ক্যাপশন- ভোলাহাট উপজেলায় গতকাল রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়ের কবলে পড়া কয়েকটি দৃশ্য।
# ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি …………………………………………..
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় ঝড়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রত্যক্ষ করা গেছে। রোববার রাত পৌনে ৯ টার দিকে ভোলাহাট উপজেলার উপর দিয়ে এ ঝড়বৃষ্টি বয়ে যায়। এতে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের এ ঝড়ে আম, কলা, ভুট্টাসহ কাঁচা-পাকা বাড়ি-ঘড়, দোকান-পাট ভেঙ্গে ও টিনের ছাউনি পর্যন্ত উড়ে যায়। এমনকি যুগ যুগ ধরে থাকা মোটা-তাজা বটগাছ সম্পূর্ণ উপড়ে ফেলে। এছাড়াও বনজ গাছ, রাস্তার ধারে লাগানো বিভিন্ন আম, মেহগনিগাছ ভেঙ্গে রাস্তায় পড়লে সাধারণের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে, ঝড় শেষে ভোলাহাট ফায়ার সার্ভিসের দল ঝড়ে পড়ে যাওয়া রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ সরিয়ে চলাচল স্বাভাবিক করে। বিশেষ করে আমবাগানে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়া আম গুলো ১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভোলাহাট কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা মোট ৩ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমির আম বাগানের মধ্যে ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমির আম বাগান ঝড়ের কবলে পড়ে। এতে প্রায় ৪০ শতাংশ আম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এছাড়া ভূট্টা প্রায় ১৮ লাখ, কলা প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ভোলাহাট সদর, গোহালবাড়ি ও দলদলী ইউনিয়নের ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। দলদলী ইউনিয়নে পোল্লাডাঙ্গা নামটোলা গ্রামের মোঃ মহবুল হক, মোসা. রেহেনা খাতুন, ঘোনটোলা গ্রামের মোঃ জালাল, মোসাঃ সেতারা, উলাডাঙ্গা গ্রামের মোঃ আব্দুল কাদির ঝড়ে আহত হয়। আম ব্যবসায়ী মো. সেলিম রেজা বলেন, ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে আম ব্যবসায়ীরা হতাশায় আছি।
আম ফাউন্ডেশন ভোলাহাট সূত্রে জানা যায়, ফাউন্ডেশন চত্বরে ১১০টি আড়ৎ ঘরের মধ্যে ৬০/৭০ টি ঘরের টিন ও বেড়া উড়ে গেছে। এতে কোটি টাকার মত ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভোলাহাট আম ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুনসুর আলী। এছাড়াও উপজেলায় আমের ব্যাপক ক্ষতির কথা তিনি নিশ্চিত করেন।
দলদলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ মোজাম্মেল হক চুটু বলেন, আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। টনের টন আম ঝরের কবলে পরেছে। এছাড়াও কাঁচা পাঁকা ঘর ভেঙ্গে গেছে। আম ও বনজ গাছ উপড়ে পড়েছে। ঘরের টিন উড়ে লোকজন আহত হয়েছে।
গোহালবাড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াসিন আলী শাহ্ বলেন, আমার ইউনিয়নে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘরের টিন-চাল উড়ে গেছে। শতবছর বয়সি বট গাছ উপড়ে গেছে। অনেক পাঁকা ঘরের ছাদ ফেটে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সুলতান আলী বলেন, ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ভূট্টা-কলার ক্ষতি হয়েছে। পড়ে যাওয়া আমগুলো নষ্ট না করে আচার করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ঝড়ে পড়া আমগুলিকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমানের তালিকা প্রক্রিয়া চলছে। তালিকা হাতে পেলে জেলা প্রসাশনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদাণ করা হবে বলে জানান।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ রাব্বুল হেসেন বলেন, আমি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলি প্রত্যক্ষ ঘুরে ঘুরে দেখেছি। ভোলাহাট উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি লক্ষ্য করা গেছে।#