মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি : চোখে অশ্রু, ঠোঁটে স্নিগ্ধ হাসি। আবেগে ভেসে গেলেন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি আর সাধারণ মানুষ। এমন এক আবেগঘন পরিবেশে সহকর্মী ও স্থানীয় মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বিদায় নিলেন তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তানোর উপজেলা প্রশাসনিক হলরুমে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অথচ আবেগমাখা অনুষ্ঠানে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আয়োজন করে তানোর উপজেলা অফিসার্স ক্লাব। একই অনুষ্ঠানে নবাগত ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কর্মরত নাঈমা খান।
অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। উপস্থিত সবাই বিদায়ী ইউএনওর কর্মনিষ্ঠা, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নেতৃত্বগুণের কথা স্মরণ করে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। নিজের বিদায়ী বক্তৃতায় কণ্ঠ ধরে রাখতে পারেননি লিয়াকত সালমান। অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, “ভালো থাকুক তানোর উপজেলার প্রতিটি মানুষ। আমার কর্মজীবনের সেরা সঞ্চয় হলো আপনাদের ভালোবাসা। সহকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে যে সহযোগিতা পেয়েছি, তা কখনো ভোলার নয়। অনিচ্ছাকৃতভাবে যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, তবে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।” তার এই আবেগঘন বক্তব্যে উপস্থিত অনেকেই অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি।
বিদায়ী ইউএনওকে ঘিরে তৈরি হয় বেদনার্ত পরিবেশ। একই মঞ্চে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেওয়া হয় নবাগত ইউএনও নাঈমা খানকে। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বলেন, “এই দায়িত্ব আমার কাছে কেবল প্রশাসনিক কাজ নয়; এটি হলো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক মহান সুযোগ। সবার সহযোগিতায় আমরা গড়ে তুলব উন্নত, মানবিক তানোর।” এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি এ বছর তানোরে যোগ দিয়েছিলেন লিয়াকত সালমান। স্বল্প সময়ের মধ্যেই সততা, আন্তরিকতা ও জনবান্ধব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি তানোরবাসীর কাছে হয়ে ওঠেন প্রিয় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু ১৮ সেপ্টেম্বরের বদলি আদেশে তিনি নতুন কর্মস্থল পুঠিয়া উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগ দিচ্ছেন।
পরে একইদিন সন্ধ্যা থেকে তানোর পৌরসভা, মুন্ডুমালা পৌরসভা, উপজেলা ভূমি কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকেও তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়।
তানোরের মানুষ আজ বিদায়ী ইউএনওকে একবাক্যে বলছেন— “কর্মস্থল বদল হতে পারে, কিন্তু আপনার প্রতি আমাদের ভালোবাসা চিরকাল অটুট থাকবে।#