1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Rokon :
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
তানোর কৃষি কর্মকর্তা স্টেশনে থাকেন না, বদলি আদেশ রোহিত হয়ে ফের আলোচনায় পবায় নিজ উদ্যোগে রাস্তা সংস্কারে উদ্যোক্তা একেএম শামসুল ইসলাম উজ্জ্বল চন্দ্রিমা এলাকা থেকে র‍্যাব-৫ কর্তৃক ৬ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার রাকসু নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে রাবির আইন-শৃঙ্খলা সভায় পুলিশ কমিশনার রূপসায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত ‎ ‎ শ্যামনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা চারঘাটে মায়ের ওপর অভিমান করে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা, পরিবারে শোক রাজশাহীতে সওজের অস্থায়ী কর্মচারীদের ১ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন রাণীশংকৈলে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শিবগঞ্জে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলছে

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্ক

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৩০ মে, ২০২২
  • ৩৯৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

ছবি: আবুল কালাম আজাদ

 

# আবুল কালাম আজাদ……………………………..

রাজশাহীর সিল্ক নামটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে অনিন্দ্য সুন্দর এক শাড়ির কথা। তুঁত গাছ থেকে পাওয়া সূক্ষ্ম রেশম সুতো দিয়ে তৈরি রাজশাহীর সিল্কের শাড়ির জনপ্রিয়তা ছিল বিদেশেও। সিল্ক কাপড়ের প্রধান উপাদান রেশমকে ঘিরে এ অঞ্চলের রয়েছে সুদীর্ঘ আর উজ্জ্বল অতীত।

 

ঔপনিবেশিক আমল থেকেই বাংলায় শুরু হয় রেশম চাষ। ১৯০৫ সালে রেশম শিল্পের বিকাশের প্রতিষ্ঠা করা হয় দু’টি বীজভান্ডার। ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ সরকার রেশমের শিল্পকে তদারক করার জন্য আলাদা একটি বিভাগ চালু করে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় বাংলার রেশম প্রধান অঞ্চল ভারতের অংশে চলে যায়। অল্প কিছু অঞ্চল পড়ে এপার বাংলায়। এর মধ্যে পাকিস্তান সরকারের উদাসীনতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের রেশমশিল্প প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় ব্যক্তিমালিকানায় কিছু উদ্যোক্তা রেশম শিল্পের হাল ধরতে এগিয়ে এলে লোকসানের মুখে পড়তে হয় তাদের। পরে অবশ্য পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সংস্থার অধীন রংপুর, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০টি রেশম বীজভান্ডার স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম রাজশাহী সিল্ক ফ্যাক্টরি।

 

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর নতুন করে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে রেশম শিল্প। রেশম শিল্পকে সমৃদ্ধ করার জন্য ১৯৭৪ সালে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠা করা হয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সেরিকালচার বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর  রাজশাহী সিল্ক ফ্যাক্টরি এ বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কারখানাটিতে ১০০টি রিলিং মেশিন, ২৩টি শক্তিচালিত ও ১০টি হস্তচালিত তাঁত স্থাপন করে  কার্যক্রম শুরু করা হয়। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮০ সাল নাগাদ ১০০টি রিলিং মেশিনকে ২০০টিতে ও ২৩টি শক্তিচালিত তাঁতকে ৪৩টিতে উন্নীত করা হয়।

 

৮০’র দশকের শেষ দিকে দেশে তিন হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে তুঁত চাষ হতো। সে সময় রেশম খাতের মাধ্যমে দেশের ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ রেশম বোর্ড গঠন, রাজশাহীতে প্রধান কার্যালয় স্থাপন, রেশম বোর্ডের সঙ্গে রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট যুক্তকরণ এবং রেশম শিল্পের অবকাঠামো ও নির্র্মিত কারখানাসহ সব স্থাপনা রেশম বোর্ডের অধীন চলে আসাতে গতি পায় শিল্পটি। শুরুতে আটটি জেলার মধ্যে রেশম শিল্পের কার্যক্রম সীমিত থাকলেও পরে নব্বইয়ের দশকে ৪০ জেলায় রেশম বোর্ডের কার্যক্রম সমপ্রসারণ করা হয়।

 

মূলত এ সময়টিই এ অঞ্চলে রেশম উৎপাদনের স্বর্ণযুগ হিসেবে বলা হয়। বাংলাদেশের রেশমরাজ্য হিসেবে পরিচিত রাজশাহীতে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে মোহাম্মদ সদর আল-এর হাত ধরে নতুন করে যাত্রা শুরু হয় রেশম শিল্পের।

 

২০১৩ সালের  বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং সিল্ক ফাউন্ডেশন এই ৩টি প্রতিষ্ঠানকে একীভূতকরণের মাধ্যমে পুনর্গঠিত হয় ‘বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড’। এই শিল্পকে ধরে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড।

 

তবে রেশম চাষের উপযোগী আবহাওয়া ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্ক। চাহিদা অনুযায়ী জোগান না থাকায় বিদেশ থেকে সুতা আমদানি করতে হচ্ছে সুতার। দেশের রেশম নগরী হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর বিসিক শিল্প এলাকায় হাতেগোনা কয়েকটি কারখানা চালু আছে। নানা রকম প্রতিকূলতার মধ্যে রেশম শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কাজ করছে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো। এই শিল্পের সঙ্গে বিনিয়গকারীদের আগ্রহী করে তুলতে দেশে-বিদেশে ফ্যাশন শোসহ নানা ধরনের আয়োজন করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

রেশম আবিষ্কারের কথা:-

রেশমের আবিষ্কার নিয়ে আছে মজার গল্প। চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াসের রচনা ও চীনের ইতিহাস থেকে জানা যায়, সম্রাট হুয়াং তাইয়ের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী সাই লিং শি-এর হাতেই রেশমের আবিষ্কার। সম্রাজ্ঞী লিং শি একদিন বাগানে তুঁত গাছের নিচে বসে চা পান করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ তার একটি কোকুন (রেশম গুটি) চায়ের মধ্যে পড়ে। যখন তিনি কোকুনটি চায়ের মধ্য থেকে তুলতে গেলেন তখন তিনি অবাক হয়ে লক্ষ করেন কোকুনটি খুলতে শুরু করেছে এবং এ থেকে একধরনের সুতোর মতো পদার্থ বেরিয়ে আসছে।

 

এবার তিনি খুঁজতে লাগলেন এই রহস্য। তিনি আবিষ্কার করলেন তুঁত গাছে বাসা বেঁধেছেন অসংখ্য রেশম পোকা। রেশম পোকাদের তৈরি কোকুন থেকে রানি খোঁজ পেলেন সিল্ক সুতোর। এরপরই রানি রেশম চাষাবাদ শুরু করেন। এই কারণে সিল্কের দেবীও বলা হয় তাকে। রেশম আবিষ্কারের পর এর মূল্য বুঝতে পেরেছিল চীনারা। সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে রেশমের রহস্য প্রায় তিন হাজার বছর গোপন রাখে চীন। তখন ৩০টি দেশের মধ্যে চীনাদের ব্যবসা থাকলেও রেশম উৎপাদিত পণ্য পরিবহন ছিল একেবারেই নিষিদ্ধ। সিল্ক রোড উন্মুক্ত হওয়ার পর চীনের প্রাচীর পেরিয়ে এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে রেশম।

 

চীন থেকে যে পথে সিল্ক নিয়ে যাওয়া হতো সেই পথের নাম হয়ে গেল সিল্ক রোড। ইতিহাসের বিখ্যাত সিল্ক রোড দিয়ে পশ্চিমা দেশসমূহে সিল্ক নিয়ে যাওয়া হতো। বিনিময়ে সেসব দেশ থেকে সোনা, রুপা, ঘোড়া, ঊল ইত্যাদি নিয়ে আসা হতো। সেই সময় সোনার চেয়েও মূল্যবান ছিল সিল্ক। পশ্চিম চীন থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এই সিল্ক রোডের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৪ হাজার মাইল।#

এডিট: আরজা/২

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট