
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর কর্নাহার থানা, দারুসা তিসলাই গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিরীহ ব্যক্তিকে নারীকে দিয়ে ফাঁসানো, মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী নারী ও মো. সাইদুর রহমান ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মোসা. রোজিনা খাতুন বলেন, রাতের বেলা রফিক, জাহাঙ্গীর, মাসুদ ও সাইদুল আমার বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে আমাকে মারধর করে এবং জোর করে বলে, ‘তোর সঙ্গে সাইদুরের সম্পর্ক আছে এটা বলবি।’ আমার সাথে সাইদুর রহমানের কোন সম্পর্ক নেই, রফিক, জাহাঙ্গীর, মাসুদ এর জোর করে এই সব মিথ্যা অপবাদ দিয়ে টাকার ধান্দা করছিল এবং তারা বলে আমাকে তুমি যদি মিথ্যা করে বলো সাইদুর এর সাথে সম্পর্ক আছে তাহলে সাইদুরের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিব। তোমার তো স্বামী নেই। না বললে তারা আমাকে হুমকি দেয় এবং আমাকে অনেক মারধর ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে। পরে আমি হাসপাতালে ভর্তি হইয়ে একটু সুস্থ হওয়ার পরে থানায় মামলা করতে চাই। কিন্তু মামলা না কিয়ে একটা অভিযোগ নেই এবং আমার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি মুল ছাড়পত্র পুলিশ নিয়ে নেই। পুলিশ আমাকে কোন আইনি সহযোগিতা করেনি। আমাকে যারা নির্যাতন এবং জখম করেছে তাদের আমি বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে সাইদুর রহমান জানান, গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে কর্নাহার এলাকায় রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মাসুদ, সাইদুল ও জিন্নাতের নেতৃত্বে লিটন, শফিকুল, মিঠু এবং স্বপন নামের চারজন তার উপর হামলা চালায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা তাকে ধরে নিয়ে যায় জিন্নাতের বাড়ির সামনে এবং সেখানে লাঠি ও হাত দিয়ে মারধর করে।
তিনি আরও বলেন, মারধরের পর আমাকে মোসা. খাতুন নামের এক মহিলার বাড়িতে যেতে বলে। আমি না যেতে চাইলে তারা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে, এসআই শাহ আলম বলেন, গ্রামের লোকজন মীমাংসা করে দেবে, আপনি সেখানেই যান। এরপর গ্রাম্য সালিশে গ্রামের প্রধান আব্দুল গফফারের নেতৃত্বে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় বলে অভিযোগ করেন সাইদুর।
ভুক্তভোগী আরও বলেন, জাহাঙ্গীর, মাসুদ ও রফিক আমার চাচাতো ভাই। জমি নিয়ে তাদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। আগেই তারা হুমকি দিয়েছিল ‘তোকে পরে দেখে নেবো।’ সেই ধারাবাহিকতায় আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের একজন শফিকুল বলেন, আমি রাতে দোকান থেকে বাড়ি যাওয়া সময় জাহাঙ্গীর, মাসুদ,রফিক এরা আমাকে বলে চোর ধরব। হঠাৎ চোর চোর বলে দৌড়াতে থাকে । কাছে যেয়ে দেখি তালের রস খেয়ে আসছে সাইদুর ভাই। তখন সাইদুর ভাইকে তার ভাইএরা ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি তখন ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। তবে সাইদুরকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে এসআই শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোজিনা নামে এক মহিলা অভিযোগ করেছে। এরপর কথা এড়িয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি। কর্ণহার থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানিনা। জানার পরে বলতে পারবো। এ বিষয়ে ডিসি দীন মোহাম্মদ বলেন, অভিযোগ থাকার পরেও যদি কেউ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে ভুক্তভোগীরা আমাদের কাছে আসতে পারে। আমরা বিষয়টি দেখব এবং যে কর্মকর্তা এর দায়িত্বে আছে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#