1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাবনা-৪ ঈশ্বরদী আসনে ৪জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র দাখিল ঈশ্বরদীর অরনকোলা হারুখালী ধানক্ষেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার গাজীপুর-৫ আসনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল ঠাকুরগাঁও-১ আসনে মনোনয়ন জমা দিলেন মির্জা ফখরুল ও জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন ​ধর্মীয় বৈচিত্র্য ও গণতান্ত্রিক চেতনা: এক শাশ্বত ইসলামী ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ খুলনা ৪ আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ লালপুরে প্রাক্তন স্ত্রীকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে গলা কেটে হত্যা ১৭ তম খতমে খাজেগান ইছালে সওয়াব ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত আত্রাইয়ে তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে বিএনপির বর্ণাঢ্য আনন্দ র‍্যালি ভাঙ্গুড়া পাবনায় মেধা বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ 

​ধর্মীয় বৈচিত্র্য ও গণতান্ত্রিক চেতনা: এক শাশ্বত ইসলামী ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৫৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

_____ড. মোঃ আমিনুল ইসলাম৥ ​

ভূমিকা: ​সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে বৈচিত্র্যই পৃথিবীর সৌন্দর্য। মহান আল্লাহর অসীম সৃষ্টিজগতে যেমন নানা বর্ণের ফুল ও নানা সুউচ্চ পর্বতমালা রয়েছে, তেমনি মানুষের চিন্তাধারা ও বিশ্বাসের জগতেও রয়েছে ব্যাপক ভিন্নতা। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে এই বৈচিত্র্যকে অস্বীকার তো করেইনি, বরং একে আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। “পৃথিবীর সব মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি এবং সব ধর্মের মৌলিক শিক্ষার উৎসও মূলত মহান স্রষ্টার পক্ষ থেকে আসা মানুষের জন্য হেদায়েত”—এই গভীর উপলব্ধি যখন মানুষের হৃদয়ে প্রোথিত হয়, তখন পরধর্মের ওপর চড়াও হওয়া বা হিংসা পোষণ করার কোনো নৈতিক ভিত্তি থাকে না।

​ধর্ম দর্শনের আলোকপাত: তাওহীদের শিক্ষা ও বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি ​ইসলামী দর্শনের মূল ভিত্তি হলো ‘তাওহীদ’ বা স্রষ্টার একত্ববাদ। এই তাওহীদ আমাদের শেখায় যে, যেহেতু সব মানুষের স্রষ্টা এক, তাই মানবজাতির আদি উৎসও এক। ​কুরআনের ঘোষণা: পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে— “হে মানবজাতি! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে এবং তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারো।” (সূরা হুজুরাত: ১৩)। এখানে বিভক্তি বা বিভিন্ন গোত্রের উদ্দেশ্য সংঘাত নয়, বরং পারস্পরিক পরিচিতি ও সৌহার্দ্য। ​

জোর-জবরদস্তির অনুপস্থিতি: ইসলামে স্পষ্ট নীতি হলো— “দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই।” (সূরা বাকারা: ২৫৬)। এই আয়াতটি ধর্মীয় গণতন্ত্রের এক কালজয়ী সনদ। মহান আল্লাহ মানুষকে বিচারবুদ্ধি দিয়েছেন এবং পথ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছেন। যদি জোর করে কাউকে ধর্ম পালন করতে হতো, তবে পৃথিবীতে মানুষের পরীক্ষা বা স্বাধীন ইচ্ছার কোনো গুরুত্ব থাকতো না। ​

মনস্তাত্ত্বিক দিক: শ্রেষ্ঠত্বের দম্ভ বনাম আধ্যাত্মিক প্রশান্তি ​মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে দেখা যায়, অন্যের ওপর চড়াও হওয়ার মূল কারণ হলো ‘নার্সিসিজম’ বা আত্মমুগ্ধতা এবং ‘ইন-গ্রুপ বায়াস’ (In-group Bias)। যখন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মনে করে যে কেবল তারাই সত্যের একমাত্র ইজাদার এবং অন্য সবাই ঘৃণার পাত্র, তখন সেখানে মানসিক বিকার ও উগ্রবাদের জন্ম হয়। ​ইসলামী মনস্তত্ত্ব বা ‘তাসাউফ’ আমাদের শেখায় ‘আদব’ বা শিষ্টাচার। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ছিল এর জীবন্ত উদাহরণ। তিনি অমুসলিমদের সাথে যে উদার আচরণ করেছেন, তা ছিল মূলত মানুষের প্রতি মানুষের সহজাত শ্রদ্ধাবোধের বহিঃপ্রকাশ। একজন প্রকৃত মুমিনের মনস্তত্ত্ব হবে প্রশস্ত; তিনি অন্যের ভুল বা ভিন্নমত দেখলে চড়াও না হয়ে দয়া ও যুক্তির পথে চলবেন। কারণ, আক্রমণাত্মক মানসিকতা মানুষের ভেতরের অহংকারকে বাড়ায়, যা আধ্যাত্মিক উন্নতির অন্তরায়। ​

জগতে অসংখ্য ধর্ম: একটি আধ্যাত্মিক গণতন্ত্র ​আপনার সুন্দর ভাষায়, “জগতে অসংখ্য ধর্ম মানে গণতান্ত্রিকতা”। ইসলামের দৃষ্টিতেও এটি সত্য। মদিনা সনদের দিকে তাকালে আমরা দেখি, সেখানে ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমান—সবাইকে একটি অভিন্ন রাজনৈতিক উম্মাহ বা সম্প্রদায় হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং প্রত্যেকের ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল। ​

মতান্তর বনাম মনান্তর: নানা মণির নানা মত থাকবে—এটিই পৃথিবীর সৌন্দর্য। কিন্তু মতের অমিল যেন মনের অমিল বা শত্রুতার কারণ না হয়। ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাস্যদের গালি না দিতে (সূরা আনআম: ১০৮), যাতে তারাও অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি না দেয়। এটি এক উচ্চমানের গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার।

​বিবেক ও জবাবদিহিতা: গণতন্ত্রে যেমন প্রতিটি মানুষের ভোটের মূল্য আছে, ইসলামেও প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত আমল ও চিন্তার জন্য সে আল্লাহর কাছে সরাসরি দায়ী। এই ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধই গণতন্ত্রের প্রাণ। ​ইসলামের সামাজিক ন্যায়বিচার ও সহাবস্থান ​ইসলামী ইতিহাসে দেখা যায়, খেলাফতের অধীনে অমুসলিমরা (জিম্মি) পূর্ণ নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করতেন। ওমর (রা.)-এর সময় জেরুজালেমের গির্জার চাবি মুসলমানদের হাতে থাকার পরেও তিনি সেখানে নামায পড়েননি এই ভয়ে যে, ভবিষ্যতে মুসলমানরা এটাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে গির্জা দখল করতে পারে। এই যে পরমতসহিষ্ণুতা, এটাই ইসলামের আসল সৌন্দর্য। পরধর্মের ওপর চড়াও হওয়া মানেই হলো রাসুল (সা.)-এর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া। ​

উপসংহার: ​পরিশেষে বলা যায়, ধর্ম মানুষকে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে আসেনি, বরং এক পরম সত্যের সাথে যুক্ত করতে এসেছে। পৃথিবীর সব মানুষ যেহেতু এক আল্লাহর সৃষ্টি এবং এক আদমের সন্তান, সেহেতু ভ্রাতৃত্বের বন্ধনই হওয়া উচিত আমাদের প্রধান পরিচয়। ড. মোঃ আমিনুল ইসলাম, আপনার এই চিন্তাধারাটি ইসলামের সেই প্রকৃত মর্মার্থকেই ধারণ করে, যা উগ্রতা বর্জন করে শান্তির জয়গান গায়। বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য খুঁজে নেওয়া এবং একে অপরের অস্তিত্বকে মর্যাদা দেওয়াই হলো আজকের অশান্ত পৃথিবীর একমাত্র সমাধান। আমরা যদি এই মনস্তাত্ত্বিক ও ধর্মীয় উদারতা ধারণ করতে পারি, তবেই আমাদের গণতন্ত্র ও আধ্যাত্মিকতা স্বার্থক হবে!#

… লেখক একজন শিক্ষক কবি গবেষক ও প্রাবন্ধিক

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট