মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টুকে খাদ্য গুদামে লাঞ্ছিত ও অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে কামারগাঁ খাদ্য গুদামের মূল ফটকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ইউনিয়নের দুস্থ ও অসহায় জনগোষ্ঠীর (ভিডাব্লিউভি) প্রকল্পের আওতায় ৪৫৪ জন উপকারভোগীর মাঝে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা ছিল। সকাল ৯টার দিকে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম রাজা ও অন্যান্য সদস্যরা গুদাম থেকে চাল উত্তোলনের পর ইউনিয়ন পরিষদে এনে ওজন করলে শতাধিক বস্তায় ৩ থেকে ৫ কেজি করে চাল কম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টু বিষয়টি জানতে কামারগাঁ খাদ্য গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসিএলএসডি আতিকুর রহমানের কাছে গেলে, তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান বলে অভিযোগ। একপর্যায়ে গুদামের ভাড়াটিয়া মশিউর রহমান (পিতা: সিরাজ শেখ, গ্রাম-কামারগাঁ) চেয়ারম্যান মিন্টুকে স্যান্ডেল দিয়ে মারপিট করে লাঞ্ছিত করেন এবং গুদামের প্রধান ফটকে তালা মেরে তাকে কিছু সময়ের জন্য আটকে রাখেন।

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা গুদামের সামনে অবস্থান নেন। পরে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মলিউজ্জামান সজিব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টু বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে তোলা শতাধিক বস্তায় ৩/৪ কেজি করে চাল কম পাওয়া যায়। বিষয়টি জানতে চাইলে খাদ্য কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অপমান করেন। তার ভাড়াটিয়া মশিউর স্যান্ডেল খুলে আমাকে আঘাত করে এবং গেটে তালা মেরে আটকে রাখে। পরে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা এসে আমাকে উদ্ধার করেন। পরে ৬ বস্তা চাল জরিমানা হিসেবে ফেরত দেওয়া হয়।
অন্যদিকে অভিযুক্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, চাল একবার গুদাম থেকে বের হলে আমার কিছু করার থাকে না। চেয়ারম্যানই আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। তখন মশিউর আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। এমনকি চেয়ারম্যান আমাকে সবসময় হুমকি দিচ্ছেন। তবে তিনি কেন চেয়ারম্যানকে আটকে রাখেন এবং ৬ বস্তা চাল জরিমানা হিসেবে ফেরত দেন এই প্রশ্নে তিনি স্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মলিউজ্জামান সজিব বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন এটা নিয়ে লেখালেখি না করাই ভালো। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা অভিযুক্ত খাদ্য কর্মকর্তার বদলির দাবি জানিয়েছেন।#