মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহী সড়ক ও জনপথ (সওজ) ভবনে শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্রের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ ঠিকাদারদের অভিযোগ, নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন ঝিনুক ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সড়ক উপ-বিভাগ-১ আব্দুল মান্নাফ আকন্দের মদদে এ সিন্ডিকেট কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সচেতন মহল অভিযোগ করে বলেন পছন্দের ঠিকাদারদের অনিয়মের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হচ্ছে এবং আওয়ামী সমর্থক ঠিকাদারদের বেছে নেওয়া হচ্ছে। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন অন্যরা। এমনকি টেন্ডার সিডিউল বিতরণ ও কার্যাদেশ বাস্তবায়নে কারচুপির কথাও উঠে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক দাবি করেন, “তারা দুজন যোগদানের পর থেকে সওজের প্রায় সব টেন্ডারই কারচুপির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। পছন্দের ঠিকাদারদের হাতে টেন্ডার সিডিউল গোপনে সরবরাহ করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “গোদাগাড়ীর বিজয়নগর সড়ক, তানোর-কাশিমবাজার সড়ক ও ড্রেন নির্মাণে অনিয়মের প্রমাণ সরেজমিন তদন্তে মিলবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, তানোর-কাশিমবাজার সড়কের কার্যাদেশ ১৫ শতাংশ টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন রাজশাহীর রজব আলী নামের এক ব্যক্তি। ওই কাজ আবার বিক্রির মাধ্যমে রহনপুরের বাবুর হাতে গেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার আহ্বানের পর আগ্রহী ঠিকাদাররা সিডিউল কিনতে গেলে বলা হয়—“এখনো দপ্তরে আসেনি।” পরে সিডিউল গোপনে নির্দিষ্ট ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করা হয়। ফলে কাজ পায় একই গোষ্ঠীর ঠিকাদাররা।
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী সড়ক সংস্কারের আগে সাইনবোর্ড টানানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হয়নি। গত ১৫ জুন বৃষ্টির মধ্যে তানোর-কাশিমবাজার সড়কে কার্পেটিং কাজ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময়ে কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না এবং কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। এলজিইডির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সড়কের বেড ঠিকমতো প্রস্তুত না করে বৃষ্টির মধ্যে কার্পেটিং করায় অল্প সময়েই সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে।”
অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন ঝিনুক বলেন, “কেউ অবৈধ সুবিধা না পেয়ে অপপ্রচার করছে।” একইভাবে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ আকন্দ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কার্যাদেশ বেচাকেনার সুযোগ নেই। শতভাগ কাজ বুঝে নেওয়ার পরই বিল পরিশোধ করা হবে।” এ বিষয়ে স্থানীয়রা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।#