কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি………………………………………………
অযত্নে আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আহসানগঞ্জ রেলস্টেশনের কোটি টাকার সম্পদ। সঠিক রক্ষাণা -বেক্ষণের অভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে রেল লাইন ও রেললাইনের সরঞ্জামসহ মূল্যবান জিনিস। সেই সঙ্গে রেলওয়ের বিস্তীর্ণ জায়গা বেদখল হয়ে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে ঘরবাড়ী, মাছের আড়ত এবং মার্কেট।
জানা যায়, প্রায় চল্লিশ বছর আগে আত্রাই পুরোনো স্টেশন থেকে আত্রাই নদীর ঘাট (বর্তমানে আহসানগঞ্জ ) স্টেশন পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি লাইন নির্মাণ করা হয়। লাইন চারটি আহসানগঞ্জ স্টেশনের নীচে পূর্ব দিকে অবস্থিত তিনটি লাইন আত্রাই নদীর ঘাট পর্যন্ত গেছে। ট্রেনের ওয়াগনে করে এ তিন লাইন দিয়ে পাটের বেল, পোশাক, সার ও লালিগুড় সহ গোবাদিপশুর খাদ্যসহ বেশকিছু পণ্য আনা-নেওয়া করা হতো।
অপর লাইনটি সরাসরি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের(বিএডিসি) তিন হাজার মেট্রিক টন ধারন ক্ষমতার সার গুদামে প্রবেশ করেছে। এ লাইন দিয়ে ওয়াগনে করে গুদামে সার যেতো। সরাসরি খুলনা ও যশোর থেকে ট্রেনে করে গুদামে আনা হতো সার। স্থানীয় ভর-তেতুঁলিয়া গ্রামের আব্দুল আলী ও আব্দুর রশীদ পাটোয়ারী বলেন, বছরের পর বছর পড়ে থাকায় লাইনে মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। রেল লাইন রক্ষায় রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।
এ ছাড়া রেলের স্থাপনা সরিয়ে ফেলে সরকারি ভাবে মার্কেট করা হলে রেল রাজস্বর পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। লাইনের উপর গত ত্রিশ বছর ধরে স্থাপনা গড়ে বসবাস করছেন নাটোরের নলডাঙ্গা গ্রামের আলম হোসেন, তিনি বলেন,আমরা অনেক বছর আগে গ্রাম থেকে এসে এখানে বসবাস করছি ।বর্তমানে পরিবারের সদস্য সংখ্যা আটজন। সবাই পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার মতো এখানে প্রায় শতাধিক পরিবার থাকে। এখন পর্যন্ত তাদের কেউ কিছু বলেনি। তবে উচ্ছেদ করলে চলে যেতে হবে।
ভরতেতুঁলিয়া গ্রামের বয়জেষ্ঠ্য রামপদ শীল বলেন, আত্রাই পুরাতন স্টেশন থেকে আত্রাই নদী বা বর্তমান আহসানগঞ স্টেশন পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈঘ্যের চারটি লাইন আছে। যেখানে একটি লাইনে ট্রেনের ওয়াগনে করে আত্রাই বিএডিসি গুদামে সার আসতো। বাকি তিন লাইন নদীর ঘাট পর্যন্ত গেছে। এসব লাইন দিয়ে পাট ও লালিগুড় সহ বিভিন্নন পণ্য আনা-নেওয়া হতো। দীঘদিন পড়ে থাকায় লাইনে মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে।
আত্রাই স্টেশন মাষ্টার শ্রী সুব্রত কুমার দাশ বলেন, প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর ধরে প্রায় দেড় কিলোমিটার রেলাইন পড়ে আছে। এত ফিসপ্লেট, নাট-বোল্ট, রেলের নীচের কাঠ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এবং মাটির নীচে চাপা পড়ে নষ্ট হচ্ছে। কোটি টাকার রেল লাইনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি রেলের জায়গা দখল করে যে যার মতো স্থাপনা নির্মাণ করেছে। বিষয়টি রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান অফিসে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।#