘আমি ২০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। তার মধ্যে ৩০০ বস্তা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলাম। হিমাগার পর্যন্ত আলু পৌঁছাতে এবং হিমাগার ভাড়া দিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ২২ টাকা। এখন বিক্রি করছি সেই আলু ১৯ টাকা কেজি দরে। এতে আমার অন্তত কেজিতে ৩ টাকা লোকসান হচ্ছে ।

 

এদিকে নগরীর সাহেব বাজারের আলু ব্যবসায়ী মাজদার রহমান জানান, পাইকারী বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২১-২২ টাকা দরে। তবে সেগুলো গড় পড়তায় বিক্রি হচ্ছে। কাউকে বেছে নিতে দেওয়া হয় না। আর সেই আলু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৪-২৮ টাকা কেজি দরে।

 

এ বাজারের ক্রেতা নাজেরুল ইসলাম বলেন, ‘আলুর দাম নাকি স্টোরে কম। কিন্তু আমাদের তো ঠিকই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তার পরেও সবজির মধ্যে আলুর দামই একটু কম আছে। কিন্তু স্টোরের চেয়ে কেজিতে এক-দুই টাকা বেশি থাকলেও ভালো হত। সেটি না হয়ে কেজিতে নাকি ৪-৮ টাকা বেশি নিচ্ছে। যার কারণে আমারা সাধারণ ক্রেতারা কম দামের সুফল তেমন পাচ্ছি না।’

 

রাজশাহীর কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোশিয়েশন সূত্র মতে, চলতি বছরে জেলার ৩৩টি হিমাগারে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত মজুদ রয়েছে প্রায় চার লাখ বস্তা আলু। এসব আলু যেসব চাষি বা ব্যবসায়ী সংরক্ষণ করেন, তাঁদের অধিকাংশকেই বস্তা প্রতি একটা দাম ধরে অন্তত অর্ধেক টাকা ঋণ দেওয়া হয়। অনেক চাষি বা ব্যবসায়ী সেই ঋণ গ্রহণ করেন স্টোরেজ থেকে। আর স্টোরেজ মালিক সেই আলু মর্গেজ রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। লোকসান হলে ঋণ পরিশোধেও সমস্যায় পড়বেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা।

 

রাজশাহীর রহমান কোল্ড স্টোরেজের মালিক ও রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোশিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমার ৫টি স্টোরে এবার প্রায় সাড়ে চার লাখ বস্তা আলু সংরক্ষণ হয়েছিল। কিন্তু এখনো মজুদ রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ বস্তা আলু। তবে মজুদকারী চাষি ও ব্যবসায়ীরা এবারও আলু কিনে লোকসানের মুখে পড়েছেন।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট