
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীর হেতম খাঁ-তে অবস্থিত মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক একরামুল হককে মব সৃষ্টি করে পদত্যাগ করানোর জন্য কমলমতি শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়েছেন অত্র বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম বিষয়ক শিক্ষক তরিকুল ইসলাম। সাথে রয়েছেন সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন ও সোহানা পারভীন। এধরণের কর্মকান্ডে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে বিদ্যালয়ের শৃংখলা ভেঙ্গে পড়েছে।
রোববার বেলা ১১টার দিকে অত্র বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করতে দেখা যায়। ব্যানারে বর্তমান শিক্ষার্থী, পুরাতন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ এর আয়োজনে লেখা থাকলেও মানববন্ধনে পুরাতন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাউকে দেখা যায়নি। সকল শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে এই মানববন্ধনে অংশ নেয়। এরপর অত্র বিদ্যালয়ের একটি ক্লাস রুমে পড়ালেখা বন্ধ করে শুরু হয় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থআত্বসাৎসহ নানা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অত্র বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম বিষয়ক শিক্ষক তরিকুল ইসলাম। তিনি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ন ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। পরে তার লিখিত বক্তব্যের উপরে সাংবাদিকরা ক্লাস বর্জন করে কেন ক্লাস রুমে সংবাদ সম্মেলন, মব সৃষ্টি কেন এবং এ সকল বিষয়ে শিক্ষাবোর্ড, মাউসি, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও বিদ্যালয়ের সভাপতি বরাবরে কোন অভিযোগ হয়েছে কিনা প্রশ্ন শুরু করলে তরিকুল ইসলাম বলেন, সকল স্থানে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। সভাপতি প্রধান শিক্ষকের পক্ষে হয়ে কাজ করছে বলে তিনি জানান। ধারণা করা হচ্ছে ধর্মশিক্ষক তরিকুল ইসলাম এসকল অপকর্মের মূল হোতা।
ক্লাস বর্জনের বিষয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে নারাজ। এরপর সাংবাদিকার মব সৃষ্টির বিষয়ে কথা বলতে গেলেই তার পাশে থাকার তার দোসররা সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হলে এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয় এবং সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন বর্জন করে চলে যায়। তবে সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রধান শিক্ষককে তার কার্যালয় চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে। সেইসাথে প্রধান শিক্ষকের সামনেই শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের আপত্তিকর স্লোগান দিতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে রাাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একরামুল হক বলেন, সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম শিক্ষক তাঁর নামে মিথ্যাচার করেছেন। সেইসাথে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে নানা প্রকাণ্ডা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, ধর্ম শিক্ষক প্রাইভেট পড়ান। এছাড়া তিনি প্রতিদিন দেরী করে বিদ্যালয়ে আসেন। শুধু তাই নয় তিনি ধর্ম বিষয়ক শিক্ষক হলেও প্যান্ট শার্ট পড়ে বিদ্যালয়ে আসেন। তাঁকে পায়জামা পাঞ্জাবী পড়তে বলায় তিনি তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছেন।
প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, বিদ্যালয়ে চলতি মাসের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ সম্পুর্ন করে জমা দেয়ার জন্য সরকারীভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এ নিয়ে তিনি সকল প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে তপশিল ঘোষনা করেন। এটা বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানেন। তপশিল শেষে মনোনয়ন উত্তোলন ও জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। তবে এই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ গঠন তিন মাসের মধ্যে স্থগিত করেছেন কর্তৃপক্ষ। এজন্য এ নিয়ে তিনি আর কোন কথা বলেননি। কিন্তু এটাকে পুঁজি করে নিজের খায়েশ মেটাতে তাঁর বিরুদ্ধে এই মিথ্যাচার করছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, মব সৃষ্টি করে জবরদস্তী করা সরকারীভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। এরপরেও ধর্মশিক্ষক কমলমতি শিশুদের উস্কিয়ে দিয়ে তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা ও তার বিরুদ্ধে অপমানজক স্লোগান ও বক্তব্য দেয়াচ্ছেন জানান তিনি। তিনি তরিকুল ইসলামসহ এর সঙ্গে জড়িত সকলের বিচার দাবী করেন। সেইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান প্রধান শিক্ষক।#