শাহীন আলম লিটন, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি !!!
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মো. জাহা বক্সকে বাড়ির সামনে ফেলে গেছেন অপহারণকারীরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মটরসাইকেলে দুইজন ব্যক্তি চোখ ও মুখ বেঁধে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তাকে মারধর করা হয়েছে। অসুস্থ থাকায় জাহা বক্সের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরিবারের ভাষ্য,তিনি জীবিত ফিরে এসেছেন,এতেই আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। জাহা বক্স উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের মৃত কুদ্দুস আলীর ছেলে।
তিনি বাড়ির পাশেই প্রান্ত স্টোর নামের একটি পাইকারি মুদিদোকান চালাতেন। এর আগে গত রবিবার দিবাগত রাত একটার দিকে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকাসহ জাহা বক্সকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে।
অপহরণকারীরা চিঠিতে লিখে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পাঁচ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ঠিকানায় টাকা না পৌঁছালে লাশ গুম করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আলী হায়দার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জাসদ গণবাহিনীর আঞ্চলিক নেতা দাবি করা আলী রেজা সিদ্দিক কালুর ভাই।
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় জাহা বক্সের ছেলে প্রান্ত নাগরিক টিভিকে বলেন,বাবা ফিরে এসেছেন। রাত ১২টার দিকে আমাদের বাড়ির বারান্দায় কিছু একটা পড়ে যাবার শব্দ শুনতে পাই। বাইরে বেড়িয়ে দেখি অচেতন অবস্থায় বাবা পড়ে আছে। তার মুখ ও চোখ বাঁধা ছিল। পরে জানতে পারি দুইজন ব্যক্তি মটরসাইকেল করে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে গেছে।
বাবাকে মারধর করা হয়েছে। মাথায় একটু দাগ আছে। সে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। প্রান্ত আরো বলেন,অপহরণের রাতে যে ব্যক্তি স্যালাইন নেওয়ার জন্য বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেছিল তাকে বাবা পরিচিত কেউ মনে করেছিল। পরে বাইরে বেড়িয়ে দেখে অপরিচিত। প্রথমে একজন থাকলেও পরে আরও একজনকে দেখতে পেয়েছিল।
দোকান খোলার সাথে সাথে পেছন থেকে বাবাকে মুখ,চোখ ও হাত বেঁধে তারা মটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে বাবা আর কিছু বলতে পারেনি। দোকানে ক্যাশ বাক্সের নিচে যে টাকা ছিল তাও নিয়ে গেছে। রাতেই বাড়িতে থানা পুলিশ এসে কথা বলে গেছে। আমাদের কিছু দরকার নেই। কারোর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগও নেই। বাবা জীবিত ফিরে এসেছে এটাই যথেষ্ট বলে জানান প্রান্ত।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জাহা বক্সকে উদ্ধার করতে পুলিশ, ডিবিসহ অন্যান্য বাহিনী ব্যাপক তৎপর ছিল। তিনি শারিরীকভাবে অসুস্থ। পুলিশের তত্ত্বাবধানে আছেন। সুস্থ হলে তাকে সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আটক হওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়ে ওসি বলেন,তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও অভিযোগ রয়েছে। তাকেও অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানা হবে।#