মোঃ ফয়সাল আহমেদ, ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকা: ২০২৬ সালের ১৪তম সাউথ এশিয়ান গেমসের তায়কোয়ানডো জাতীয় দলের কোচ রাবির সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান চঞ্চল (৫০)। যিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের উপ-পরিচালক, বর্তমানে গুরুতর বিতর্কের মুখে। তিনি গত ২ মার্চ ২০২৫ তারিখে রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানায় দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টার মামলার ৪২ নম্বর আসামি। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, মোঃ কামরুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীরা ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের উপর দেশীয় অস্ত্র, লাঠি সোটা, রামদা, হাসুয়া, চাপাতি, ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালান।
অভিযোগ রয়েছে, এই হামলায় মোঃ আমানুল্লাহ আমান (২২) গুরুতর আহত হন। এই ঘটনার পর থেকেই কোচ কামরুজ্জামানকে “ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ কর্মকাণ্ডে জড়িত” থাকার অভিযোগ আনা হচ্ছে। যদিও তিনি বর্তমানে এই মামলায় অভিযুক্ত, তবুও তিনি কোন শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই গেমসের প্রস্তুতি ক্যাম্পের দায়িত্বে রয়েছেন? পত্রের মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন মেধাবী তায়কোয়ানডো খেলোয়াড়রা বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশন অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক লে.ক এরশাদুল হক বরাবর । এর মধ্যেই বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশন (অ্যাডহক কমিটি)-এর সহযোগিতায় জাতীয় দলের কোচ কামরুজ্জামান চঞ্চল এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় দিপু চাকমা ফ্যাসিবাদ বলে আওয়াজ তুললে তাকে নানা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অন্যায়ভাবে ক্যাম্প থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে, জাতীয় দলের একাধিক খেলোয়াড় ক্যাম্প থেকে পদত্যাগ করেছেন। বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বরাবর দেওয়া পদত্যাগপত্রে খেলোয়াড়রা স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, “কোচ মোঃ কামরুজ্জামান চঞ্চল ফ্যাসিব্যাদী আওয়ামী লীগ কর্মকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে আমরা কোন ফ্যাসিবাদপন্থী, অন্যায় বা রাজনৈতিক প্রভাবিত ব্যাক্তির অধীনে প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে রাজি নই।” খেলোয়াড়দের পদত্যাগের কারণ হিসেবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দিপু চাকমার অন্যায় বহিষ্কারের পাশাপাশি অ্যাডহক কমিটির ছাত্র প্রতিনিধি মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং মোঃ ইলিয়াসকে অযৌক্তিক কারণে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত এবং রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগে অভিযুক্ত একজন কোচের অধীনে জাতীয় দলের প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাওয়া নিয়ে তায়কোয়ানডো ক্রীড়া মহলে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে, যা ১৪তম সাউথ এশিয়ান গেমসের তায়কোয়ানডো দলের প্রস্তুতির উপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিতর্কিত কোচ এবং ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের এমন কঠোর অবস্থান ক্রীড়াঙ্গনে ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্বের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে।#