শহিদুল্লাহ আল আজাদ. খুলনা…………………………………..
খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার শিয়ালীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পর ২৬ নং সরকারি ঘরের দরজার সিটকানি ভেঙ্গে জোরপূর্বক দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারী ২৬ নম্বর ঘরে থাকতেন।
উক্ত বিষয়ে জানা যায়, রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নে শিয়ালীতে নদীর পাড়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৫২টি সরকারী ঘর নির্মাণ করা হয়। তারপর ৫২টি আশ্রয়হীন পরিবারকে ঘর বরাদ্দও দেওয়া হয়। যাতে এলাকায় প্রকৃত গৃহহীনরা শান্তিতে বসবাস করতে পারে। যাচাই বাছাই শেষে স্বামী পরিত্যক্ত অসহায় নারী রেখা বেগমকে একটি ঘর দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে ভুক্তভোগী রেখা বেগম জানায়, শিয়ালী আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২৬ নং ঘরটি ২০২ সালের ২০ জুলাই দলিল পেয়ে আমি ভোগ অধিকার পেয়েছি। তারপর থেকে আমি ওই ঘরে বসবাস করে আসছি। আশ্রয়ণে বসবাস করে তানভীর গাজী (সভাপতি) নামে পরিচিত, তার স্ত্রীর ঘর নং—৭। এ ঘটনার কিছুদিন আগে তানভীর আরেকটি বিয়ে করে আমার সাথে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি তার কথায় কোন প্রকার রাজি না হওয়ায় সে বলে তুই এ ঘরে কিভাবে থাকিস তা আমি দেখে নিব। এর মধ্যে হঠাৎ আমি তিনদিনের জন্য আত্মীয়র বাড়ি বেড়াতে যায়। ওখান থেকে ফিরে এসে দেখি আমার ঘরের দরজার ছিটকিনিসহ তালা ভাঙ্গা। আমার ঘরে রেখে যাওয়া টাকা, মালামাল কোন কিছুই নেই।
অন্য এক নারী তার মালামাল নিয়ে আমার ঘরের ভিতর আছে দেখি। তারপর জানতে পায়— সাবেক (ওয়ার্ড মেম্বর) সজিব, দীদার ও তানভীর চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে ওই নারীর কাছ থেকে টাকা খেয়ে আমার ঘরে উঠিয়েছে। আমি বিষয়টি সজিবের কাছে জানতে চাইলে সে বলে, আমাকে ৫ হাজার টাকা দিলে ওই মহিলাকে নামিয়ে তোকে ঘরে উঠিয়ে দিব। এরপর কোন উপায়ন্ত না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রুপসা থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ করি।
ঐ ঘরের বর্তমান দখলদার সেলিনা জনান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের হুকুমে সজিব, দীদার ও তানভীর আশ্রয়ণের ঘরের তালাসহ সিটকানি ভেঙ্গে আমাকে থাকতে দেয়। এটি কার ঘর তা আমি আগে জানতাম না। উক্ত বিষয়ে অভিযুক্ত তানভীর জানায়, আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করলেও তাতে কোন সমস্যা নেই। আপনারা সেলিনার কাছে শোনেন, সে যা বলবে তাই সত্য।
অভিযুক্ত সজিব মোল্লা জানায়, আমি চেয়ারম্যানের হুকুমে তালাসহ সিটকানি ভেঙ্গে অসহায় সেলিনাকে ঘরে উঠিয়ে দিই। কিন্তু রেখার কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেইনি। চেয়ারম্যান আমাকে পরে বলেছেন, রেখার ঘরের তালাসহ সিটকানি ভেঙ্গে অন্য মহিলাকে ঘরে উঠানো ভুল হয়েছে।
রূপসার ৫নং ঘাটভোগ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোল্যা ওয়াহিদুজ্জামান মিজান বলেন, এই ঘরের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে তদন্তর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমি সরোজমিনে তদন্তপূর্বক ২/১ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিব। তবে সজিব, তানভীর ও দীদার আমাকে সেলিনার ব্যাপারে বললে আমি ওদেরকে রেখার সাথে কথা বলে থাকার জন্য বলেছি। ঘরের তালা ও সিটকানি ভেঙ্গে তারা অতিরিক্ত করেছে। তাছাড়া ওখানে অপরাধমূলক অনেক কাজ হয়।
রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর জাহান বলেন, শিয়ালী এলাকার রেখা বেগম থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। প্রতিবেদন আসলে অপরাধির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#