মাহাবুর রহমান মনি, বাগমারা থেকেঃ বাগমারায় ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসে লাশ হলো শিশু নাসিয়া খাতুন (১০)। নদীতে ডুবতে থাকা ফুফাতো বোনকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেই ডুবে মারা গেল সে। দীর্ঘ তিন ঘণ্টার চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তার লাশ উদ্ধার করে। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মোহনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু নাসিয়া খাতুন পার্শ্ববর্তী পুঠিয়া উপজেলার পীরগাছা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে।
ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শিশু নাসিয়া খাতুন ঈদ উপলক্ষ্যে ফুফুর বাড়ি বাগমারার মোহনপুর গ্রামে বেড়াতে আসে। আজ দুপুরে সমবয়সী ফুফাতো বোনের সঙ্গে বাড়ির পাশে ফকিন্নি নদী দেখতে যায় সে। নদীর ধার দিয়ে হাঁটার সময় তার ফুফাতো বোন হঠাৎ পা পিছলে নদীতে পড়ে যায়। এ সময় নাসিয়া পানিতে ঝাঁপ দিয়ে নেমে বোনকে পাড়ে পৌঁছে দিতে পারলেও নিজে আর পানি থেকে উঠতে পারেনি। একপর্যায়ে নদীতে তলিয়ে যায় সে। এসময় উদ্ধার হওয়া ফুফাতো বোনের কান্নাকাটি শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজন নদীর পানিতে নেমে নৌকা ও জাল নিয়ে নাসিয়াকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তাঁরা ব্যর্থ হলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। পরে রাজশাহী শহর থেকে ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নদী থেকে অচেতন অবস্থায় শিশু নাসিয়াকে উদ্ধার করে তাঁরা।
এসময় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই এলাকার বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিশু নাসিয়া খাতুন নিজের জীবন দিয়ে বোনকে বাঁচিয়েছে। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। লাশ বাবার বাড়ি পুঠিয়ার পীরগাছা গ্রামে পাঠানো হয়েছে।
উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া বাগমারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অধিনায়ক আলতাফ হোসেন বলেন, নদীতে স্রোত বা পানি বেশি ছিল না। ঘটনাস্থলের পাশ থেকেই শিশুকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।#