
খুলনা প্রতিনিধিঃ খুলনা মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু খুলনা-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছে। ২ নভেম্বর রোববার বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে ফোন করে প্রার্থী হিসেবে কাজ শুরু করতে বলেছেন। এরপর নজরুল ইসলাম মঞ্জু ফেসবুকে শুকরিয়া জানিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসনে সবাইকে নিয়ে কাজ করার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। অপর এক পোস্টে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির নিয়ে উল্লাস প্রকাশ, আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করতে নিষেধ করেছেন তিনি।
রোববার সন্ধ্যা ৬ টা ২১ মিনিটে ফেসবুকে দেওয়া প্রথম পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন, মহান আল্লাহ তালার প্রতি শুকরিয়া। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রাথী হিসেবে দ্রুত সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর নির্দেশনার জন্য তার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা । সন্ধ্যা ৬ টা ৩৪ মিনিটে পরবর্তী পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি নিয়ে উল্লাশ প্রকাশ, আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ নিষেধ। এছাড়া কাউকে খাটো করা বিদ্বেষ ভাব পোষণ করা এবার দেখে নেব এধরনের উক্তি বা ভাব পোষণ থেকে বিরত থাকার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মেনে চলবো আমরা সবাই।
তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিকেল সোয়া ৫টায় ফোন দিয়ে কাজ শুরু করতে বলেছেন। আমি বলেছি, আমি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। তিনি বলেছেন সুস্থ হয়ে মাঠে নেমে পড়েন। সাবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করেন। নির্বাচনে সবাইকে লাগবে। পছন্দ অপছন্দ থাকবে তারপরও আপনি প্রার্থী হিসেবে সবাইকে ফোন দিবেন।
এদিকে মঞ্জুর ফেসবুকে দেওয়া পোষ্টের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মঞ্জুকে অভিনন্দন ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন তার অনুসারীরা। এর আগে ২৭ অক্টোবর সোমবার ঢাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এর ফলে ৪ বছর পর দলে ডাক পান তিনি। ওই রাতেই খুলনায় ফিরেন মঞ্জু। পরদিন থেকেই তীব্র জ্বর ও শরীর ব্যাথায় আক্রান্ত হন। পরীক্ষায় তার চিকুনগুনিয়া ধরা পড়ে। নজরুল ইসলাম মঞ্জু বর্তমানে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে রয়েছেন।

খুলনা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সম্পর্ক ৪৬ বছরের। ১৯৭৯ সালে ছাত্রদল থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু। ১৯৮৭ সাল থেকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। ১৯৯২ থেকে ১৭ বছর সাধারণ সম্পাদক। ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন তিনি। দীর্ঘ চার দশক ধরে খুলনা বিএনপি এবং নজরুল ইসলাম মঞ্জু যেমন সমার্থক হয়ে ছিলেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের ছন্দপতন ঘটে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে। ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির তিন সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বাদ পড়েন মঞ্জু ও তার অনুসারীরা। ১২ ডিসেম্বর দলের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর শোকজ করা হয় তাকে। ২৫ ডিসেম্বর তাকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।#